ভোট সংক্ষেপে |
‘লাঙল’ পেয়ে গোঁসা
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
বেজায় চটেছেন চুনিবালা হাঁসদা। ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর নেত্রী তথা বিনপুরের প্রাক্তন বিধায়কের অভিযোগ, বেলপাহাড়ি ব্লকের শিমুলপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩টি আসনে তাঁর দলের প্রার্থীদের প্রতীক বদলে দেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক দল হওয়ার কারণে চুনিবালার দলের নিজস্ব কোনও প্রতীক নেই। তবে এর আগে ঝাড়খণ্ড পার্টির (নরেন) প্রার্থীরা ‘কুঠার’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ বারও জঙ্গলমহলের আসনগুলিতে চুনিবালার সিংহভাগ প্রার্থীরা ‘কুঠার’ প্রতীক পেয়েছেন। ব্যতিক্রম শিমুলপাল পঞ্চায়েতের ৩টি আসন। ওই ৩টি আসনে চুনিবালার প্রার্থীদের জন্য ‘লাঙল’ বরাদ্দ করেছে প্রশাসন। চুনিবালার অভিযোগ, এক সময় তাঁর দল ছেড়ে যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা এখন তৃণমূলের টিকিট না-পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন ওই তিনটি আসনে। প্রতীক বণ্টনের সময় চুনিবালার প্রার্থীদের বঞ্চিত করে ওই তিন জন নির্দল প্রার্থীকে কুঠার প্রতীক দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, চুনিবালার দলের প্রার্থীরা সময়মতো ফর্ম-বি জমা দেননি বলে এমনটা হয়েছে। চুনিবালার দলের বেলপাহাড়ি ব্লকের জেলা পরিষদ আসনের প্রার্থী পরেশ হেমব্রম অবশ্য দাবি করেছেন, “নিজে গিয়ে ফর্ম-বি জমা দিয়েছি। প্রশাসনই গোলমাল করেছে।”
|
হুমকি-পোস্টার
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
ভোটের প্রচারের কাজে যুক্ত সিপিআই কর্মীদের পোস্টার সেঁটে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের পাটাশিমুল গ্রামে এমনই বেশ কিছু পোস্টার মিলেছে বলে দাবি করেছেন সিপিআই-নেতৃত্ব। সিপিআইয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ও পুলিশকে জানানো হয়েছে। পাটাশিমুল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮টি আসনেই তৃণমূলের বিপক্ষে প্রার্থী দিয়েছে বামফ্রন্ট। ৪টি আসনে সিপিআই প্রার্থী দিয়েছে। ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। একটি আসনে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় দু’টি আসনের একটিতে সিপিএম এবং অন্যটিতে সিপিআই প্রার্থী রয়েছেন। কিন্তু লাল কালি দিয়ে পোস্টার সাঁটাল কারা? পোস্টারের তলায় অবশ্য ‘হার্মাদ বাহিনী’ লেখা ছিল। সিপিআইয়ের অভিযোগ, ওই সব পোস্টার স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাই সাঁটিয়েছেন। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষের বক্তব্য, “সিপিএম-সিপিআইয়ের কোন্দলের জেরে ওদেরই একটি গোষ্ঠী ওই পোস্টার দিয়েছে বলে শুনেছি।”
|
দুই জা’য়ের লড়াই
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব গড়াল বাড়ির অন্দরেও। পঞ্চায়েত ভোটে এ বার মুখোমুখি লড়াই দুই জা’য়ের। ভগবানপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে প্রধান হন অমলা মণ্ডল। দলের অভ্যন্তরে অভিযোগ ছিল, অমলাদেবী অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী হওয়ায় দল ও পঞ্চায়েতের কাজে তিনি সময় দিতেন না। তাই এবার গুড়গ্রাম পূর্ব বুথে অমলাদেবীকে প্রার্থী করতে রাজি হননি দলের বুথ, অঞ্চল ও ব্লক কমিটি। অমলাদেবীর পরিবর্তে দলের তরফে নাম পাঠানো হয় তাঁর জা কবিতা মণ্ডলের। তবে অমলাদেবী দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দলের জেলা নেতৃত্ব তাঁকেই প্রতীক দেন। প্রতিবাদে দলের বুথ কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান কবিতাদেবীকে। দলীয় প্রতীক পেলেও তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে এগিয়ে অমলাদেবীই। গুড়গ্রামের এক তৃণমূল নেতা বলেন, “দুই জা’য়ের সম্মুখ সমরে ধার বাড়ছে সিপিএম প্রার্থী সুনীতিবালা হাইতের কাস্তের। তাতে আমাদের ঘাসফুল আর কবিতাদেবীর বটগাছ দুটোই না কাটা যায়।”
|
মুখোমুখি দুই ভাই
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটাশপুর |
