ওভারহেড তারে ফেলে দেওয়া কলাপাতা থেকে ট্রেন-বিভ্রাট নয়। এ বার ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে গেল পরের পর বজ্রপাতে। সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে পূর্ব রেলের হাওড়া শাখায়। সেই বিভ্রাটের প্রভাব পড়ে শিয়ালদহ শাখাতেও। বজ্রপাতে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে হাওড়া শাখার বিভিন্ন প্রান্তে তো বটেই, ডানকুনি-শিয়ালদহ শাখাতেও দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন বন্ধ থাকে।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বালি হল্টের কাছে ওভারহেড তারের উপরে প্রথম বজ্রপাত হয়। এর ফলে ওই লাইনে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পরে ডানকুনির কাছে সিসিআর লিঙ্ক এবং কোন্নগর স্টেশনের কাছে ওভারহেড তার ও সিগন্যাল ব্যবস্থার উপরে বাজ পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় ফলে লোকাল ও দূরপাল্লার যাবতীয় ট্রেন। বালি হল্টের কাছে ওভারহেড তারে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ট্রেন বন্ধ হয়ে যায় ডানকুনি-শিয়ালদহ শাখায়। সিসিআর লিঙ্কে বিদ্যুৎ না-থাকায় হাওড়া শাখার কর্ড লাইনে এবং কোন্নগর স্টেশনে ওভারহেড তার, সিগন্যালে সমস্যা হওয়ায় হাওড়া শাখার মেন লাইনে ট্রেন বন্ধ থাকে।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই ট্রেন-বিভ্রাটে চরম ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। বিভিন্ন স্টেশনে ও মাঝপথে ট্রেনের মধ্যে আটকে পড়েন যাত্রীরা। নিভে যায় আলো, পাখা। আবার যাঁরা ট্রেন ধরতে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তাঁদের বসে থাকতে হয় দীর্ঘ ক্ষণ। কখন ট্রেন আসবে, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও ঘোষণাও হয়নি বলেও যাত্রীদের অভিযোগ। যেমন, বেলা ১টা নাগাদ বালিঘাট স্টেশনে পৌঁছে যাত্রীরা শুনলেন, তখনও আপ-এর অর্থাৎ ডানকুনির দিকের ট্রেনই যায়নি। ফলে ডাউন-এর অর্থাৎ শিয়ালদহের দিকের ট্রেন কখন আসবে, কেউ বলতে পারছেন না। অভিরূপ কর নামে এক যাত্রী বলেন, “প্ল্যাটফর্মে ঠিকমতো ঘোষণাও করা হচ্ছিল না। ট্রেনের কী অবস্থা, কোনও ভাবেই তা জানতে পারছিলাম না!”
বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ে হাওড়া স্টেশনেও। ট্রেন থাকলেও তা কখন কোথায় যাবে, বৈদ্যুতিন ডিসপ্লে বোর্ডে তা জানানো হয়নি। ফলে হয়রান হতে হয় যাত্রীদের। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়ের দরুন অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারছিলেন না। পরপর কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে দিয়ে তুলনায় কম ভিড়ের ট্রেনের অপেক্ষায় থাকতে হয় তাঁদের। |