|
|
|
|
পায়ে পায়ে ফুলে ফুলে |
মভ। বেগুনি। হাল্কা গোলাপি। ম্যাজেন্টা। কত না রঙের ফুল আর কত না রঙের পাতা!
তাতেই খুলছে প্যান্টবাহার। মাতোয়ারা আট থেকে আটত্রিশ। লিখছেন অদিতি ভাদুড়ি |
ফ্যাশনে এক রাশ তাজা ফুলের ছোঁয়া।
এত দিন ফুলেল ছাপের টপ, গাউন কিংবা ফ্রকেই চলছিল ফ্যাশন। এখন প্যান্টসের ফ্যাশনেও ফুলের জোয়ার। ফলে বদলে গিয়েছে সাজগোজের ব্যাকড্রপটাও। কমনীয় শরীরের এক ঢালা রঙের ঊর্ধ্ববাসহতে পারে তা শর্টকুর্তি বা লংস্লিভ টপ, হতে পারে তা কামিজ। আর পায়ে জড়ানো ফুলের বাগান। কখনও সুতির প্যান্টে কখনও পাতিয়ালায়। পাতিয়ালায় ফুলের নকশা থাকলে দোপাট্টাও পাওয়া যাচ্ছে একই রকম ডিজাইনের ফুল ছাপে।
কথা হচ্ছিল ডিজাইনার রাধিকা সিংভির সঙ্গে। একমত তিনিও। বললেন, “সত্যি, ফ্লোরাল প্যান্টস এখন ফ্যাশনে ইন-থিং। দেখতে খুব উজ্জ্বল হওয়া চাই। লাইট বা সাবডিউড ফ্লোরাল প্রিন্ট কিন্তু একদম চলবে না।”
ওঁর মতে টিন-এজাররাই মূলত এই ফ্লোরাল প্যান্টস নিয়ে ক্রেজি। আর ওদের বয়সের সঙ্গেও এই পোশাক যথেষ্টই মানানসই। উনি আরও বললেন, বড় বড় ফুলের প্রিন্ট থাকার চেয়ে মিনিয়েচার ফ্লোরাল ডিজাইনটাই ক্রেতাদের সব চেয়ে পছন্দের। ফ্লোরাল প্যান্টসে রাধিকার পছন্দের রং নানান ধরনের প্যাস্টেল শেডস, ভিনটেজ গোল্ড।
রাধিকার মতে, উজ্জ্বল প্রাণবন্ত রঙের ফ্লোরাল প্রিন্টের প্যান্টের সঙ্গে একরঙা সলিড রঙের টপই মানায় সব চেয়ে ভাল। তবে টপ বা উর্ধ্বাংশের পোশাক হতে হবে বেশ সাবডিউড। যেমন অফ হোয়াইট, বা বেজ রঙের।
তবে পরলেই হল না। পরার আগে দেখে নিতে হবে আপনার চেহারার সঙ্গে আপনার সাধের ফ্লোরাল প্যান্টের যুগলবন্দি ঠিকঠাক যাচ্ছে কি না। তা নইলে তো পুরো সাজটাই মাটি! রাধিকা বললেন, “যাদের চেহারাটা ভারীর দিকে, তারা ম্যাচিং প্যান্টের সঙ্গে যে টপটা বেছে নেবেন, তার ঝুল যেন হয় কোমরের নীচের অংশ পর্যন্ত। আর স্লিম হলে তো কোনও সমস্যাই নেই। সে ক্ষেত্রে শর্ট স্লিভড টপ পরলে শুধু যে চেহারার সৌন্দর্য ফুটে উঠবে তাই নয়, ফ্লোরাল প্যান্টের সাজটাও দেখার মতো হবে।”
ডিজাইনার অভিষেক দত্তও স্বীকার করে নিলেন কলেজপড়ুয়া আর অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরাই ফুলেল ডিজাইনের এই প্যান্টগুলো বেশি করে পরছে। তাঁর মতে প্যান্টগুলো যথেষ্ট উজ্জ্বল রংয়ের হলেই ভাল। তবে এর সঙ্গে যে টপ পরবে তা হতে হবে অবশ্যই সলিড রঙের। সঙ্গে এও জানালেন যে ফ্লোরাল প্রিন্ট প্যান্টের সঙ্গে টপ পরার ক্ষেত্রে কখনওই জ্যামিতিক নকশা মিলমিশ করা ঠিক নয়। পোলকা ডটস দেওয়া টপ পরা যেতে পারে। ফ্লোরাল মোটিফের প্যান্টের সঙ্গে বেশ মানানসই হবে।
