বামফ্রন্টের ইস্তাহার
সংখ্যালঘুদের জন্য তৃণমূল কিছু করেনি
যে সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, পঞ্চায়েতে সেই ভোট ফিরে পেতে মরিয়া বামফ্রন্ট। তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত দু’ বছর সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার তেমন কোনও কাজ করেনি। শুধু তা-ই নয়, সংখ্যালঘুদের জন্য বাম আমলে যে সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা ছিল, সেগুলিও কার্যত শিকেয় উঠেছে। সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের আমলে সংখ্যালঘু দফতরের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর এখন সংখ্যালঘু দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন মমতা নিজে। স্বাভাবিক ভাবেই বামেদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য মমতা।
হাওড়া লোকসভার সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটের একাংশ পুনরায় সিপিএমের দিকে ফিরেছে বলে আলিমুদ্দিন মনে করছে। বস্তুত, রাজ্যের ২৬% সংখ্যালঘু মানুষ যে কেবল মালদহ, মুর্শিদাবাদ বা উত্তর দিনাজপুরের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলার গ্রামীণ ভোট নিয়ন্ত্রণ করেন তা-ই নয়, দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম, বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলার গ্রামীণ ভোটের অনেকাংশও তাঁদের প্রভাবাধীন। সে কথা মাথায় রেখেই বামফ্রন্টের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ইস্তাহারে বলা হয়েছে, ‘সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ ও সাইকেল বিতরণ প্রায় বন্ধ। দশ হাজার মাদ্রাসা এখন গল্প কাহিনী। চালু মাদ্রাসাগুলির শিক্ষকদের প্যানেল থাকা সত্ত্বেও শূন্য পদে নিয়োগ বন্ধ।’ অর্থাৎ শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা মুসলিমদের জন্য তৃণমূল সরকার কার্যত উদাসীন বলে বামেদের অভিযোগ। শনিবার বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এই ইস্তাহার প্রকাশ করেন।
কেবল শিক্ষা নয়, তৃণমূল সরকার সংখ্যালঘুদের চাকরির জন্যও বিশেষ কিছু করেনি বলে ইস্তাহারে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘বামফ্রন্টের আমলে ওবিসি তালিকাভুক্ত সংখ্যালঘুদের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণ এখন কার্যত শিকেয় তুলে রাখা হয়েছে।’ মমতা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রাজ্যের ৩৫ হাজার ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেছিলেন। খসড়ায় অভিযোগ করা হয়েছে, ‘সরকার ঘোষিত চটকদারি ইমাম ভাতা কেউ নেননি, কেউ পাননি, যাঁরা পাচ্ছিলেন তাঁরাও আর পাচ্ছেন না।’
বুদ্ধবাবু থেকে শুরু করে অন্যান্য বাম নেতা সকলেরই অভিযোগ, রাজ্য শিল্প ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। বামফ্রন্টের পঞ্চায়েত-ইস্তাহারেও সে কথা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সাফল্যের খতিয়ানে সিঙ্গুরের নাম উল্লেখ করতে সরকার লজ্জা পাচ্ছে। নয়াচর এখন নদীর চরের নতুন শ্মশানের নাম। জিন্দল-সহ সমস্ত প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্প এখন বিশবাঁও জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে।’
ইস্তাহারের আরও বক্তব্য, রাজ্যে ইনফোসিস-সহ কোনও তথ্য-প্রযুক্তি শিল্প আসছে না, স্বপ্নের হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস নিলামে উঠছে এবং প্রথম হলদিয়া বন্দর তৃণমূলের দৌরাত্ম্যে লোকসানের মুখ দেখছে। সারদা-কাণ্ডে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া, দু’ টাকা কিলো দরে সব পরিবারকে মাসে ৩৫ কেজি করে চাল দেওয়া, নারীর মর্যাদা রক্ষা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও ইস্তাহারে তোলা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.