অন্য অঙ্ক ডেবরায়
মনোনয়ন তুলল তৃণমূল, বিনাযুদ্ধে জয় সিপিএমের
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন সিপিএম প্রার্থী! তা-ও আবার তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নেওয়ায়!
প্রথম পর্বের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যখন জেলায় জেলায় প্রার্থী পেতে হয়রান বিরোধীরা, লড়াই ছাড়াই বহু আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জয় নিশ্চিত করে ফেলেছেন, তখন এমনই চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে ডেবরার গোলগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে। এই আসনে দু’জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিলেনতৃণমূলের সাহেব আলি আর সিপিএমের শঙ্কর মান্না। শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন সাহেব আলি। তারপর থেকে তিনি এলাকাতেও নেই। এ নিয়ে তৃণমূল-সিপিএম চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে-র অভিযোগ, “সিপিএমের লোকজন আমাদের প্রার্থীকে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়েছে। সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না। বাড়িতে নেই। মোবাইল বন্ধ।” জবাবে সিপিএমের ডেবরা জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “আমরা জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাব? আমাদের সেই ক্ষমতা আছে না কি? তৃণমূলের অভিযোগ কেউ বিশ্বাস করবে না।”
ডেবরার এই গ্রাম পঞ্চায়েতে গত নির্বাচনে জিতেছিল সিপিএম। এলাকায় তাদের প্রভাবও ছিল যথেষ্ট। তবে রাজ্যে পালাবাদলের পর ক্রমেই জমি হারায় সিপিএম। এলাকায় ‘দাপট’ বাড়ে নতুন শাসকদলের। তবে প্রথম থেকেই এই ব্লকে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূল। তার প্রভাব পড়েছে মনোনয়নেও। বহু আসনেই তৃণমূলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। হিসেব বলছে, ডেবরার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২১৪টি আসনের জন্য তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে ৩৭৬টি। আজ, সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। শনিবার (রবিবার প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল) পর্যন্ত বিভিন্ন দল মিলিয়ে ৫টি মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে।
তৃণমূলের দলীয় সূত্রের খবর, সাহেব আলির মনোনয়ন প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে দলীয় কোন্দল কাজ করে থাকতে পারে। গোলগ্রাম এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা নির্মল শাসমল ও দলের অঞ্চল সভাপতি শ্যামল মুখোপাধ্যায়ের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। নির্মলবাবু আগে সিপিএমে ছিলেন। দলবদলের পর তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির সঙ্গে। অন্য দিকে, শ্যামলবাবু তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রতন দে-র ঘনিষ্ঠ। যিনি প্রার্থী হয়েছিলেন, সেই সাহেব আলিও শ্যামল-অনুগামী বলে পরিচিত। শোনা যাচ্ছে, নির্মল-গোষ্ঠীই সাহেবকে দিয়ে মনোনয়ন তুলিয়েছে। নির্মলবাবুর কথায়, “কানাঘুঁষো শুনছিলাম সাহেব মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন। অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কথা বলব।” অঞ্চল সভাপতি শ্যামলবাবু অবশ্য সিপিএমকেই দায়ী করছেন। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএমের সন্ত্রাসে সাহেব মনোনয়ন তুলেছেন। ভয়ে এলাকাও ছেড়েছেন।”
এ দিকে, গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বেনাচাপড়ার পর কেশপুরেও পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে আপাতত ভোটের লড়াই হচ্ছে না। তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়াতেই এই পরিস্থিতি। কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির জগন্নাথপুর আসনে একমাত্র মনোনয়নটি জমা দিয়েছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তপন চক্রবর্তী। তিনি আবার জেলা পরিষদের আসনেও মনোনয়ন জমা দেন। শুক্রবার স্ক্রুটিনি হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এক জন একাধিক আসনে ভোটে দাঁড়াতে পারেন না। প্রথম যে আসনে মনোনয়ন দাখিল হয়েছে, শুধু সেটিই গ্রাহ্য হয়। বাকিগুলি বাতিল হয়ে যায়। সেই মতো তপনবাবুর পঞ্চায়েত সমিতির মনোনয়নটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। ফলে, এই আসন এখন প্রার্থী-শূন্য। নিয়ম মতো পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ছ’মাসের মধ্যে এখানে ভোট হবে।
তপনবাবু আবার জেলা পরিষদ আসনেও দলীয় প্রতীক পাননি। দলের নির্দেশেই তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়েছে। তপনবাবুর কথায়, “আমি দলের কর্মী। দলীয় নির্দেশ মানতে বাধ্য।” তৃণমূলের মধ্যেই অবশ্য গুঞ্জন, শুধু পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন দিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত ছিল তপনবাবুর। কার্যত তাঁর দু’কূলই গেল!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.