মানবদেহের জিন পেটেন্ট নেওয়া যাবে না বলে রায় দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার আদালতের এই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং জিনতত্ত্বের গবেষণার দিকনির্দেশ গড়ে দিল। সম্প্রতি অ্যাঞ্জেলিনা জোলি সংবাদমাধ্যমে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে তাঁর ম্যাস্টেকটমি করার কথা লিখেছেন। তার পিছনেও আছে জিন সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আজকের এই রায় সে দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ।
অ্যাঞ্জেলিনা তাঁর জিন-পরীক্ষা করে দেখেন, তাঁর শরীরে বিআরসিএ-১ জিন রয়েছে। যা স্তন এবং ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়ায়। তার পরেই স্তন বাদ দেওয়া বা ম্যাস্টেকটমি করানোর সিদ্ধান্ত অ্যাঞ্জেলিনার। মিরিয়াড জেনেটিকস আইএনসি নামে একটি সংস্থা ক্যানসারের সঙ্গে জড়িত ওই বিআরসিএ-১ এবং বিআরসিএ-২ জিনের পেটেন্ট নিয়ে রেখেছিল। জিন সংক্রান্ত গবেষণা, পরীক্ষানিরীক্ষা এবং চিকিৎসার একচেটিয়া অধিকার তাদের নাগালে ছিল পেটেন্টের দৌলতেই।
বিচারপতি ক্লারেন্স টমাস এ দিন রায়ে লিখেছেন, “মিরিয়াড বিআরসিএ-১ এবং বিআরসিএ-২ জিনের অবস্থান নির্ণয় করেছে ঠিকই। কিন্তু তাই বলে তারা ওই দুই জিনের পেটেন্টের দাবিদার হতে পারে না।” |
আমেরিকার চিকিৎসক ও গবেষক মহলের বড় অংশ তথা নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা এই রায়ে খুশি। কারণ তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিলেন, জিনের পেটেন্ট আইনি বৈধতা পেলে চিকিৎসার খরচ বাড়বে এবং গবেষণা বাধা পাবে।
মিরিয়াড সংস্থার বক্তব্য এখন কী? বিআরসিএ-১ এবং ২-এর পেটেন্ট ধরে রাখার ব্যাপারে জনমত তৈরি করতেই তারা অ্যাঞ্জেলিনাকে কলম ধরতে অনুরোধ করেছিল বলে একাংশের অভিযোগ ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে মিরিয়াড মৌখিক ভাবে সন্তোষই প্রকাশ করেছে। সংস্থার প্রধান পিটার ডি মেলড্রাম বলেন, “বছরে আড়াই লক্ষেরও বেশি রোগী আমাদের বিআরসিএ পরীক্ষার উপরে নির্ভর করেন। তাঁদের সাহায্য করাই লক্ষ্য।” আদালতের রায়ের আর একটি অংশ মিরিয়াডকে সত্যিই খুশি করেছে। সেটা হল, মিরিয়াড তাদের জিন সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষার উপরে ভিত্তি করেছে যে কৃত্রিম ডিএনএ (নাম, সি ডিএনএ) তৈরির কাজ করছে, সেটা পেটেন্টের আওতায় আসতে পারে বলে মত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। |