বর্ষা আসতেই ফের দুশ্চিন্তায় কলাবাগান এলাকার আরতি বর্মন, কল্যাণী রায়রা। মহানন্দা এবং বালাসন নদীর মাঝখানে দ্বীপের মতো জেগে থাকা ওই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দার বসবাস। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ওই চর এলাকা। একদিকে মহানন্দা নদী অন্য দিকে বালাসন। শহরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মহানন্দা পেরিয়েই বাসিন্দাদের আসতে হয়। সুখা মরসুমে নদীতে জল কম থাকায় সে সময় বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। বর্ষায় নদীর স্রোতে সেতু থাকে না। তখন একমাত্র উপায় নৌকা। সেতুর দাবিতে গত বর্ষায় নৌকা উল্টে যাওয়ার ঘটনায় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। সে সময় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব গিয়ে সমস্যা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে আবরোধ ওঠে। অথচ ফের বর্ষা এসে গেলে সে ব্যাপারে কেউ সদর্থক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেছেন, “এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধের কথা জানি। এলাকা দেখেও এসেছি। এই এলাকায় সেতু তৈরি করতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লাগবে। ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ এই মূহূর্তে হাতে নেই।” তবে সমস্যা সমাধান কী ভাবে করা যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা রয়েছে বলেই জানান গৌতমবাবু। |
সেতু না থাকায় বর্ষা নৌকাতেই পারাপার করতে হয় তাঁদের। দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবে চলছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ গত বর্ষায় এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি। শিলিগুড়ি শহরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নৌকাঘাট এলাকা থেকে মহানন্দা পেরিয়ে ও পাড়ের কলাবাগান-সহ অন্য এলাকায় যেতে হয়। দৈনিক প্রায় ১৫০০ লোক কাজের জন্য যাতায়াত করে থাকেন নৌকা করেই। দুটি নৌকায় তাই ভিড় করে লোকজন পারাপার করেন। বর্ষায় ভরা নদীতে এ ভাবে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। এলাকার বাসিন্দা প্রমীলা বর্মন বলেন, “নৌকায় যাতায়াত করতে ভয় লাগে। কিন্তু আমাদের অন্য কোনও উপায় নেই।” অসুবিধায় পড়তে হয় ছাত্রছাত্রীদের। কলাবাগান, অনিলনগর, বিটি রনদীপ কলোনির মতো এলাকার ছাত্রছাত্রীদের একাংশ শক্তিগড় স্কুলে পড়াশোনা করে। বর্ষায় যাতায়াতের সমস্যায় অধিকাংশ দিনই তারা স্কুলে যেতে পারেন না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষায় যাতায়াতে ভরসা ২টি নৌকা। দু’ টাকা দিয়ে নদী পার হতে হয়। নদীর ঘাটের দায়িত্বে থাকা তপন সাহা বলেছেন, “নিজেদের উদ্যোগে সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। তা ভেঙে গিয়েছে। এখন ভরসা বলতে নৌকা। গত বার মন্ত্রী এসে দেখে গিয়েছিলেন। কোনও কাজ তো হল না।” আরতি দেবীর কথায়, মাত্র দুটো নৌকায় সমস্ত লোককে যাতায়াত করতে হয়। অনেক অপেক্ষা করতে হয়। নৌকা চালিয়েই সংসার চালান দুই মাঝি নিলি বর্মন এবং সুবল বর্মন। তাঁরা জানান, বেশি লোক নিয়ে যাতায়াতে ঝুঁকি থাকে। |