শিল্প ক্ষেত্র চাঙ্গা হয়ে ওঠার আশায় জল ঢেলে দিল এপ্রিলের উৎপাদন বৃদ্ধির হার। বুধবার প্রকাশিত পরিসংখ্যানে নতুন অর্থবর্ষের প্রথম মাসে ফের ২%-এ নেমে এল শিল্প বৃদ্ধি। মার্চে তা ছিল ৩.৪%।
তবে কালো মেঘের আড়ালে রুপোলি রেখার মতো আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ প্রায় এক বছর পরে এ দিনই ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গী বদলে পূর্বাভাস সংশোধন করেছে। যার জেরে ডলারের তুলনায় ৬০ পয়সা বেড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাকা। দিনের শেষে প্রতি ডলার থামে ৫৭.৭৯ টাকায়।
অর্থনীতির আর একটি ভাল খবর, খুচরো পণ্য বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার মে মাসে নেমে এসেছে ৯.৩১ শতাংশে। এপ্রিলের হার ৯.৩৯%, মার্চে ছিল আরও বেশি, ১০.৩৯%। অন্য দিকে, পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার মে মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দওয়া সীমার মধ্যেই থাকবে বলে রয়টার্সের সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী তা দাঁড়াবে ৪.৮৭%। তবে মূল্যবৃদ্ধি কমলেও তা শেয়ার বাজারের আশা পূরণ করতে পারেনি। বরং শিল্প বৃদ্ধির হার কমার খবরে এ দিন সেনসেক্স পড়ে যায় ১০২ পয়েন্ট। দু’মাসের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নেমে থামে ১৯,০৪১.১৩ পয়েন্টে। বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি এ দিনও বাজারে ছিল বিক্রেতার ভূমিকায়। সূচক পড়ার পিছনে যা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। |
শিল্পোৎপাদনের পরিসংখ্যান বলছে, মূলত কারখানায় তৈরি পণ্য উৎপাদন মাত্র ২.৮% হারে বাড়া এবং খনন ক্ষেত্রে ৩% হারে উৎপাদন সঙ্কোচনই সর্বিক শিল্প বৃদ্ধির হারকে টেনে নামিয়েছে। শিল্প বৃদ্ধির হিসাবে কারখানার উৎপাদনের অবদান ৭৫%। ঢিমেতালে চলা শিল্পোৎপাদন নিয়ে উদ্বিগ্ন সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “শিল্পে লগ্নিতে উৎসাহ দিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উচিত সব দিক মানিয়ে চলার মতো ঋণনীতি পেশ করা।” যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেছেন, “আশা করি যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নেবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।” ১৭ জুন ঋণনীতি পেশ করবে আরবিআই।
এ দিন সবচেয়ে উৎসাহব্যঞ্জক খবরটি দিয়েছে ফিচ। ভারতের অর্থনীতি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে পূর্বাভাস ‘নেতিবাচক’ (নেগেটিভ) থেকে ‘স্থিতিশীল’-এ বদলে দিয়েছে তারা। ফলে কমেছে ভারতের ঋণ পাওয়ার ঝুঁকি। ২০১২-র ১৮ জুন ঠিক এর বিপরীত পূর্বাভাস দিয়ে অর্থনীতি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ফিচ। |