সাত বার হেরেও থামতে নারাজ, ফের প্রার্থী আবুল
বাদ দেননি এক বারও। জয়ের মুখও দেখেননি এক বারও।
কখনও পঞ্চায়েত, কখনও পঞ্চায়েত সমিতি, কখনও আবার জেলা পরিষদএ রাজ্যে যত বার পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে প্রতি বারই দাঁড়িয়ে পড়েছেন কোনও না কোনও স্তরে। কিন্তু ফলে কোনও হেরফের হয়নি। বারবার সাত বার হেরেও অবশ্য দমে যেতে নারাজ কালনার আবুল হাসেম শেখ। অষ্টম পঞ্চায়েত নির্বাচনে আবার প্রার্থী তিনি। তাঁরও এ নিয়ে আট বার। এ বার কালনা ২ ব্লকের জেলা পরিষদ আসন থেকে কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়ন দাখিলের পরে তিনি বলছেন, “জিতলে ভাল। না হলে আবার নিজেকে বলব, ট্রাই এগেন!”
আবুল হাসেম শেখ।
নিজস্ব চিত্র।
ছিপছিপে চেহারা। এক মুখ দাড়ি, মাথায় লম্বা চুল। কালনা ২ ব্লকের আনুখাল পঞ্চায়েতের কদম্বা গ্রামে বাড়ি এই আবুল হাসেমের। তিনি জানান, সত্তরের দশকের মাঝামাঝি মাধ্যমিক পাশের পরে কালনা কলেজে ভর্তি হয়ে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা নুরুল ইসলামের ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। দলের নানা কাজে জড়িয়ে পড়ে কালনা, বর্ধমান, আসানসোল-সহ নানা এলাকা ঘুরে কাটতে থাকে দিন। এক সময়ে বাড়ির সঙ্গেও যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি জানান, দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় পাতা হয়নি সংসারও। এখন কালনার সিদ্ধেশ্বরী মোড়ে দলের এক কর্মীর বাড়িই তাঁর ঠিকানা।
১৯৭৮ সালে যে বার রাজ্যে প্রথম পঞ্চায়েত ভোট হল, আনুখালের একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী হন আবুল হাসেম। ১৯৮৩ সালে কদম্বা গ্রাম সংসদ থেকে পঞ্চায়েতের প্রার্থী হন। ১৯৮৮-তে আবার পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হন। কালনা ২ ব্লকের বাদলা, কল্যাণপুর, পিণ্ডিরা ও সাতগাছিয়া এই চার পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে রয়েছে জেলা পরিষদের একটি আসন। ১৯৯৩ থেকে এই আসনেই প্রার্থী হয়ে আসছেন তিনি। টানা চার বার এই আসনে দাঁড়িয়েও ফলাফলে কখনও বদল হয়নি। প্রতি বারই হেরেছেন সিপিএমের প্রার্থীদের কাছে।
বারবার হারলেও প্রতি বারই কেন প্রার্থী করা হয় আবুল হাসেমকে? কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর, আনুখাল পঞ্চায়েতের ওই এলাকায় অন্য প্রার্থী খুঁজে না পাওয়া এর পিছনে একটি বড় কারণ। এ বার জেলা পরিষদের আসনটিতে অন্য কাউকে প্রার্থী করার কথাও ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এ বারও শেষ মূহুর্তে প্রার্থী জোগাড় না হওয়ায় তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রকাশ্যে এ কথা মানতে নারাজ। দলের কালনা ২ ব্লক সভাপতি শাহানওয়াজউদ্দিন মণ্ডলের বক্তব্য, “নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও উনি কখনও দল ছাড়েননি। দলের নানা কর্মসূচিতেও সব সময় থাকেন। যে আসনে তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে, সেটি তাঁর দীর্ঘদিনের চেনা। তাই এ বারও তাঁকে প্রার্থী করা হল।”
আর বছর সত্তরের আবুল হাসেম বলছেন, “শরীরে আগের মতো জোর নেই। তবে দল যখন টিকিট দিয়েছে, লড়াই করব। বিনা যুদ্ধে কাউকে সামান্য জমিও ছাড়ব না।” যে বার পঞ্চায়েতে প্রার্থী হন, হেরেছিলেন মাত্র ২০ ভোটে। সেই আক্ষেপ এখনও যায়নি তাঁর। তবে হার নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে তিনি নারাজ। বলছেন, “গ্রামে গ্রামে ঘুরে হাতজোড় করে বলি, আমার কোনও চালচুলো নেই। আপনাদের জন্য কাজ করতে চাই। আমাকে সুযোগ দিন।” অষ্টম বারে আসবে সুযোগ, স্বপ্নে বিভোর বৃদ্ধ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.