ঋণে সুদ কমলে তবেই প্রাণ ফিরবে বাজারে
য়েক সপ্তাহ আগে বিনিয়োগের বাজারে যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল, তা এখন অনেকটাই স্তিমিত। কুড়ি হাজারের উপরে বেশি দিন থাকতে পারেনি সেনসেক্স। শুক্রবার নেমে এসেছে ১৯,৪২৯ অঙ্কে। সুদ কমার আশা এখন আর ততটা জোরালো নয়। অন্য দিকে ডলার ছাড়িয়েছে ৫৭ টাকা। ফলে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে আমদানি-নির্ভর শিল্পে। এখন আরও বেশি টাকা গুনতে হবে তেল কয়লা-সহ বেশ কিছু পণ্য আমদানির জন্য। বেড়ে উঠবে সরকারের আমদানি বিল। আরও বড় হবে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতে লেনদেনে ঘাটতি।
২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসার তথ্য এখনও ভাবাচ্ছে বাজারকে। সব মিলিয়ে ভাল লাগার ভাব আর নেই। ফলে একটু একটু করে সূচক নেমেই চলেছে। বড় কোনও আশার আলো এখনই দেখা যাচ্ছে না। সবাই বসে আছেন ১৭ জুন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী করে, তা দেখার জন্য। বাজার শক্তি পেতে পারে আর এক দফা সুদ কমানো হলে। এ ছাড়া বাজারকে চাঙ্গা করতে পারে এমন কোনও টনিক চোখে পড়ছে না।
শুক্রবার অবশ্য ইউরোপীয় তথা মার্কিন বাজার বন্ধ হয়েছে বেশ ভাল জায়গায়। সোমবার এশীয় বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়ে কি না, তাই এখন দেখার। মার্কিন অর্থনীতিতে উন্নতি দেখা দেওয়ায় বেশ ফুলেফেঁপে উঠেছে ন্যাসডাক এবং ডাও জোন্স সূচক। এরই প্রভাবে চড়তে শুরু করেছে ডলারের দামও। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, চলতি আর্থিক বছরে কিছুটা অগ্রগতি হতে পারে ভারতীয় অর্থনীতির। জাতীয় উৎপাদন বাড়তে পারে ৬ শতাংশ হারে। এর অনেকটাই নির্ভর করবে ভাল বর্ষা এবং শিল্প ও গৃহঋণের উপর সুদ কমে কি না, তার উপর।
ছোট করে হলেও নতুন ইস্যুর বাজারে স্পন্দন এনেছে ‘জাস্ট ডায়াল’ পাবলিক ইস্যু। গত বুধবার বাজারে নথিবদ্ধ হয় এই শেয়ার। ৫৩০ টাকায় ইস্যু করা জাস্ট ডায়াল শেয়ার প্রথম দিনেই হাতবদল হয় ৫৯০ টাকায়। অর্থাৎ ইস্যুর দামের তুলনায় ১১.৩২% বেশি। এই বাজারে মন্দ নয়।
দিন কয়েক আগে অনেকেরই ধারণা হয়েছিল, সোনার দাম বেশ কিছুটা কমতে পারে। এই কথা মাথায় রেখে সোনা কেনা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছিলেন অনেকেই। বাস্তবে দেখা গেল উল্টো। গত কয়েক দিনে একটু একটু করে খানিকটা উঠেছে সোনার দাম। কারণ দুটো। এক: ডলারের দাম বৃদ্ধি। দুই: সোনা আমদানির ব্যাপারে সরকার তথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কড়া নির্দেশ। বিশ্ব বাজারে দাম কমলেও ভারতে যদি সোনা আমদানি কমে, তবে দর বাড়বে, তা খুবই স্বাভাবিক। ভারতে সোনার দাম যদি বিশ্ব বাজারের তুলনায় খানিকটা বেশি হয়, তবে তা অতীতের মতো চোরাপথে সোনা আমদানিতে মদত জোগাবে।
বাজারের অনিশ্চয়তা বেশ দুর্বল করে রেখেছে ইক্যুইটি-নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ডের জগৎকে। বেশ কিছু দিন তেজী থাকার পরে হঠাৎই দুর্বলতা দেখা দিয়েছে ঋণ-নির্ভর মিউচুয়াল প্রকল্পগুলিতেও। সুদ কমার সম্ভাবনা কিছুটা ক্ষীণ হওয়া এবং ডেট ফান্ড থেকে বিদেশি লগ্নিকারীদের পুঁজি প্রত্যাহার করার কারণে সম্প্রতি ন্যাভ কমেছে ডেট ফান্ডগুলির। ফলে সাধারণ লগ্নিকারীরা এখন একটু চিন্তায়। বুঝে উঠতে পারছেন না, ঠিক কোথায় টাকা রাখলে সুরক্ষার সঙ্গে মোটামুটি ভাল আয় পাওয়া যাবে।
ইক্যুইটি, মিউচুয়াল ফান্ড এবং সোনা সর্ব ক্ষেত্রেই এখন অনিশ্চয়তা। ভরসা শুধু সনাতন ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘর। সুদের হার তেমন আকর্ষণীয় না-হলেও সুরক্ষার দিক থেকে উত্তম। মাঝারি থেকে দীর্ঘ মেয়াদে স্টেট ব্যাঙ্ক এখন সুদ দিচ্ছে ৮.৭৫ শতাংশ। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সুদের হার ৯ শতাংশ। কোনও কোনও ব্যাঙ্ক অবশ্য সুদ দিচ্ছে আর একটু বেশি হারে। এই সুদ করযোগ্য। অর্থাৎ সমস্যা বেশি করদাতাদের। সর্বোচ্চ হারে যাঁদের কর দিতে হয়, তাঁরা বাজার থেকে অথবা আরও ৬ মাস অপেক্ষা করে নতুন বন্ড ইস্যু বাজারে এলে সেই করমুক্ত বন্ড কেনার কথা ভাবতে পারেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.