সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি)-র উদ্যোগে অনুশীলন শিবিরে অংশ নিয়ে ঋদ্ধিমান সাহা, লক্ষ্মীরতন শুক্লা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে অর্ঘদীপ সাহা, ডনিল দত্তরা। মহকুমাস্তরে সিএবি’র তরফে যে ক্রিকেট অনুশীলন শিবির গত বছর থেকে শুরু হয়েছে শিলিগুড়িতে এ বছর তাতে অংশ নেন তারা। ডাবগ্রামের ছেলে অর্ঘদীপ সাহা। জাগরণী সঙ্ঘের নিয়মিত অনুশীলন করে। বাগডোগরার বাসিন্দা ডনিল গোসাইপুর মিলনি ক্লাবে অনুশীলন করে। অনূর্ধ্ব ১৫ বাংলা দলের হয়ে খেলেছে অর্ঘদীপ। ডনিলের সেই সুযোগ না হলেও সে জেলা দলের ক্রিকেটার।
গত ৩০ মে থেকে শিলিগুড়ির শিবমন্দিরে সিএবি’র উদ্যোগে ওই অনুশীলন শিবিরে অংশ নেয় মহকুমার বিভিন্ন এলাকার ৫০ জন ক্রিকেটার। অনূর্ধ্ব ১৪ এবং অনূর্ধ্ব ১৬ বিভাগে ২৫ জন করে ক্রিকেটার নিয়ে বুধবার পর্যন্ত ওই শিবিরে ক্রিকেটের টিপস পেয়ে খুশি অরিত্র ডাকুয়া, রাজু রায়, রিক্তম ভঞ্জ, গৌরব অগ্রবাল, অর্ঘ, ডনিলরা। অর্ঘদীপের কথায়, “এ ধরনের সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। আমি বাঁ হাতি ওপেনার ব্যাটসম্যান। কী করে সঠিক ভাবে উইকেটের সামনে দাঁড়াতে হয়, কী ভাবে কোনও বিশেষ শট মারতে হয় এত দিন সে সব অনেক কিছু জানতাম না। শিবিরে এসে তা বুঝতে পেরেছি। কোচের বিশেষ পরামর্শ পেয়ে মনে হচ্ছে সেগুলি মেনে চলতে পারেল নিজের খেলায় আরও বেশি উন্নতি করতে পারব।”
একই রকম প্রতিক্রিয়া ডনিলের। মিলনি ক্লাবে অনুশীলন করলেও ডনিল নকশালবাড়ি ইউনাইটেড ক্লাবের হয়ে খেলে। অনুশীলন শিবিরের শেষ দিন তার উপলব্ধি, “আগে খেলার সময় প্রায়ই ক্যাচ উঠে যেত। ড্রাইভ মারতে গেলে ক্যাচ উঠত। এই শিবিরে যোগ দিয়ে সেই সমস্যা সমাধানের পথ বুঝতে পেরেছি। সেই মতো চেষ্টা করছি। ফলও মিলছে। আর কিছু দিন অভ্যাস করলে পুরোপুরি মিটে যাবে বলে মনে হচ্ছে। কী বড় জিনিস যে পেলাম বোঝাতে পারব না।”
এমন খুঁটিনাটি সমস্যা নিয়ে নানা টিপস কোচের কাছ থেকে পেয়েছেন তারা। কিন্তু সারা বছর এ ধরনের অভিজ্ঞ কোচের প্রশিক্ষণ তারা পান না। তাই পরবর্তীতে কী করবেন? সিএবি কর্তৃপক্ষই বা কী ভাবছেন এই উঠতি ক্রিকেটারদের নিয়ে। প্রত্যন্ত এলাকার ক্রিকেটার থেকে ঋদ্ধিমান সাহা হয়ে ওঠা কী করে সম্ভব হবে? কোচ অমল ভট্টাচার্যের মতে এ ধরণের অনুশীলন শিবিরের মাধ্যমেই লক্ষ্মীরতন শুক্লা, ঋদ্ধিমান সাহারা নির্বাচকমণ্ডলীর নজরে এসেছে। সিএবি’র কোঅর্ডিনেটর অচিন্ত্য ঘোষ বলেন, “বছরভর না হলেও প্রতিটি জেলায় মহকুমাস্তরে সিএবি’র এ ধরনের শিবিরে আমাদের কোচরা অনূর্ধ্ব ১৪ এবং অনূর্ধ্ব ১৬ প্রতিটি বিভাগ থেকে ৫ জন করে উঠতি ক্রিকেট প্রতিভা বাছবেন। তা নথিভুক্ত করা হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে ওই সমস্ত ক্রিকেটারের উপর নজর রাখতে বলা হবে। জেলাস্তরে সিএবি’র অনুশীলন শিবির হলে সেখানে তাদের ডাকা হবে।” তবে নিজেদের বড় জায়গায় নিতে হলে ব্যক্তিগত উদ্যোগের উপর জোর দিতে চান অমলবাবু। তিনি জানান, সিএবি’র তরফেও ওই সমস্ত ক্রিকেটারের খোঁজ রাখা হবে বলে মনে করি। তা ছাড়া বিভিন্ন মহকুমায় এ ধরনের শিবিরের মাধ্যমে দল তৈরি করে তাদের মধ্যে ম্যাচ খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সে সব ম্যাচ থেকে নির্বাচকরা উঠতি ক্রিকেট প্রতিভা বাছতে পারবেন। তা ছাড়া স্থানীয় স্তরে যে সব কোচরা রয়েছেন তাদেরও প্রশিক্ষণের বিষয়টি ভাবা হয়েছে। যাতে তাদের কাছ থেকে প্রত্যন্ত এলাকার উঠতি ক্রিকেটাররা বছরভর সঠিক প্রশিক্ষণ পান। জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আগ্রহী ক্রিকেটারদের ওই শিবিরে ডাকা হয়েছিল। নির্বাচনী শিবির থেকে ৫০ জনকে বেছে নেন সিএবি’র কোচ। তাদের নিয়ে পক্ষকালব্যাপী বিশেষ শিবির হল আঠেরোখাই সরোজিনী সঙ্ঘের মাঠে। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব অরূপ রতন ঘোষ বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম প্রত্যন্ত এলাকায় শিবির করতে। সে কারণেই শহরের বাইরে শিবমন্দির এলাকায় ওই ক্লাবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।” সরোজিনী সঙ্ঘের অন্যতম কর্মকর্তা দীপ্তেন্দু ঘোষ জানান, সেপ্টেম্বর মাসে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, মিরিকে এ ধরনের শিবির হবে সিএবির উদ্যোগে। |