সম্পাদকীয় ২...
তবুও শান্তি
য় বৎসর ধরিয়া সরকারি উচ্চ পর্যায়ে মুখ-দেখাদেখি বন্ধ। থাকিয়া-থাকিয়াই পরস্পর গালমন্দ, হুমকি, মাঝেমধ্যে সমুদ্রপথে টর্পেডো মারিয়া প্রতিদ্বন্দ্বীর তরণী ডুবাইয়া দেওয়া, নাবিকদের মৃত্যু। কিছু দিন আগে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকিও শুনা গিয়াছে। তাই দুই কোরিয়া যখন আলোচনার টেবিলে বসে, তখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-সহ গোটা বিশ্বই স্বস্তি বোধ করিতে পারে। দুই কোরিয়ার সরকারি প্রতিনিধিদের পানমুনজম গ্রামে হাত মিলাইবার ছবি এমন স্বস্তিই আনিয়া দিয়াছে। পানমুনজম সেই ‘সন্ধি-গ্রাম’, যেখানে ১৯৫০-’৫৩ সালের ধুন্ধুমার যুদ্ধের পর বিভক্ত দুই কোরিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদন করিয়াছিল। সেই গ্রামে দুই কোরিয়ার সরকারি প্রতিনিধির করমর্দনের ছবি তাই গভীর প্রতীকী তাৎপর্য বহন করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোল-এ উত্তর কোরিয়ার মন্ত্রী রাজনীতিক শান্তি-বৈঠক করিতে আসিতেছেন দেখিয়া মনে পড়ে, কী উদ্বেগেই না কাটিতেছে দুই কোরিয়ার জনসাধারণের জীবন। উত্তর কোরিয়ার তরুণ প্রেসিডেন্ট কিম-জঙ-আন যখন পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র দিয়া দক্ষিণ কোরিয়া, এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলেও হানাদারির হুমকি দেন, তখন সোল তো বটেই, ওয়াশিংটনও বিচলিত হয়। কিছু সমর-বিশেষজ্ঞ পিয়ংইয়ংয়ের হাতে পরমাণু বোমা এখনও আসে নাই বলিয়া আশ্বাস দিলেও কাহারও পক্ষে নিশ্চিন্ত থাকা সম্ভব হয় না। কেননা এই দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রটি ক্ষেপণাস্ত্র-প্রযুক্তিতে গোপনে ঠিক কত দূর অগ্রগতি ঘটাইয়াছে, গোয়েন্দাদের পক্ষেও তাহার সঠিক অনুমান সম্ভব নয়। উৎকণ্ঠা তাই বাড়িতেছিল। এমন নয় যে, উত্তর কোরিয়া ইতিপূর্বে দক্ষিণকে আক্রমণের হুমকি দেয় নাই কিংবা তাহাকে গ্রাস করিতে উদ্যত হয় নাই। তবু উত্তরের শাসক পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম কিম-জঙ-আন-এর হুমকির মধ্যে আরও শীতল যুদ্ধশঙ্কা নিহিত ছিল। অবশেষে তাঁহার শুভবুদ্ধির উদয় হইয়াছে।
কী ভাবে, কেমন করিয়া তাহা হইল, সে বিষয়ে একাধিক জল্পনা আছে। সবচেয়ে জুতসই জল্পনাটি হইল, বেজিংয়ের তরফে পিয়ংইয়ংয়ের উপর চাপ সৃষ্টি। গণপ্রজাতন্ত্রী চিনই একমাত্র রাষ্ট্র, যাহার সহিত উত্তর কোরিয়ার সখ্য রহিয়াছে। কোরীয় যুদ্ধের কাল হইতেই চিন উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক স্বৈরাচারীদের প্রশ্রয় দিয়া আসিতেছে। স্বভাবতই কিম পরিবারের একের পর এক প্রজন্মের রণোন্মত্ততা নিয়ন্ত্রণ করার দায়ও বিশ্ব বেজিংয়ের ঘাড়েই চাপাইয়া দিয়াছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হইতে শুরু করিয়া নিরাপত্তা পরিষদ পর্যন্ত পিয়ংইয়ংকে বুঝাইয়া-সুঝাইয়া নিরস্ত করার দায়িত্ব বেজিংয়ের উপরেই চাপাইয়া থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হুসেন ওবামা চিনা প্রেসিডেন্ট শি-জিন পিং-এর সহিত শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হওয়ার পরেই উত্তর কোরিয়া দক্ষিণের নেতৃত্বের সহিত শান্তি-আলোচনায় বসিতে ইচ্ছুক হয়। ইহা কাকতালীয় হইতে পারে না। তবে কার্যকারণ যাহাই হউক, ইহাতে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তির সুপবন বহিতে পারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.