সারা বছর পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লাখো লাখো মানুষ ছুটে আসেন তাঁরই টানে। তাঁর জন্যই নবদ্বীপ আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। তিনি চৈতন্য মহাপ্রভু। পাঁচশো বছরের বেশি নবদ্বীপের মহাপ্রভু মন্দিরে নিত্য সেবা হয় মহাপ্রভুর। বছরে একটি দিন মহাপ্রভু সেবাইতদের দেবতা নন। জৈষ্ঠ্যমাসে জামাই ষষ্ঠীর দিনে তিনি নিতান্তই বাড়ির জামাই।
তবে চৈতন্যদেবের জামাই ষষ্ঠী সাড়ম্বরে হলেও সাধারণের ঠিক ততটা জাঁক জমকের সঙ্গে হচ্ছে না। তার প্রধান কারণ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া বাজারদর। বৃহস্পতিবার সকালে নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন বাজারে যেমন দাম চড়েছে শাক সব্জির, তেমন অমিল মাছও। বুধবার পর্যন্ত বাজারে যে দামে সব্জি বিক্রি হয়েছে একদিনের ব্যবধানে তার দাম বেড়ে যাওয়ায় অবাক ক্রেতারা। কৃষি বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সব্জির দাম বেড়ে যাওয়ার পিছনে বৃষ্টির ভূমিকা রয়েছে। নদিয়া জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসেই ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার পর জুনের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ৯০ মিলিমিটার। এর মধ্যে ১১ মে মঙ্গলবার ৭২.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। |
বর্ধমানের সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “জুনের অর্ধেক পার হওয়ার আগেই বৃষ্টির পরিমাণ ১০০ মিলিমিটার দাঁড়িয়েছে। একটানা বৃষ্টির ফলে মাঠের সব্জি কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সব্জির দাম বাড়তে পারে।”
বাজারে এখন চন্দ্রমুখী আলু ১৪ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ২০ টাকা, আদা ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ টাকা। তবে তুলনায় আম কিছুটা কম। ২০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে আম। আর প্রমাণ মাপের কাঁঠালের দাম শুরু ৪০টাকা থেকে। নদিয়ার যুগ্ম কৃষি আধিকারিক হরেন্দ্রকুমার ঘোষ বলেন, “এবার বর্ষা সঠিক সময়ে এসেছে। মে মাসে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পাট বা ধানের মতো প্রধান শস্যের জন্য এই বৃষ্টি খুব ভালো হলেও সব্জির পক্ষে কিছুটা খারাপ।” ফলে জামাইষষ্ঠীর সময় সব্জির দাম বাড়া অসম্ভব কিছুই নয়।
তবে ষষ্ঠীর বাজারে আকাল মাছেরও। ইলিশ কার্যত নেই। বাংলাদেশের প্যাকেট করা পাঁচ-ছয় কিলোগ্রাম ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে ৮০০ টাকায়। চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা প্রতি কেজি, চিতল ৮০০ টাকা, আড় মাছ ৬০০ টাকা, পাবদা-ভেটকি ৫০০ টাকা, বিলাসপুরের পাঁচ-ছয় কেজির কাতলা ৩৫০ টাকা কেজি। খাসির মাংস প্রতি কিলোগ্রাম ৩৬০-৪০০ টাকা। দুধের দাম তুলনায় কম থাকায় মিষ্টির বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। |