|
|
|
|
অসমে নয়া মাও-ছক |
চা-বাগানে প্রভাব বাড়াতে বিপ্লবী হিন্দি ছবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
নাশকতা নয়, উত্তর-পূর্বের ক্ষেত্রে আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতিই নিয়েছে মাওবাদীরা। সাত মাওবাদী নেতাকে গ্রেফতারের পর, উত্তর-পূর্বে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সে রকম আঁচই পেয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, চা-বাগানগুলিতে প্রভাব বাড়াতে হিন্দি ছবির সিডি-র সাহায্য নিচ্ছে মাওবাদীরা। এ ক্ষেত্রে বিপ্লবী কাজকর্ম, শোষণের বিরুদ্ধে
লড়াইয়ের ছবিগুলিকেই জঙ্গি নেতারা বেছে নিয়েছেন।
মাওবাদী সমস্যা যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জাঁকিয়ে বসেছে তা খোদ মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আগেই মেনে নিয়েছেন। সরকারি হিসেবে, ৯টি জেলার ৩৫টি থানা এলাকায় এই জঙ্গি প্রভাব থাকার কথা বলা হলেও এর বাইরে তা ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে। ১৯৯৬ সাল থেকেই নামনি অসমে তারা কাজ শুরু করেছিল। আর তা জানতে অসম পুলিশের ১৭ বছর সময় লেগেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহেশজি ও পরেশদাকে গ্রেফতার করার পরে গোয়ালপাড়া, বরাক উপত্যকায় মাও ঘাঁটি বিস্তারের খবর পুলিশ জানতে পারে। আরও জানা গিয়েছে, আদিবাসী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষবিরতিতে থাকা সদস্যদের অনেকেই শান্তি আলোচনা শুরু না হওয়ায়, ধৈর্য্য হারিয়ে মাওবাদীদের দলে ভিড়েছে।
পাশাপাশি, অসম ও কলকাতার মাধ্যমে ঝাড়খণ্ড বা অন্ধ্রের মাওবাদী নেতারা মণিপুরের পিএলএ, নাগাল্যান্ডের এনএসসিএন ও মায়ানমারের জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। পুলিশের মতে, মাওবাদী-পিএলএ যৌথ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অসম বা অরুণাচলে নিরাপত্তাবাহিনীর উপরে আক্রমণ চালিয়ে নিশ্চিন্ত ঘাঁটিগুলিতে পুলিশ হামলা টেনে আনতে চাইছেন না নেতারা। তাই দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সমস্যা থাকা উজানি অসম, গোলাঘাট, নামনি অসমের আদিবাসী যুবকদের মাসোহারা ও অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে দলে টানা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যে অন্তত দেড়শো যুবক ইতিমধ্যেই নাগাল্যান্ড বা ঝাড়খণ্ডে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছে। ফের উজানি অসমের একদল যুবক মাও ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে জানতে পেরে, গত কাল রাতে তিনসুকিয়া ও ডিব্রুগড় পুলিশ চেন্নাই এক্সপ্রেসে অভিযান চালিয়ে প্রায় শ’খানেরক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এদিকে, চা বাগানে ‘সিনেমা প্রদর্শন’-এর খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রকাশ ঝা পরিচালিত হিন্দি ছবির সিডিই মূলত ব্যবহার করছে তারা। সেখানে পুলিশের চর হয়ে মাওবাদী বাহিনীতে ঢোকা অভিনেতা অভয় দেওল কী ভাবে মাওবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পুলিশের সঙ্গ ত্যাগ করছেন তাও দেখানো হয়। পুলিশের বক্তব্য, কেউ সিডি বিলোলে বা সিনেমা দেখালে অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় না। সেক্ষেত্রে গ্রেফতারও করা যায় না। কিন্তু, এভাবেই ‘ওভারগ্রাউন্ড’ মাওবাদীরা জনপ্রিয়তা বাড়াচ্ছে। আপাতত এই ছবির সিডি অনেক পরিমাণে, একসঙ্গে কোথাও কেনা বা পাঠানো হচ্ছে কী না তার দিকে নজর রেখেছে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের আইজি এল আর বিষ্ণোই বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত চলছে।” |
|
|
|
|
|