প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কের দুই পুত্র এ বার পঞ্চায়েত সমিতির আসনে সম্মুখ সমরে। পটাশপুর ১ ব্লকের অমরপুরের প্রয়াত বিধায়ক রাধানাথ দাস অধিকারীর বড় ছেলে সোমনাথ দাস অধিকারী তৃণমূলের ও মেজ ছেলে অমরনাথ দাস অধিকারী সিপিএমের প্রার্থী। একই বাড়িতে থাকেন দু’জনেই। যদিও দুই ভাই মনে করেন, লড়াইটা মূলত মতাদর্শগত। তাঁদের মা চুরাশি বছরের রেণুকাদেবী বলেন, “ওরা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতি করছে। পরিবারে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।” অমরনাথবাবু এর আগে ১৯৯৮ সালে নির্বাচনে জিতে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। আর প্রেসিডেন্সি কলেজে নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা সোমনাথবাবু প্রথমে কংগ্রেস করতেন। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। দলের ব্লক সভাপতিও হন। তিন বছর আগে ওই পদ থেকে সরতে হয় তাঁকে।
|
শুধু নীতির লড়াই
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
দুই ভাই। বাড়ির উঠোন এক না হলেও সদ্ভাব রয়েছে। এ বার হলদিয়ার বাড় উত্তরহিংলি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণচক গ্রামের একই আসনে তাঁরা যুযুধান প্রার্থী। বড় ভাই মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি সিপিএমের হয়ে দাঁড়িয়েছেন, ছোট ভাই বীরেন্দ্রনাথ তৃণমূলের। সত্তরোর্ধ্ব মৃগেন্দ্রবাবু অবশ্য প্রথম থেকেই সক্রিয় বাম রাজনীতিতে আছেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন তিনি। বলেন, “রাজনীতি হল নীতির লড়াই। প্রথম থেকেই ডানপন্থী ছিল ভাই। তাই বলে আমি কোনও দিন ওকে বাধা দিইনি। আমাদের মধ্যে কে জিতবে তা জনগণই ঠিক করবেন।” রাজনীতি চিড় ধরাতে পারেনি দুই পরিবারের সম্পর্কেও। বীরেন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী সরস্বতীদেবী বলেন, “আমাদের দুই জায়ের মধ্যে কোনও দিন এই বিষয়ে কথা হয় না। স্বামী জিতবে না ভাসুর জিতবে, তা নিয়ে ভাবিও না।”
|
ওরা চার জন
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
‘প্রধান’ পরিবারে নিকট-দূর সম্পর্ক মিলিয়ে এ বার পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়েছেন চার জন। ভগবানপুর ১ ব্লকের মহম্মদপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চাঁদহরি প্রধান নিজে এ বারও ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তবে, পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় বড় ছেলে নান্টু প্রধানের স্ত্রী অপর্ণাদেবীকেও দাঁড় করিয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি জিতেও গিয়েছেন। দলের সিদ্ধান্ত অনুয়াযী তিনিই হবেন প্রধান। উপপ্রধান পদে কোনও সংরক্ষণ নেই। জিতলে চাঁদহরিবাবু হবেন উপপ্রধান। ছোট ছেলে পিন্টু প্রধান পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। পিন্টুবাবুর শাশুড়ি উত্তরবাড় গ্রামের কাজল প্রধান পঞ্চায়েত সমিতির অপর একটি আসনে প্রার্থী হয়ে জিতেও গিয়েছেন। প্রধান পরিবারের পঞ্চায়েতে একাধিপত্য নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। নান্টুবাবু অবশ্য বলেন, “কর্মী সমর্থকেরা যা চেয়েছেন তাই হয়েছে। নিন্দুকেরা অক্ষম বলেই আড়ালে কথা বলে।”
|
স্বামীর আসনে স্ত্রী
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটাশপুর |
মহিলা সংরক্ষিত বলে স্বামীর আসনে দাঁড়াচ্ছেন স্ত্রী। স্বামীর চেয়ারে বসাও সময়ের অপেক্ষা। পটাশপুর ১ ব্লকের অমর্ষি ২ পঞ্চায়েত এলাকার সানমজিগাঁ বুথ থেকে এ বার প্রার্থী হচ্ছেন সরস্বতী মাজি। ওই বুথ থেকেই বরাবর জিতে আসছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাপস মাজি। ২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তিনি বিরোধী দলনেতা হন। পরে সিপিএম প্রধানকে সরিয়ে প্রধান হন। তাপসবাবু এ বারে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। তাপসবাবু জানান, সানমজিগাঁ আসনটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় দলের কর্মী-সমর্থকদের আবদারেই স্ত্রীকে প্রার্থী করিয়েছেন। |
|