খুনের জেরে বনধ, ভাঙচুর
মাত্র বারো ঘণ্টা আগের ঘোষণায় ডাকা হয়েছিল বনধ। সেই বনধের জেরে নাকাল হলেন আসানসোল মহকুমার বাসিন্দারা। প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ সরকারকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১২ ঘন্টার বনধ ডাকে সিপিএম। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই বনধ ঘোষণা হওয়ায় মহকুমার একটি বড় অংশের মানুষজন তা জানতে পারেননি। ফলে, সোমবার সকাল থেকেই নিত্যদিনের মতো কাজে বেরিয়ে বিপাকে পড়েন বাসিন্দারা। কারণ, মহকুমা জুড়ে কোথাও যানবাহন চলাচল করেনি। সকাল থেকেই সিপিএম সমর্থকেরা দলীয় পতাকা হাতে বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামেন। নানা জায়গায় রাস্তা জুড়ে পিকেটিং করা হয়। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কলকাতাগামী দু’টি বাস জি টি রোড ধরে যাওয়ার সময়ে আসানসোলের স্টেশন মোড়ের কাছে বাধা দেন বনধ সমর্থকেরা।
আক্রান্ত বাস। —নিজস্ব চিত্র।
এলোপাথাড়ি ইট ছুড়ে দু’টি বাসেরই কাচ ভাঙচুর করা হয়। একটি বাসের চালক অশোক সিংহ মাথায় চোট পান। ঘটনাস্থলে যায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। আহত চালককে উদ্ধার করে পুলিশ আসানসোল হাসপাতালে পাঠায়। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার আসানসোল ডিপোর ম্যানেজার পার্বতীচরণ ঘোষ জানান, তাঁদের দু’টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ দিন আসানসোল শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়ায় বনধ সমর্থক ও বিরোধীদের মিছিল। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছিল পুলিশি ব্যবস্থা। ফলে দু’পক্ষের অশান্তি এড়ানো গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাস ভাঙচুরের ঘটনায় আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় কর্মচারী ইউনিয়নের তরফে আসানসোল দক্ষিণ থানায় সিপিএমের জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায়-সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও পার্থবাবু বলেন, “আমাদের কোনও কর্মী বাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত নয়। আমিও ছিলাম না। অভিযোগ মিথ্যা।”

প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ সরকার
হত্যার প্রতিবাদে বনধ জামুড়িয়ায়।
দিনভর বনধের সমর্থনে ও বিপক্ষে
মিছিলে সরগরম আসানসোল।
এ দিন আসানসোল, বার্নপুর ও কুলটির নিয়ামতপুর এলাকায় অধিকাংশ দোকানপাট খোলেনি। বসেনি বাজার। রাস্তা সুনসান ছিল। যানবাহন চলেনি। এলাকার কোনও স্কুল এ দিন খোলা ছিল না। ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থাগুলির দফতরও বন্ধ ছিল। সকাল ১০টা নাগাদ আসানসোলের রবীন্দ্রভবন লাগোয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে বনধ সমর্থকেরা জড়ো হন। বন্ধের সমর্থনে পিকেট শুরু করতেই পুলিশ গিয়ে সরিয়ে দেয়। যদিও এ দিন ওই ব্যাঙ্ক খোলেনি। আসানসোল পুরসভা ও রাজ্য সরকারি দফতরগুলিতে অবশ্য একশো শতাংশ হাজিরা ছিল বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার সবচেয়ে বেশি নাকাল হন দূরদূরান্ত থেকে আসানসোলে আসা ট্রেনযাত্রীরা। স্টেশন থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য কোনও যাত্রীবাহী বাস না পেয়ে ট্যাক্সি ও অটোরিকশায় চেপে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। মওকা বুঝে অটো ও ট্যাক্সি চালকেরা এ দিন দ্বিগুণ ভাড়া হেঁকেছেন বলে অভিযোগ অনেকের। অনেকে রাস্তার পাশে বা স্টেশন চত্বরে সময় কাটাতে বাধ্য হন।

বন্ধ দোকান পাট আসানসোলে।
এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি পার্ট ওয়ানের পরীক্ষা ছিল। আসানসোল মহকুমার আটটি কলেজকে এই কারণে বন্ধের আওতার বাইরে রাখা হয়। কিন্তু যানবাহন না চলায় পরীক্ষার্থীরা সময়ে কলেজে পৌঁছতে নাকাল হন। যদিও আসানসোলের সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী দাবি করেন, পরীক্ষার্থীদের সময়ে কলেজে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে তাঁদের দলের কর্মীরা সাহায্য করেছেন। ‘সর্বাত্মক বনধ’ পালনের জন্য শহরবাসীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটকের অবশ্য দাবি, সিপিএমের লোকজন অনেক জায়গায় জোর করে বনধ পালন করতে বাধ্য করেছে বাসিন্দাদের।

ছবি: শৈলেন সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.