|
|
|
|
খড়্গপুরে ব্যাঙ্ক ডাকাতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সবে খুলেছে ব্যাঙ্ক। হাতে গোনা দু’চার জন গ্রাহক। তারই মধ্যে গ্রাহক সেজে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকে পড়ল জনা পাঁচেক। ঢুকেই স্ব-মূর্তি ধারণ করল তারা। ব্যাগ থেকে রিভলবার-ছুরি বের করে ছক মতো যে যার পজিশন নিয়ে নিল। গ্রাহক ও আধিকারিকদের কাছ থেকে মোবাইল বের করে খুলে নিল সিম। তারপর ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রাহক সেজে ব্যাঙ্কে তালা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে গেল!
বৃহস্পতিবার সকালেই ব্যাঙ্ক খোলার পর মুহূর্তেই এমন ঘটনা ঘটল খড়্গপুর শহরের পুরাতনবাজার এলাকার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। ঘটনার খবর পেয়েই ব্যাঙ্কে যান ডিআইজি লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা, খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরুণচন্দ্র শেখর ও মহকুমা পুলিশ অফিসার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। সকাল ১০টায় ব্যাঙ্ক খুলল, আর তার পনেরো মিনিটের মধ্যে কী ভাবে ডাকাতি হল তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা এই ব্যাঙ্কের দিকে অনেক দিন ধরেই নজর রাখছিল। ডিআইজি বলেন, “ডাকাতির ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।”
খড়্গপুর শহরের পুরাতন বাজার এলাকাটি খুবই জমজমাট। রাস্তার দু’দিকে একাধিক দোকান রয়েছে। ব্যাঙ্কের অদূরে থাকে ট্রাফিক পুলিশও। কিন্তু ওই দিনের ঘটনার কথা কেউ কোনও টের পাননি। |
|
ডাকাতির পর পুলিশি প্রহরা। —নিজস্ব চিত্র। |
অতি অল্প সময়ের মধ্যেই দুষ্কৃতীরা ঢুকে মোবাইল কেড়ে নেয়, তার পর সকলকে এক জায়গায় বসিয়ে দেয়। দু’জন বন্দুক ও ছুরি হাতে পাহারায় থাকেন। এক জন গেটে দরজা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্য জন বন্দুক দেখিয়ে ম্যানেজারের কাছে থেকে টাকা নেয়। তারা ব্যাঙ্কের সিসি টিভির যন্ত্রাংশও খুলে নেয়। যাতে পরে সিসিটিভির ফুটেজ থেকে দুষ্কৃতীদের ছবি না দেখা যায়। তাই প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, এটা কোন ছোটখাটো চক্রের কাজ নয়। দুষ্কৃতী কম্পিউটার সম্বন্ধেও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্কে বেসরকারি সংস্থার এক নিরাপত্তারক্ষীও ছিল। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, তাঁর বন্দুকটি খারাপ থাকায় মাস কয়েক ধরে তিনি বন্দুক ছাড়াই ডিউটি করতেন। ফলে তিনিও দুষ্কৃতীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টাই করেননি। এ দিন ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে আসা জয়দীপ সিংহ বলেন, “ভিড় এড়াতে ব্যাঙ্ক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এসেছিলাম। তখনও টাকা তোলা হয়নি, হঠাৎ দেখি কয়েকজন যুবক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঢুকল। তারপরই বন্দুক বের করে হিন্দিতে বলল, আমরা যেন চুপ করে বসে পড়ি। মোবাইল নিয়ে সিম খুলে মোবাইলটি ফেরতও দিয়ে দিল। টাকা নেওয়ার পর গ্রাহক সেজেই ব্যাঙ্কে তালা দিয়ে বেরিয়ে গেল।” পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদেরও যোগ রয়েছে। নতুবা হাঁটা পথে কম সময়ের মধ্যে নিশ্চিন্ত হয়ে পালানো সম্ভব ছিল না। |
|
|
|
|
|