গরম গোটা উত্তর জুড়ে
ভোট প্রচারে লেবুর জলে স্বাগত প্রার্থী
চা নয়, লেবুর শরবত দিতে পারেন। বাড়িতে প্রচারে আসা প্রার্থীর অনুরোধে গৃহকর্তা বাড়ির কলপাড়ের পাশের গাছ থেকে লেবু পেড়ে আনলেন। লেবু কেটে চিনি, নুন মিশিয়ে তৈরি হল শরবত। শরবত শেষ করে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে, বিদায় নিলেন প্রার্থী। বৃহস্পতিবার ফালাকাটার একটি গ্রামে এমনই ঘটনা দেখা গেল। ডুর্য়াস থেকে কোচবিহার, দুই দিনাজপুর, মালদহ সর্বত্রই নির্বাচনী প্রচারে এই চিত্র দেখা গিয়েছে। তীব্র দাবাদহ চলছে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি নিম্ন অসমেও।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে সব জেলাতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। তীব্র দাবদহে দিনের বেলায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার করতে অল্পেই কাহিল হয়ে পড়ছেন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টা একই পরিস্থিতি চলবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে স্থানীয় ভাবে কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হতে পারে।”
স্বস্তির স্নান। জলদাপাড়ায় বুড়িতোর্সা নদীতে। ছবি: রাজকুমার মোদক।
পঞ্চায়েত, বিধানসভা, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের অভিজ্ঞতা থাকা প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মন বলেন, “এত গরমের মধ্যে ভোট আগে কবে হয়েছে মনে করতে পারছি না। ডুয়ার্সে পুরোনো সেই বন জঙ্গলেও আর নেই। তাই গরম পড়ছে কী না খতিয়ে দেখা প্রয়োজন!” আরএসপি’র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, “গ্রামে বড় গাছের ছায়ায় কর্মীরা লোক জড়ো করে প্রচার সারছেন। গরমটা কমলে বাড়ি বাড়ি প্রচার করা হবে।” আর দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ আবার গরমের পাশাপাশি তৃণমূলের সন্ত্রাস বড় বাধা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, “দুই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে আমরা প্রচার চালাচ্ছি। আশা করি, কিছু দিনের মধ্যে বৃষ্টি নামলে গরমের হাত থেকে অনেকটা নিস্তার মিলবে।”
ডুয়ার্স এলাকার কংগ্রেস নেতা মণি কুমার ডার্নাল অবশ্য নির্বাচনে আবহাওয়ার প্রতিকুলতার জন্যও রাজ্য সরকারকে দায়ী করে বসেছেন। তাঁর কথায়, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কথা মানলে এত দিনে ভোট গণনা শেষ হয়ে সব জায়গায় নতুন বোর্ড গঠন হয়ে যেত। তৃণমূল কংগ্রেসের টালবাহানার কারণেই তীব্র গরমে ভোট হচ্ছে। তাই সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।” রাজ্য যুব তৃণমূলের কার্যকারী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “সন্ত্রাস যদি হত তা হল ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দিতেই পারত না। আমরা চাইছিলাম শীতে ভোটে হোক। বাম আর কংগ্রেস ভোট চায়নি। শীতে ভোটে চেয়েছিলাম বলেই তো নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাত হয়।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের অবস্থাও এক। সকাল থেকে রাস্তা সুনসান। বাজারঘাট ফাঁকা। প্রাথমিক স্কুলের কচিকাঁচাদের অভিভাবকদের বক্তব্য, “গরমে শিশুরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। অনেকে তো অসুস্থ হচ্ছে। সকালে স্কুল করার জন্য বিভিন্ন মহলে দাবি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভও দানা বাঁধছে। আপাতত এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ সরকার। তিনি বলেন, “সকালে স্কুল নিয়ে কিছু ভাবছি না। আর ক’দিনের মধ্যে বৃষ্টি চলে আসবে মনে হচ্ছে।” ভোটের প্রচারেও একই ছবি জেলায়। দিনভর ঘরোয়া সভায় সময় দিচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রচার শুরু হচ্ছে সন্ধ্যার পর।
তীব্র গরমের শিলিগুড়ির সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলে আরও দুই দিন ছুটি দেওয়ার কথা ঘোষণা করল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক রচনা ভগত বলেন, “প্রচণ্ড গরমে স্কুল দুই দিন ছুটি দিতে বলা হয়েছে।” একই ভাবে শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান সমর চক্রবর্তী প্রাথমিক স্কুলগুলি আজ, শুক্রবার ও শনিবার ছুটির কথা জানান। এ দিন প্রাথমিক স্কুলগুলি ছুটির কথা মঙ্গলবারই ঘোষণা করেন সংসদের চেয়ারম্যান। বুধবার পরিস্থিতি দেখে ছুটি বাড়ানো হবে কি না তা জানানো হয়েছিল। শহরের রাস্তাঘাটে লোকজন ছিল কম। সন্ধ্যার পর জামাই ষষ্ঠীর বাজার কিছুটা জমতে দেখা গিয়েছে। কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন কল্যাণী পোদ্দার জানান, জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শুক্র ও শনিবার ছুটি ঘোষণা করা হয়। সংসদ সূত্রে জানা যায়, সাতমাইলের একটি স্কুলে দুই শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.