পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিবেশী দেশ ভুটানের সাহায্য চেয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে যোগাযোগের জন্য ভুটান সরকারের কাছে তাদের সড়ক পথ ব্যবহারের আর্জি জানায় জেলা প্রশাসন। ভুটানের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ভাবে সম্মতিও মিলেছে বলে জানানো হয়েছে।
ভুটান সংলগ্ন জলপাইগুড়ি জেলার জঁয়গা, কুমারগ্রাম, বানারহাটে কিছু নদী বেষ্টিত এলাকা রয়েছে যেগুলি ফি বছর বর্ষার সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রায়ডাক, সঙ্কেশ, পানা, বাসরা নদী ফুলে ফেঁপে উঠে লুকসান, জিতি, চামুর্চি, চুয়াপাড়া, মেচপাড়ার মতো ২০ গ্রামে যোগাযোগের সড়ক প্লাবিত করে দেয়। জেলা সদর বা মহকুমার থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ভুটান থেকে ওই এলাকাগুলিতে সড়ক পথে যোগোযাগ করা সম্ভব হয় বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। সে কারণেই বর্ষার মধ্যে চলতি বছরে পঞ্চায়েত ভোটের সময় এলাকাগুলিতে যাতায়াতের জন্য ভুটান হয়ে ঘুরপথে বিকল্প যোগাযোগ রাস্তা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে ভুটান সরকারের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ইতিমধ্যেই এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে। জেলার তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারকেও জানানো হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলা শাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বর্ষার সময়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে ভুটান লাগোয়া জেলার বেশ কিছু এলাকায় যাতায়াতে সমস্যা তৈরি হতে পারে। ভুটান হয়ে ঘুরপথে ওই সব এলাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে ভোট কর্মীদের ওই এলাকায় পৌঁছে দিতে ভুটানের রাস্তা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, লোকসভা থেকে পঞ্চায়েত কোনও ভোটই এর আগে ভরা বর্ষার মধ্যে পড়ে নি। তার ফলে আগে কোনও সময়েই জেলায় ভোট গ্রহণের জন্য ভুটান পথ ব্যবহার করার প্রয়োজনও হয় নি। ৯ জুলাই জলপাইগুড়ি জেলায় পঞ্চায়েত ভোট হবে। জুলাইয়ে ভরা বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা করাই জেলা প্রশাসনের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। প্রশসান সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা প্রবণ এলাকাগুলিতে একাধিক ভোট কেন্দ্র চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। বন্যার কারণে কোনও কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ সম্ভব না হলে শেষ মুহূর্তে সেই কেন্দ্র যাতে বদলে দেওয়া যায় তার জন্য একাধিক কেন্দ্রকে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টিতে যাতে ভোট গ্রহণের সরঞ্জামের ক্ষতি না হয়, তার জন্য কিছু কেন্দ্রে প্রথা ভেঙে ভোট গ্রহণের দু’দিন আগে থেকেই ভোট কর্মী এবং সরঞ্জাম পাঠানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সবটাই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে অনুমোদন নিয়েই করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। |