সবংয়ে একশো দিনের কাজ
দুর্নীতি, সরানো হল কর্মীকে
কশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এক কর্মীকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল প্রকল্পের ‘জেলা সেল’। এই ঘটনা সবং ব্লকের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের। অভিযোগের পেয়ে জেলা থেকে তিন সদস্যের দল ব্লকে গিয়ে তদন্ত করে। তাপরই অভিযুক্ত কর্মীকে কাজ থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অমরেন্দ্রনাথ মাইতি নামে ওই কর্মী একশো দিনের প্রকল্পে বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতে স্কিলড টেকনিক্যাল পারসন (এসটিপি) হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। সবংয়ের বিডিও কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নির্দেশের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
একশো দিনের কাজ নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। লিখিত ভাবে অভিযোগ এলে তা খতিয়েও দেখে প্রশাসন। কোথাও মাস্টার রোল ছাড়াই কাজ করা হয়। কোথাও বা একই কাজ বারবার দেখানো হয়। প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াও কাজ করার উদাহারণ রয়েছে। ক’মাস আগে সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কাজ নিয়ে অভিযোগ আসে প্রকল্পের জেলা সেলে। তদন্তের নির্দেশ দেন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক প্রিয়াঞ্জন দাস। তাঁর নির্দেশে জেলা থেকে তিন সদস্যের একটি দল ব্লকে পৌঁছয়। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন। দলে ছিলেন সেলের মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্ট এবং কো-অর্ডিনেটর (সোশ্যাল অডিট অ্যান্ড গ্রিভান্স)। যখন তদন্ত হয়, তখন এলাকায় ২৬৬টি প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল, ৩৯টি প্রকল্পের কাজ চলছিল। তদন্তকারী দল চারটি প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শন করে। সামনে আসে গরমিল।
তদন্তে দেখা যায়, বাসচা পুকুর সংস্কার পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। যত সংখ্যক শ্রমদিবস দেখানো হয়েছে ও মজুরি দেওয়া হয়েছে, তা ঠিক নয়। কাজের তুলনায় খরচ বেশি। মন্মথ পাড়ইয়ের পুকুর সংস্কারের ক্ষেত্রেও কাজের তুলনায় বেশি খরচ হয়েছে। পুকুরের গভীরতা ছিল ৭ ফুট ১১ ইঞ্চি। আরও ১ ফুট ১ ইঞ্চি গভীর করতে পুকুর কাটা হয়েছে। যার প্রয়োজন ছিল না। তুলসিচকে মোরাম রাস্তা তৈরিতেও পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। কাজ শুরুর আগে এলাকা পরিদর্শন করা হয়নি। কাগজপত্রে যে পরিমাণ মোরাম ব্যবহার দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তা হয়নি। সন্ন্যাসীবাড়ে আবার মোরাম রাস্তা তৈরিতে ৫ লক্ষ টাকার বেশি উপকরণ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও টেন্ডার নোটিস ব্যাপক ভাবে প্রচার করা হয়নি। কোনও খবরের কাগজে তা প্রকাশিত হয়নি। তদন্ত শেষে তিন পাতার রিপোর্টে জানানো হয়, সব মিলিয়ে চারটি প্রকল্প পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে তুলনায় বেশি খরচ হয়েছে।
‘জেলা সেল’ এই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয় সবংয়ের বিডিও’র কাছে। বিডিও অভিযুক্তকে শোকজ করেন। অমরেন্দ্রবাবু তার জবাবও দেন। তবে তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি ‘জেলা সেল’। জানা গিয়েছে, এক সময় বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও নির্মাণ সহায়ক ছিলেন না। পরিস্থিতি দেখে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অমরেন্দ্রনাথবাবুকে এসটিপি হিসেবে নিয়োগ করা হয়। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, একজন এসটিপি একটানা ৬ দিনের বেশি কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে, এই এসটিপি একটানা ৬ দিনের বেশি কাজ করেছেন। সেই মতো বেতনও পেয়েছেন। যে সময় তদন্ত হয়, সেই সময় পর্যন্ত যেখানে ৮২১ দিনের মজুরি পাওয়ার কথা, সেখানে ১ হাজার ৩৫ দিনের মজুরি পেয়েছেন। শো-কজের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়েই ওই কর্মীকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রকল্পের জেলা সেল। তবে এই প্রথম নয়, গত ফেব্রুয়ারিতে গড়বেতা ৩ ব্লকেও একজন এসটিপি-র চুক্তিপত্র খারিজ করা হয়। ওই কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার হয়। এই ঘটনার পর বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতে একজন নির্মাণ সহায়কও নিয়োগ করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.