প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি দেয়নি ইসিএল, এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই জমিদাতা। কেন তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়নি, তা জানিয়ে ইসিএলকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
ইসিএলের একটি সূত্রে জানা যায়, জামুড়িয়ার বেনালি ও জবা গ্রামে প্রকল্পের জন্য জমি কিনেছিল সংস্থা। বেনালির কালীদাস মুখোপাধ্যায় ও বোগড়ার সজলকুমার দত্ত অভিযোগ করেন, জমি কেনার সময়ে সংস্থা কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী দু’একর জমি পিছু পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে। ১৯৯৫ সালের ২৫ অগস্ট দুই গ্রামের ৪৯ জনের সঙ্গে একটি বৈঠক করে ইসিএল। ২০০৩ সালের ৩ মার্চ ৪৯ জনের চাকরির অনুমোদন দেয় সংস্থা। তার ভিত্তিতে ২০০৪-এর ৩০ মার্চ শারীরিক পরীক্ষা হয়। তাতে ৪৯ জনকেই সক্ষম বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তার পরে ৪৬ জনের চাকরি হলেও তিন জনকে নিয়োগ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
কালীদাসবাবু ও সজলবাবু অভিযোগ করেন, কেন তাঁরা চাকরি পেলেন না, তা জানতে গেলে সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, কমপক্ষে পাঁচ বছরের জমির মালিকানা না থাকলে চাকরি দেওয়া হবে না। কালীদাসবাবু ও সজলবাবুর দাবি, “৪৬ জনের মধ্যে অধিকাংশেরই ন্যূনতম পাঁচ বছরের মালিকানা নেই, আমরা এ কথা জানালেও তা শুনতে চাননি কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালে আমরা কলকাতা হাইকোর্টর দ্বারস্থ হই।”
তাঁদের আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, ২০১২ সালের ১২ অক্টোবর বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ইসিএলকে দশ সপ্তাহের মধ্যে সংস্থার আইন মেনে যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী সংস্থার তরফে গত ৩০ জানুয়ারি ও ১২ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজারের অফিসে শুনানির ব্যবস্থা হয়। শুনানির দ্বিতীয় দিনে সংস্থার সদর দফতরের প্রতিনিধিরা এরিয়া কর্তৃপক্ষকে জানান, পুরো বিষয়টি প্রথমে সংস্থার ভিজিল্যান্স বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। সেই বিভাগ বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখায় পাঠিয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না বলে ওই আধিকারিকেরা জানিয়ে দেন, দাবি পার্থবাবুর।
আইনজবীবী পার্থবাবু জানান, বিষয়টি নিয়ে ইসিএল গড়িমসি করছে অভিযোগ তুলে এপ্রিলে তাঁরা ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি বিচারপতি তপেন সেনের এজলাস থেকে ইসিএল কর্তৃপক্ষকে হলফনামা দিয়ে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য চাওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখে তারা কী তথ্য পেয়েছে, তা জানিয়ে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখাকেও হলফনামা জমা দিতে বলেছে কোর্ট, জানান পার্থবাবু। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় শুধু বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো আমরা কাজ করব।” |