ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হানা নিয়েও উদ্বেগ
সনিয়াকে চিঠিতে গণতন্ত্রের গুণগান প্রচণ্ডর
নেপালের মাওবাদী শীর্ষনেতা প্রচণ্ডও এখন মানছেন হিংসা নয়, গণতন্ত্রই শেষ কথা।
ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলার তীব্র নিন্দা করে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দিয়েছেন প্রচণ্ড। বলেছেন, হিংসা কখনওই শেষ কথা হতে পারে না। গণতান্ত্রিক পথে যে কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব। ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী হামলার ঘটনাটি উদ্বেগজনক বলেও বর্ণনা করেছেন অস্ত্র সমর্পণ করে গণতন্ত্রে ফেরা নেপালের এই মাওবাদী নেতা।
কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব প্রচণ্ডের ওই চিঠিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেপালি কংগ্রেস নেতা শেরবাহাদুর দেউবা যখন ভারত সফরে, তখন সনিয়া গাঁধীর কাছে প্রচণ্ডের এই চিঠি বিশেষ অর্থ বহন করছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে মাওবাদী হামলায় কংগ্রেসের ২৭ জন নেতা-কর্মীর মৃত্যু হয়। ওই হামলায় আহত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিদ্যাচরণ শুক্লও গত কাল মারা গিয়েছেন। ওই হামলার নিন্দা করে প্রচণ্ড বলেছেন, “ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলায় যে ভাবে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা নিহত হয়েছেন, তাতে আমি ও আমার দল ইউসিপিএন (মাওবাদী) গভীর ভাবে মর্মাহত। গোটা ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
নেপালের মাওবাদী নেতা এ দেশের মাওবাদীদের সমালোচনায় সরব হওয়ায় ক্ষুব্ধ হতে পারেন এ দেশের মাওবাদীরা। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, নেপালের মাওবাদী নেতা এখন বুঝতে পারছেন, গণতন্ত্রই সমস্যা সমাধানের পথ। এ দেশের মাওবাদীরা সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত নন তাই এটা বুঝতে পারছেন না। চিঠিতে প্রচণ্ড বলেছেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে যে কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে। গণতন্ত্রের মাহাত্ম্য এখানেই।” কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “দস্যু রত্নাকর এখন বাল্মীকি। গণতন্ত্রের শক্তি বুঝতে পেরেছেন তিনি।”
নেপালের রাজশক্তিকে উৎখাত করার লক্ষ্যে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন প্রচণ্ড। রাজার সেনাদের সঙ্গে প্রচণ্ডের মাওবাদী বাহিনীর রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে নেপালের জনজীবন অস্তব্যস্ত হয়ে পড়ে। গণবিক্ষোভে রাজতন্ত্র ভেঙে পড়ার পরে রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে অর্ন্তবর্তী প্রধানমন্ত্রী হন প্রচণ্ড। ক্ষমতা লাভের পর থেকেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন তিনি। এ নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়ে পড়েন প্রচণ্ড। অস্ত্র সমর্পণ করা মাওবাদী যোদ্ধাদের নেপালের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে দলের তাত্ত্বিক নেতা বাবুরাম ভট্টরাইয়ের সঙ্গে সংঘাত চরমে ওঠে তাঁর। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রচণ্ড।
চলতি বছরেই নেপালে নির্বাচন হওয়ার কথা। গত কাল শেরবাহাদুর দেউবার সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও আশা প্রকাশ করেছেন, নভেম্বরের মধ্যেই নেপালে নির্বাচন হবে। সাউথ ব্লকেরও বক্তব্য, নেপালে অবিলম্বে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হওয়া প্রয়োজন। কারণ চিন ও ভারতের মধ্যে নেপালের ভৌগোলিক অবস্থান দিল্লির কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। চিনের সক্রিয় মদতে ওই দেশে ভারত-বিরোধী একটি লবিও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র মনে করছে, ওই দেশে দ্রুত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়াটা ভারতের পক্ষে মঙ্গল। প্রচণ্ড বরাবরই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের পক্ষে। সিপিএমের শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। কংগ্রেস মনে করছে, সহমর্মিতার ওই চিঠির মাধ্যমে কংগ্রেসের সমর্থন পেতে চাইছেন প্রচণ্ড। বিদেশ মন্ত্রকও মনে করছে, আগামী নির্বাচনে ভারত-বন্ধু হিসাবে পরিচিত প্রচণ্ড নেপালের শীর্ষ পদে বসলে আখেরে লাভ হবে দিল্লিরই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.