এক ঝলকে...
পৃথিবী
সংস্কারের বার্তা
• তেহরান • উপর থেকে দেখলে মনে হয়, সবই শান্ত। স্বাভাবিক। নিয়মমাফিক। কিন্তু সেটা নেহাতই দৃষ্টিভ্রম। ইরান এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চিতিতে থরথর করে কাঁপছে। চোদ্দো তারিখ দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেল। তার আগে প্রার্থিপদে কে আবেদন করবেন, কার আবেদন দেশের সর্বময় ক্ষমতাধর ধর্মীয় কাউন্সিল গ্রহণ করবে, সে সব নিয়ে রাজনৈতিক ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রবল। কিন্তু ইরানের কঠোর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের আতঙ্কে সে সব বিক্ষোভই হয় গোপন, প্রচ্ছন্ন, ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’। নির্বাচনের আগে তাই বোঝা সম্ভবই নয়, নির্বাচনে দেশের মানুষের মনোভাব ঠিক কী ভাবে প্রতিফলিত হতে চলেছে।
চোদ্দো তারিখ ভোট সংঘটিত হওয়ার সময় বোঝা গেল, প্রবল উদ্দীপনার সঙ্গে ভোট দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আশি শতাংশ ভোট পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে ৫০.১ শতাংশ যিনি পাবেন, তিনিই জয়ী। কেউ না পেলে, পুনর্ভোট ২১ জুন। পনেরো তারিখ ভোট গণনা খানিক এগোনোর পথে বোঝা গেল, রক্ষণশীলের মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে চলেছেন নরমপন্থী, সংস্কারপন্থী প্রার্থী হাসান রওহানি। প্রধান ধর্মগুরু খামেনেই-এর প্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কালিবাফের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে তিনি, গোড়া থেকেই।
রওহানিই ছিলেন ছয় প্রার্থীর মধ্যে সংস্কারবাদীদের সর্বাধিক কাছের। তাঁর পিছনে সমর্থন রয়েছে প্রাক্তন দুই প্রেসিডেন্টের, যাঁদের নাম মহম্মদ খাতামি ও আকবর হাশেমি রফসানজানি। দুই জনই দৃঢ় ভাষায় রওহানিকে জয়ী করতে আহ্বান করেছেন দেশবাসীকে। তাঁদের সেই আহ্বান কি সত্যিই শেষ মুহূর্তে প্রভাবিত করল মানুষকে? না কি এটাই হওয়ার ছিল? সব দমন-পীড়নের আস্তরণ ভেদ করে দাউদাউ করে উঠল ইরানিদের সংস্কার-বাসনা? ভোটগণনার শেষ অবধি এই ফলাফল থাকবে কি না, সেই সংশয় জিইয়ে রেখেও বলা যায়, রওহানি একটা বিশাল ঢেউ তুলেছেন, আশা এবং আশ্বাসের। ইরান যে পরিবর্তন চায়, তা নিয়ে সংশয়ের আর জায়গা রইল না।

অতি অল্প হইল!
• ইস্তানবুল • যে পার্কের সবুজ ধ্বংস করে বিরাট বিপণি-নির্মাণ পরিকল্পনা হয়েছিল বলে তুরস্কের জনসাধারণ খেপে উঠেছিল, প্রধানমন্ত্রী এর্দোগানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ফুঁসছিল গত দুই সপ্তাহ যাবত্‌, শেষ পর্যন্ত ইস্তানবুলের সেই গেজি পার্কে নির্মাণ-পরিকল্পনা বাতিল করেছে এর্দোগান প্রশাসন। অর্থাত্‌ জনগণের চাপে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। তবে কিনা, তাতে মানুষের রাগ পড়েনি। তুর্কি আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, অনেক অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আজ তাঁরা এককাট্টা হয়েছেন, এইটুকু দয়া দেখিয়ে তাঁদের নিরস্ত করা যাবে না। এর্দোগান বলেছেন, এত জেদাজেদি করলে ফল ভাল হবে না, তাঁরও ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। তাঁর ধৈর্যের বাঁধ যে শক্তপোক্ত নয়, সেটা বোঝা যায়, কেননা রাজধানী আঙ্কারায় সমানে আন্দোলনকারীদের উপর চলছে লাঠি আর কাঁদানে গ্যাস।

নজরবন্দি
এডওয়ার্ড স্নোডেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ইরাক-যুদ্ধে যেতে চেয়েছিলেন। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, ইরাকের মানুষকে অগণতান্ত্রিক পীড়ক শাসন থেকে মুক্তি দেওয়া তাঁর দায়বদ্ধতা। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে যাওয়া হয়নি। কিন্তু, আজ থেকে ঠিক এক দশক আগে তাঁর চোখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ছিল গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তা।
এক দশক পরে, হংকং-এ আত্মগোপন করে থাকা এডওয়ার্ড স্নোডেনর সঙ্গে সেই পুরনো স্নোডেনের মিল খোঁজা অর্থহীন। ইনি অধুনা বিখ্যাত মার্কিন ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি এজেন্সি যে সাইবার দুনিয়া জুড়ে বিবিধ ব্যক্তিগত তথ্যে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে, এই কথাটি ফাঁস করে দিয়েছেন তিনি। কেন? তাঁর মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমেই এক ‘নজরদারি রাষ্ট্র’ হয়ে উঠছে। তিনি বলেছেন, ‘আমি এমন একটা দুনিয়ায় বাস করতে চাই না যেখানে আমি যা করব, যা বলব, সবই রেকর্ড হয়ে থাকবে’। রাষ্ট্রের সেই ইচ্ছার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতেই তথ্য ফাঁসের সিদ্ধান্ত। এই কাজের ঝুঁকি অনেক, তিনি জানেন। নিজেই বলেছেন, সম্ভবত এখানেই তাঁর জীবনের ইতি। ১৯৭১ সালে পেন্টাগন পেপারস ফাঁস করে দেওয়া হুইসলব্লোয়ার ড্যানিয়েল এলসবার্গ বলেছেন, ‘স্নোডেন যে সাহস আর দেশাত্মবোধ দেখিয়েছেন, তা যুদ্ধক্ষেত্রের সৈনিকদের সঙ্গে তুলনীয়।’ দুনিয়াজুড়ে স্নোডেন-প্রশস্তি চলছে। তবে, মার্কিন প্রশাসনের মন গলছে না। এনএসএ স্নোডেনের বিরুদ্ধে মামলা করতে চেয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্তারা তাঁর কঠোর শাস্তি চাইছেন। এনএসএ-র কর্মী থাকাকালীন গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়া যে চরম বিশ্বাসঘাতকতার কাজ, সেই সমালোচনাও হচ্ছে। এ দিকে, চিনের, যাকে বলে, পোয়া বারো। চিনা সরকারি সংবাদপত্র প্রস্তাব করেছে, স্নোডেনকে হংকং থেকে আমেরিকায় ফেরত পাঠানোর প্রয়োজন নেই। বরং, তাঁর থেকে আরও তথ্য নেওয়া হোক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী ভাবে চিনের স্বার্থ লঙ্ঘন করতে পারে, সেই তথ্যের ভিত্তিতে তা খতিয়ে দেখা হোক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.