অভিষেক আরও বললেন, এই প্যান্টগুলো সামার-কটন, স্ট্রেচড্ কটন বা লিনেনের বেসে বানানো হলেই ভাল। তাতে পোশাক যে শুধু আরামদায়ক হবে তাই নয়, যথেষ্ট ফ্যাশনেবলও দেখতে লাগবে। তবে অভিষেক ফ্লোরাল প্রিন্টের প্যান্টে রঙের হোলি খেলারই বেশি পক্ষপাতী। তাই উজ্জ্বল প্যাস্টেল রঙের পাশাপাশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাই যায় আর্দি কালার নিয়েও। আর অবশ্যই দেখতে হবে চেহারার সঙ্গে যেন মানানসই হয়। তাই তাঁর পরামর্শ যাদের হিপের অংশ বেশ ভারীর দিকে, তারা অবলীলায় পরতে পারেন মিনিয়েচার ফ্লোরাল প্রিন্টের প্যান্ট। চটকদার আর ফ্যাশনদুরস্ত লাগতে বাধ্য।
ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পলও এই ফ্লোরাল ফ্যাশন নিয়ে যথেষ্টই উচ্ছ্বসিত। অগ্নিমিত্রার মতে, “ফ্লোরাল প্যান্টস জেগিংস, পালাজো বা ধোতি প্যান্টের আদলে পরা যায়। আর বেশি আরামের জন্য ফেব্রিকটা অবশ্যই হওয়া দরকার জর্জেট, শিফন বা মলমলের।” যদিও টিন-এজারদেরই এই প্যান্টস-এ মানায় বেশি, তবু অগ্নিমিত্রা মনে করেন যদি ক্যারি করা যায়, তা হলে যে কোনও বয়সের মহিলারাই এই পোশাকে স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠতে পারেন। কথাপ্রসঙ্গে আরও জানালেন, যেহেতু ফ্যাশনে ফ্লোরাল প্রিন্টস ভীষণই চলছে, সেই কারণেই ফ্লোরাল প্যান্টসের চাহিদাও আকাশছোঁয়া।
বর্ষার ফ্যাকাসে মেঘলা দিনে মন ভাল রাখতে, কাদা মাখা রাস্তায় স্বচ্ছন্দে হাঁটতে জড়িয়ে নিন পায়ে ফুলের রং। লুকটাই বদলে যাবে।
পা তো নয় যেন চলমান বাগান।
|
কোন সাজে কেমন ফুল |
• ফ্লোরাল প্রিন্ট প্যান্ট পরলে সঙ্গে পরা যায় একরঙা টপ
• আরামদায়ক ফেব্রিকের প্যান্ট পরাটাই ভাল। সে ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যায় মলমল, সুতি বা শিফনের প্যান্ট
• টপ একরঙা হলেও তাতে যেন জ্যামিতিক প্যাটার্নের ডিজাইন না থাকে। দেখতে পরিচ্ছন্ন লাগা চাই
• ক্যারি করতে পারলে পরুন
যে কোনও বয়সের মহিলারাই। শুধু টিন-এজারদের জন্যই
এই প্যান্ট, তা কিন্তু নয়
• বড় বড় ফ্লোরাল প্রিন্টের জায়গায় বেছে নিন
মিনিয়েচার ফ্লোরাল প্রিন্ট।
আর প্যান্টের রং হোক
ফ্লুরোসেন্ট |
|
|
|
|
|
|