সক্রিয় জীবন সিংহেরা: রিপোর্ট
নিম্ন অসমে ফের সাজছে কেএলও
কেএলও চেয়ারম্যান জীবন সিংহ ওরফে তমির দাস পশ্চিমবঙ্গের সীমানা সংলগ্ন নিম্ন অসমের পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন বলে কেন্দ্র ও রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের অফিসারেরা খবর পেয়েছেন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, তাঁর দেহরক্ষী হিসাবে অন্তত পক্ষে প্রশিক্ষিত ১০ জন সশস্ত্র কেএলও জঙ্গিও রয়েছে। ওই ঘাঁটিগুলি থেকে পরিকল্পনা করে এ রাজ্য ছাড়াও অসমে নানা এলাকায় সম্প্রতি কেএলও জঙ্গিদের হামলা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। অসমের লাগোয়া কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, শামুকতলা, বারবিসা, ও কুমারগ্রাম এলাকা জুড়ে তোলাবাজি এবং অপহরণের চেষ্টা শুরু করেছে কেএলও। মালদহের মালখান সিংহের টাকা আদায়ের ঘটনা সামনে এসেছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, খুব সম্প্রতি অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলার অভয়াপুরী, চিরাং জেলার বিজনি, কোকরাঝাড়ের চক্রশিলা হিল্স এলাকায় কেএলও স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জীবন সিংহকে দেখা গিয়েছে। প্রতিটি এলাকায় দুর্গম পাহাড় ও ঘন জঙ্গল থাকায় পুলিশ বা সেনা বাহিনীর পক্ষে অভিযান চালানো সহজ হয় না। মার্চ মাসে কেএলও-র নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা ওই এলাকা থেকেই করা হয়। এই খবর পেতেই এপ্রিল মাসে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারেরা অসমে যান। আগে ধরা পড়া কেএলও লিঙ্কম্যানদের জেরাও করেন। পরে জীবন সিংহের বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে অসম সরকারের সঙ্গে কথা বলে এই ব্যাপারে যৌথ টাক্স ফোর্স গঠনের চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে।
রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা বলেন, “বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জীবন সিংহের অসমে থাকার খবর এসেছে। কোনও জায়গায় কেএলও চেয়ারম্যান বেশি দিন থাকছেন না। প্রতি সপ্তাহেই প্রায় তিনি এলাকা পরির্তন করছেন। সঙ্গে সংগঠনের সদস্যরাও আছেন।”
২০০৯ সালে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর জীবন সিংহ নেপালে আত্মগোপন করে ছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, নেপালের ইলম, ঝাপা, বিরাটনগর, ধূলবাড়ি এলাকায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভাড়া বাড়ি, ফ্ল্যাট ও হোটেলে জীবন সিংহের স্ত্রী ভারতী দাস এবং দুই মেয়ে আত্মগোপন করে আছেন। ভাইস চেয়ারম্যান টম অধিকারীও বর্তমানে তাঁদের সঙ্গে নেপালে আছেন। কিছু দিন আগেই কেএলও চিফ মেয়েদের নিয়ে নেপাল থেকে বিহারে ঢুকেছিলেন। সেখান থেকে শিলিগুড়ি করিডর দিয়ে তিনি অসমে যান। মেয়েদের নেপালে স্ত্রী’র কাছে পাঠিয়ে দেন। তার পরে নিম্ন অসম থেকেই নতুন করে কেএলও গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোকরাঝাড় জেলার চক্রশিলা হিলস সংলগ্ন মৌরিয়া গ্রাম থেকে ২০০৯ সালে জীবন সিংহের বোন সুমিত্রা, জামাই ধনঞ্জয় বর্মনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁদের সঙ্গে দুই বছরের ছেলেও ছিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র। তার পরে দুই বছর কেএলও জঙ্গিরা নেপালে আশ্রয় নেয়। গত ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বধীন তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর জেল থেকে জামিনে মুক্ত জঙ্গিরা কামতাপুর ডেমোক্রেটিক লিবারেশন অর্গানাইজেশন তৈরি করেন। জিটিএ-র মত প্রস্তাবিত এলাকার স্বায়ত্তশাসন, আত্মসমর্পণকারীদের পুনর্বাসন ছাড়াও জীবন সিংহের আত্মসমর্পণ নিয়ে কথা শুরু হয়। দু’বছর নানা স্তরে আলোচনা চলাকালীন টম অধিকারির নেতৃত্বে এক ঝাঁক প্রাক্তন জঙ্গি আত্মগোপন করেন। তার পরেই ফের কামতাপুর রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা করে নতুন করে আন্দোলনে নামে কেএলও। জীবন সিংহকে মাথায় রেখেই ঘোষণা করা হয় নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির। দ্বিতীয়স্থানে উঠে আসে টম অধিকারির নাম।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.