ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের মাধ্যমে কয়েক জন রোগীর দেহে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনায় ফৌজদারি মামলা রুজুর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। দোষী চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের বরখাস্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছেন গগৈ।
বিশ্ব রক্তদান দিবসে মঙ্গলদৈ জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ানোর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। হাসপাতাল থেকে রক্ত নিয়ে সংক্রামিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করে সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হন এক মহিলা-সহ তিন জন। তাঁদের অভিযোগ, পরীক্ষা না-করেই ‘পেশাদার’ রক্তদাতার রক্ত দেওয়া হয় তাঁদের। জেলাশাসক সোহরাব আলি বলেন, “স্থানীয় ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নিয়েছেন এমন লোকেদের দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭ জনের দেহে এইচআইভি সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। তবে ওই সংখ্যা বাড়তে পারে।” মঙ্গলদৈ হাসপাতালের সুপারের বক্তব্য, “হাসপাতালে দালাল, পেশাদার রক্তদাতার বিষয়ে আগেও অভিযোগ এসেছিল। সে সব রুখতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।” রোগীদের পরিজনরা বলছেন, পরিস্থিতি যে তাতে বদলায়নি সাম্প্রতিক ঘটনাই তার প্রমাণ।
সদ্য এইচআইভি সংক্রামিত এক ব্যক্তি বলেন, “গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে রক্ত পরীক্ষার পরেই জানতে পারি আমার রক্তে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তখনই মঙ্গলদৈ হাসপাতালের এক পেশাদার রক্তদাতাকে সন্দেহ করেছিলাম। ওই ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নেওয়া কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। শুনলাম একাধিক লোকের অবস্থা আমারই মতো।”
পেশাদার যে রক্তদাতার মাধ্যমেই ওই জীবাণু ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁর দাবি, তাঁর রক্তে সংক্রমণের বিষয়ে হাসপাতালের তরফে কিছুই জানানো হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের অবশ্য দাবি, ওই ব্যক্তির কাছে থাকা কিছু নথিপত্র পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, বহুদিন ধরেই গুয়াহাটির এআরটি কেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা চলছে। রাজ্য এইড্স নিয়ন্ত্রণ সোসাইটির প্রধান এস আই আহমেদ জানান, ওই ব্যক্তি ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল সেন্টার’-এ নথিভুক্ত রোগী। ২০০৩ থেকে ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা জিতেন শহরিয়া বলেন, “আমরা রক্তদাতার রক্ত পরীক্ষা করাই। নথি অনুযায়ী ৪ অগস্ট ও ২ ফেব্রুয়ারি ওই রক্তদাতা রক্ত দিয়েছিলেন। তখন তাঁর রক্তে এইআইভি সংক্রমণ ছিল না।” |