|
|
|
|
নেতাইয়ে প্রার্থী দিল না সিপিএম
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
নেতাই-কাঁটার ‘ক্ষত’ এখনও সারিয়ে উঠতে পারল না সিপিএম।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লকের ৭ নম্বর লালগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী তালিকা দেখে অন্তত এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কৌশলগত কারণে ওই পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে ৩, ৬ ও ৮ নম্বর আসনে প্রার্থী দেয়নি সিপিএম। নেতাই গ্রামটির একটি পাড়া ২ নম্বর সয়েরসাই আসনে পড়লেও বাকি পুরোটাই ৩ নম্বর আসনের মধ্যে পড়ে। যেখানে রয়েছে সিপিএম কর্মী রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারির সকালে যেখান থেকে গুলি চালনার ঘটনায় ৪ মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসী নিহত হয়েছিলেন।
নেতাই-ক্ষতে প্রলেপ পড়েনি বলেই কী প্রার্থী দেওয়া হয়নি?
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইছেন না সিপিএম নেতারা, কেউবা ২ নম্বর আসনে নেতাই পাড়া রয়েছে দেখিয়ে প্রসঙ্গ ঘোরাতে চাইছেন। স্থানীয় এক সিপিএম কর্মীর কথায়, “অস্বস্তি তো রয়েছেই। তার উপর শাসক দলের মোটর বাইক বাহিনী গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়িয়ে আমাদের প্রার্থী ও কর্মীদের সন্ত্রস্ত করে তুলছে। তাই নেতাইয়ের ওই আসনটির মতো মোট তিনটি আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি। স্থানীয় স্তরে কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ডীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছে।”
গত বিধানসভা ভোটে নেতাই-কাণ্ডকে হাতিয়ার করেছিল তৃণমূল। এ বার নেতাই গ্রামের আসনে সিপিএম প্রার্থী না-দেওয়ার প্রসঙ্গ ঘিরে পুরনো স্মৃতি উস্কে দেওয়ার সুযোগ ছাড়তে চাইছে না শাসকদল। তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি বনবিহারী রায় বলেন, “আড়াই বছর আগের রক্তাক্ত দিনটির কথা মানুষ ভুলে যাননি। এলাকার দেওয়ালে এখনও গুলির দাগ রয়েছে। এলাকায় সিপিএমের কোনও জনসমর্থনও নেই। সম্ভবত সেই কারণেই স্থানীয় বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ৩ নম্বর আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে সিপিএম।”
তৃণমূলের এই ইঙ্গিতকে গুরুত্ব না দিয়েই জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল তো এখন সিপিএমেরই দোসর। সিপিএমের তবু লজ্জা আছে বলে নেতাই গ্রামের আসনটিতে প্রার্থী দেয়নি। বরং গত আড়াই বছরে কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করতে পারেনি তৃণমূলের রাজ্য সরকার। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যালটে নেতাইয়ের মানুষ জবাব দেবেন।”
লালগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে সাতটি আসনে (১, ৪, ৫, ৭, ১০, ১১ ও ১২) এ বার তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে সিপিএম প্রার্থীর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এ ছাড়া নেতাই গ্রামের ৩ নম্বর আসনে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে সরাসরি লড়াই হবে। ৬ ও ৮ নম্বর আসনে ঝাড়খণ্ডী প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীর সরাসরি লড়াই হবে। ২ ও ৯ নম্বর আসনে তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে।
অবশ্য, আজ সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহার-পর্ব শেষ হলে চিত্র কিছুটা বদলাতে পারে। |
|
|
|
|
|