সালানপুর পঞ্চায়েত
আঠারো বছরে পা দিয়েই পঞ্চায়েতে দাঁড়ালেন স্মৃতি
ই বছরই ১৮ বছরে পড়লেন স্মৃতি। ভোটাধিকার পেলেন। প্রাপ্তবয়স্ক হলেন। কিন্তু শুধু ভোট দেওয়া নয়, এই বছর ভোটের প্রার্থীও তিনি। সালানপুর গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে এ বার দাঁড়ালেন আসানসোল গার্লস কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ছাত্রী স্মৃতি কর্মকার। জেতার ব্যাপারে আশাবাদী এই তরুণীর মতে, আজ ছাত্র সমাজকেই রাজনীতির হাল ধরতে হবে। কিন্তু তার সঙ্গে পড়াশোনাটাও জরুরি। কারণ সঠিক ভাবে রাজনীতি করতে হলে, উচ্চশিক্ষার ভূমিকা আছেই।
ছোট থেকেই আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই বেড়ে উঠেছেন স্মৃতি। কিন্তু তফাৎ তো একটা ছিলই। বাড়িতে একটা রাজনৈতিক আবহাওয়া সব সময়েই ছিল। বাবা নন্দ কর্মকার দু’বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন। এক বার জিতেওছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়িতে অনেক লোকের যাওয়া আসা, নানা রকম কথাবার্তার পরিবেশ ছিলই। আর কংগ্রেসি রাজনীতি ধরে চলা এই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিনিধি হয়ে উঠেছেন স্মৃতি।
তাঁর বাবা নন্দ কর্মকার বলেন, “আমি চেয়েছিলাম ও রাজনীতিতে নামুক। ও নিজের ইচ্ছেয় ভোটে দাঁড়াতে চেয়েছে। আমিও বাধা দিইনি।” পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পিছনে স্মৃতির একটি ‘রোখ’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, “পড়ুয়ারা দেশের সংবিধান কী, তা জানতে চায়। এ দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো নিয়ে চর্চা করে। রাষ্ট্রনায়কদের নাম ও তাঁদের বিষয়ে জানার চেষ্টা করে। সর্বোপরি দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের সব ক’টি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। অথচ তাদের কলেজের ছাত্র সংসদ পরিচালনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।” স্মৃতির কথায়, “এতে তো ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতি সচেতন হতে পারছে না। আমি এই বঞ্চনা চাই না। তাই পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছি।”

নিজের বাড়িতে স্মৃতি কর্মকার। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের দখলে রয়েছে সালানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটি। সাধারণত সিপিএমের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত এই অঞ্চল। এমন জায়গায় জেতা কি সহজ হবে তাঁর পক্ষে? স্মৃতি জানান, জেতা হারা নিয়ে এখন ভাবছেনই না তিনি। এই সুযোগে এলাকার মানুষের চাহিদা, প্রয়োজনগুলিই তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এটাও তো কম কিছু নয়।”
কিন্তু এত কম বয়সে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন স্মৃতি, তাতে পড়াশোনার ক্ষতি হবে না? এমন কি, ভোটে জিতলে তো সব সময়ে গ্রামের মানুষের কাজ করতে হবে। তখন এত কিছু করে পড়াশোনা চালানো কি সম্ভব হবে তাঁর পক্ষে? স্মৃতি জানান, সময় বের করে পড়াশোনা করবেন তিনি। তাঁর কথায়, “ঠিক করেছি দিনের বেলায় এলাকার কাজ করব। রাতে পড়াশোনা করব। ভাল কিছু করতে হলে উচ্চশিক্ষিত হওয়াটা জরুরি।” ভবিষ্যতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করে তাঁর গবেষণা করার ইচ্ছা আছে তাঁর। ইচ্ছে রয়েছে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করারও।
সালানপুর ও তার আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের ছাত্রীদের জন্য একটিমাত্র মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পড়ার জন্য গ্রামের মেয়েদের যেতে হবে নিয়ামতপুর বা আসানসোলে। ভোটে জিততে পারলে মাধ্যমিক স্কুলটিকে উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত করার চেষ্টা করবেন স্মৃতি। একইসঙ্গে এলাকার দূষণ সমস্যা রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
স্মৃতিকে ভোটে দাঁড় করানোর বিষয়ে মূল উদ্যোগ নিয়েছিলেন, প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য তথা সালানপুরের প্রাক্তন-সহ সভাপতি শ্যামল মজুমদার। তাঁর কথায়, “রাজনীতিতে আজকাল ভাল মানুষেরা আসছেনই না। কিছু শিক্ষিত লোক জনকে হাজির করতে পারলে সাধারণ মানুষের কাছে রাজনীতির ভাবমূর্তিটা ভাল হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.