আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে ডুয়ার্সে নানা আসনে ৪০০ প্রার্থীকে দিয়ে মনোনয়ন জমা করালেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বুধবার দার্জিলিঙে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ এ কথা জানান। তিনি বলেন, “ডুয়ার্সের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ৪০০ প্রার্থীকে দিয়ে মনোনয়ন জমা করিয়েছি। আমাদের সঙ্গে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের জন বার্লা গোষ্ঠী ও ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে। এ বার তৃণমূলের সঙ্গেও আলোচনা করতে চাই। সেটা হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক জানান, উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সামিল হলে মোর্চার সঙ্গে আলোচনায় বসা যেতে পারে। চন্দনবাবু বলেন, “বাংলা ভাগ করা বা ডুয়ার্স-তরাইকে জিটিএতে অর্ন্তভুক্ত করার দাবি রয়েছে, এমন দলের সঙ্গে জোট করব না। এটা দলনেত্রীর ঘোষিত নীতি। ডুয়ার্স বা উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক উন্নয়নের দাবিতে কোনও দল যদি আমাদের সমর্থন করে তবে আমরা তা নেব। প্রয়োজনে আমরাও করব। তবে সবার আগে আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে।” |
দার্জিলিঙে জিটিএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। বুধবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি। |
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, তাঁরা তৃণমূলের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কথা মাথায় রেখেই পঞ্চায়েতে কোনও শর্ত ছাড়াই সমঝোতার কথা ভাবছেন।
এদিন দুপুরে গুরুঙ্গের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল দার্জিলিঙের রাজভবনে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করে। সেখানে জিটিএ-এর সমস্যার কথা জানিয়ে তার দ্রুত সমাধানে অনুরোধ করেন গুরুঙ্গ। তাঁদের আন্দোলনের সময়ে যে সব মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহার করানো, সেই সময়ে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিল বয়কটের বিষয় উল্লেখ করে তা মুকুব করার আর্জি জানান গুরুঙ্গরা। পরে গুরুঙ্গ দাবি করেন, রাজ্যপাল তাঁদের সব সমস্যার কথা শুনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরেই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে গুরুঙ্গ তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছের কথা জানিয়ে দেন।
গত বিধানসভা ভোটে ডুয়ার্স সহ সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েকটি আসনে সরাসরি তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করে মোর্চা। কিন্তু, জিটিএ গঠনের পরে জানুয়ারি মাসে দার্জিলিঙে এক সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ বলে তা থামাতে বাধ্য করেন মোর্চা নেতৃত্বকে। মোর্চা সূত্রে খবর কালচিনি, নাগরাকাটা, মালবাজার, মেটেলি, বানারহাটের মতো এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের দিয়ে মনোনয়ন জমা করে মোর্চা। তারা এখনও প্রতীক পায়নি। গুরুঙ্গ জানান, প্রতীক চিহ্ন পেলে তিনি ডুয়ার্সে প্রচারে যাবেন। |