৭১০ ব্লকে বরাদ্দ ১২৫০ কোটি
সংখ্যালঘু ভোট ভাগ রুখতে উন্নয়নে কেন্দ্র
র্বভারতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদীর উত্থানের ফলে লোকসভা ভোটে ধর্মের ভিত্তিতে মেরুকরণের সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে এর ফলে তাঁদের কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে এখনও ধন্ধে তাঁরা। এর মধ্যে অবশ্য একটা কাজে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। সেটা হল, যেনতেন প্রকারে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ রোখা। সনিয়া-রাহুলের এখন মূল লক্ষ্য হল, মুলায়ম সিংহ-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কোনও আঞ্চলিক শক্তিই যেন সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে বিশেষ ভাগ না বসাতে পারে।
সেই কথা মাথায় রেখেই লোকসভা ভোটের আগে দেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করতে চলেছে মনমোহন সিংহ সরকার। যে ব্যাপারে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন খোদ মা এবং ছেলেই। স্থির হয়েছে, দেশের ১৯৬টি জেলার ৭১০টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ব্লক ও ৬৬টি শহরে বিভিন্ন সামাজিক পরিকাঠামো প্রকল্পের জন্য আগামী ন’মাসে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্র। সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের মাধ্যমে প্রকল্প রূপায়ণ হলেও তার ওপর সরাসরি নজর রাখবে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। আবার ব্লক স্তরে যথাযথ কাজ হচ্ছে কি না, তার তত্ত্বাবধানের জন্য স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যেই এক জন প্রতিনিধিকে নিয়োগ করা হবে।
এ ব্যাপারে কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আজ বলেন, লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীই যে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী, সে ব্যাপারে সংশয় নেই। সে ক্ষেত্রে ধর্মীয় মেরুকরণের বড় সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু মুশকিল হল, সংখ্যালঘু ভোটের প্রচুর দাবিদার। উত্তরপ্রদেশে যেমন মুলায়ম সিংহ সংখ্যালঘু ভোট পেতে সক্রিয়, তেমনই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারে নীতীশকুমার-সহ আঞ্চলিক নেতারা সংখ্যালঘুদের মন জয়ে নিজেদের মতো করে নানান কৌশল ও ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সেটাই কংগ্রেসের আশঙ্কার বিষয়। কারণ, রাজ্য স্তরে ভোটাভুটিতে যাই হোক, কংগ্রেস চাইছে জাতীয় স্তরে নির্বাচন অর্থাৎ লোকসভা ভোটে যেন মুসলিম ভোট ভাগ না হয়। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে মুসলিমরা যেন কংগ্রেসের ওপরেই আস্থা রাখেন। তা সুনিশ্চিত করতে না পারলে কংগ্রেসের আসন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উদাহরণ দিয়ে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, যেমন গত লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ২১টি আসন জিতেছিল। বিপুল হারে মুসলিম ভোট পাওয়ার কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল। এ বারও সেই ধারা বজায় না রাখতে পারলে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের আসন কমতে বাধ্য।
সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, মূলত সেই কারণে উন্নয়ন প্রকল্প গভীরে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ক’দিন আগে পর্যন্ত সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণ জেলাকে ভিত্তি করে করা হতো। কিন্তু প্রকল্প রূপায়ণের প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করে তা ব্লক-ভিত্তিক করা হয়েছে। তা ছাড়া আগে দেশের ৯০টি জেলায় এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হতো। তা এক ধাক্কায় বাড়িয়ে ১৯৬টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ইতিমধ্যে ৬৯৮টি স্কুল বাড়ি, ১৫ হাজার অতিরিক্ত ক্লাসরুম, প্রায় ৩০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ২৩৮৩টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইন্দিরা আবাস যোজনার ধাঁচে সওয়া তিন লক্ষ গৃহ নির্মাণ, ১১৩টি আইটিআই এবং ৪৪টি পলিটেকনিক কলেজ নির্মাণে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্যও নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য যে অতিরিক্ত ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা নিয়ম মতো চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে খরচ করার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, যথাসম্ভব দ্রুত গতিতে প্রকল্প রূপায়ণ করতে হবে। কেন না, লোকসভা ভোট এগিয়ে আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.