ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বসিরহাট মহকুমার ১০টি ব্লকে মোট ১৭৫১টি আসনের মধ্যে ৪৭টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল তৃণমূল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বসিরহাটের জেলা পরিষদের ২৫টি আসনে তৃণমূল ২৫, সিপিএম ২০, কংগ্রেস ২৩, বিজেপি-২০, আরএসপি ১, সিপিআই ৪, এসইউসিআই ৮ এবং এআইইউডিএফ ৯টি আসনে প্রার্থী জিতেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির ২৬৬টি আসনে তৃণমূল ২৬৫, সিপিএম ২৩১, কংগ্রেস ১৬৪, বিজেপি-৮২, আরএসপি ৫, সিপিআই ২১, এসইউসিআই ১১ এবং এআইইউডিএফ ২০টি আসনে এবং ৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৬০টি আসনের জন্য তৃণমূল ১৪২৩, সিপিএম ১১৯০, কংগ্রেস ৮০১, বিজেপি-৩১২, আরএসপি ৩৪, সিপিআই ১৪৩, এসইউসি ২৮ এবং এআইইউডিএফ ৭০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
এর মধ্যে সন্দেশখালি-১ ব্লকের আগারহাটি-সরবেড়িয়া এবং সন্দেশখালি-২ ব্লকের বেড়মজুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২৮টি আসনের মধ্যে সিপিএম মাত্র দু’জন প্রার্থী দিতে সমর্থ হয়েছে। এই দু’টি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পঞ্চায়েত সমিতির ৫টি আসন, মিনাখাঁয় ২টি পঞ্চায়েত সমিতি, ২০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন এবং হাড়োয়ায় ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ১টি পঞ্চায়েত সমিতিতে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বামেরা। অন্যদিকে, কংগ্রেস জেলা পরিষদের ২টি, পঞ্চায়েত সমিতির ১০২টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬২২টি আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। বিজেপিও ৫টি জেলা পরিষদ, ১৮৪টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৪৮টি আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি।
বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়ন জমা পর্বে ওই সব আসনে শাসক দলের সন্ত্রাসের কারণেই তারা প্রার্থী দিতে পারেনি। তৃণমূলের বাইক-বাহিনী দাপিয়ে ঘুরেছে গ্রামগুলিতে। গত রবি ও সোমবার রাতে সন্দেশখালির বয়ারমারি, দুর্গামণ্ডপ, হাটগাছি, হাড়োয়ার সোনারহুলো, সোনাকোপা গ্রামে বোমাবাজি ও সিপিএম প্রার্থীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, হাড়োয়ায় আমতা, খাটরা ও গোপালপুর পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় প্রার্থীর বাড়ি ভাঙচুর করে সিপিএম। প্রার্থীদের লক্ষ করে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি-বোমা ছোড়ে।
গ্রামবাসীরা অবশ্য জানিয়েছেন, যেখানে যে দলের ক্ষমতা বেশি, সেখানে তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালাচ্ছে।
সিপিএমের জেলা স্তরের নেতা আবু বক্কর লস্কর বলেন, ‘‘হাড়োয়া, মিনাখাঁ ও সন্দেশখালি-সহ মহকুমায় ব্যাপক সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে তৃণমূলের বাইক বাহিনী। ওদের ভয়ে কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি।” জেলা কংগ্রেস নেতা বাবলি বসু বলেন, ‘তৃণমূল ও সিপিএমের আক্রমণের ফলে অনেক আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি।” বিরোধী দু’টি দলরেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা নারায়ন গোস্বামী। তিনি বলেন, “হাড়োয়া ও মিনাখাঁ এলাকায় কিছু জায়গায় সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মোটরবাইক নিয়ে প্রার্থীদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। বোমা-গুলি ছুঁড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে।”
এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। |