নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে এক শিশুকন্যার পচাগলা দেহ মিলল বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত খাল থেকে। বুধবার, হাওড়ার নাজিরগঞ্জের হাঁসখালি পোলে।
পুলিশ জানায়, সানা পরভিন (৫) নামে ওই শিশুকন্যার বাড়ি শিবপুরের ব্যাতাইতলায়। পরিবারের অভিযোগ, তাকে অপহরণের পরে খুন করে খালে ফেলে দেওয়া হয়। দুই যুবকের নামে অপহরণ ও খুনের অভিযোগও করা হয়। তাঁরা গ্রেফতার হয়েছে। যদিও পুলিশের ধারণা, সোমবার দুপুরে বৃষ্টির সময়ে বাড়ি থেকে কিছু দূরে জমা জলে খেলতে গিয়ে কালভার্টের ভাঙা অংশ দিয়ে শিশুটি নর্দমায় পড়ে তলিয়ে যায় এবং ভেসে গিয়ে পচা খালে পড়ে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “মনে হয় দুর্ঘটনা। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
পুলিশ জানায়, সোমবার সানা তার দু’বছরের বড় দিদি আফরিন-সহ কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে বিদ্যাসাগর সেতুর টোলপ্লাজার নীচে বৃষ্টির জমা জলে খেলতে যায়। স্নানের সময়ে সানা নিখোঁজ হয়ে যায়। বোনকে না দেখে আফরিন পরিজনদের ডাকে। রাত পর্যন্ত খুঁজেও সানাকে না পেয়ে শিবপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সানার বাবা, পেশায় ফল বিক্রেতা মহম্মদ সাবির। এর মধ্যে রটে যায়, শিশুরা যখন খেলছিল তখন পাশে চার ব্যক্তি তাস খেলছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাঁরাই শিশুটিকে অপহরণ করেন। কারণ শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পরে তাঁদের আর দেখা যায়নি। ওই রাতেই সন্দেহভাজনদের মধ্যে দু’জন শুভজিৎ দাস ও মনোজিৎ অধিকারীকে পাকড়াও করে মারধর করেন স্থানীয়েরা। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। অপহরণের অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতারও করে। পুলিশ ধৃতদের নিয়ে তল্লাশি চালালেও মঙ্গলবারও শিশুটির খোঁজ মেলেনি। বুধবার শিবপুর থানায় খবর আসে, হাঁসখালি পোলের খালে একটি শিশুর মৃতদেহ মিলেছে। শিশুটির বাবা গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন। |
এ দিন শিশুটির বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীদের ভিড়। টোলপ্লাজার নীচে যেখানে শিশুরা স্নান করছিল, সেখানে নর্দমার উপর পাতা সিমেন্টের স্ল্যাবের অনেকগুলি ভেঙে এক-দেড় ফুট ব্যাসের গর্ত তৈরি হয়েছে। শিশুটির বাবা বলেন, “পুলিশ ওই ফাঁক গলে মেয়ের পড়ে যাওয়ার কথা বললেও তা ঠিক নয়। তাকে অসৎ উদ্দেশে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে।” |