একশো দিনের প্রকল্পে পরিবার পিছু কাজ দেওয়ার নিরিখে এক নম্বরে নয়, পশ্চিমবঙ্গের স্থান দশ নম্বরে বলে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১২-’১৩ সালে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে গত ২৮ মে এক পর্যালোচনা বৈঠকে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। তবে রাজ্য সরকার যত সংখ্যক মানুষকে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন বলে জানিয়েছে দিল্লির সরকার। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১১-’১২ সালে পরিবার পিছু কাজ দেওয়ার জাতীয় গড় ছিল ৪৩ দিন। ২০১২-’১৩ সালে পরিবার পিছু তা বেড়ে হয়েছে ৪৬ দিন। এ বছর তামিলনাডু সব চেয়ে বেশি পরিবার পিছু কাজ দিয়ে (৫৮ দিন) দেশের মধ্যে এক নম্বর স্থান দখল করেছে। তার পরেই রয়েছে কেরল (৫৫ দিন), রাজস্থান এবং জম্মু-কাশ্মীর (৫২ দিন)। পশ্চিমবঙ্গ গত বছর গড়ে পরিবার পিছু ২৭ দিন কাজ দিতে পেরেছিল। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৩৪ দিন। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যা ১০ নম্বরে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে তফসিলিদের ক্ষেত্রে আরও পিছিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ। তফসিলি জাতির বাসিন্দাদের মধ্যে ৩২.৪%-কে কাজ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের স্থান ১২ নম্বরে। তফসিলি উপজাতিদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে একাদশতম স্থান দখল করেছে রাজ্য। এই শ্রেণির ৯.৮% মানুষকে কাজ দেওয়া গিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “পরিবার পিছু কাজ দেওয়ার বিষয়টি গৌণ। দেখতে হবে, কত মানুষ কাজ পেয়েছেন। এ বছর রাজ্যে ৪৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ৫৭ লক্ষ পরিবারের ২০ কোটি মানুষ ১০০ দিনের কাজ পেয়েছেন। এটা রেকর্ড। অতীতে কোনও সরকার এই সাফল্য দেখাতে পারেনি। দিল্লির সরকার তা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।” রাজ্যে ২০১১-১২ সালে কাজ পেয়েছিলেন ১৮ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষ। ২০১২-১৩ সালে পেয়েছেন ১৯ কোটি ৮৯ লক্ষ জন। প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভুমিকার অবশ্য প্রশংসাই করেছে কেন্দ্র। যা লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তার চেয়ে ১০৯% বেশি মানুষকে কাজ দেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্র জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ গত মাসের ওই পর্যালোচনা বৈঠকে এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রাথমিক ভাবে যে অবস্থা ছিল, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে অনুসরণ করা উচিত অন্য রাজ্যগুলির।”
গত সপ্তাহেই কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় আরও ২৫০০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরির কাজ অনুমোদন করেছিল। সব মিলিয়ে রাজ্যে ১২ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তা হবে। তাতে কেন্দ্রীয় অনুদান মিলবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তোলাবাজির জন্য রাজ্যে ঠিকাদার মিলছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। ফলে নতুন আড়াই হাজার কিলোমিটার রাস্তা কী ভাবে নির্মাণ করা যাবে? সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (এনবিসিসি)-কে রাজ্যের সমস্ত গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের বরাত দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে দরপত্র ডেকে বরাত দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। |