|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
আমি একজন স্বভাববিজ্ঞানী। ছোটবেলা হইতেই বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করিয়া থাকি। জগদীশচন্দ্র বসুর থিসিস যেমন মার্কনি সাহেবের চর চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছিল, তেমনি, আমার থিসিস চুরি হইতেছে। লালবাজারে জানাইয়াও ফল হইতেছে না। এই চুরির ফলে ভারতবর্ষ বার বার নোবেল পুরস্কার হইতে বঞ্চিত হইতেছে। কোনও গবেষণাই শেষ করিতে পারিতেছি না, তাহার আগেই চুরি হইতেছে। আপনাদের নিকট অনুরোধ, সংবাদটি বেতার মারফত প্রচার করিবেন। ভবদীয় গোলক কৃষ্ণ চক্রবর্তী (বৈজ্ঞানিক), কপি টু শ্রীযুক্ত বাবু জ্যোতি বসু, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, মাননীয় শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী, প্রধানমন্ত্রী, ভারত সরকার।’
চিঠিটা দেখলাম আমাকে মার্ক করা আছে। আমি তখন আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্রের বিজ্ঞান বিভাগটা দেখতাম। প্রথম লাইনটা দেখেই আমার ঊর্ধ্বতন অফিসার আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। ঠিকানা ছিলই, দেখা করতে অনুরোধ করলাম।
গোলকবাবু এলেন। কেপলার, ভিঞ্চি বা আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মতোই দাড়ি। ধুতি এবং খদ্দরের পাঞ্জাবি পরা। জিজ্ঞাসা করলাম, কী নিয়ে আপনি মূলত গবেষণা করেন? বললেন, এনার্জি। বলি, একটু বিস্তারিত বলবেন? উনি বললেন: জোয়ার-ভাটা চাঁদের টানে/ এ কথাটা সবাই জানে/ যে বলেছে সে একটা লায়ার/ চাঁদের যদি
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
টানই হত/ পৃথিবীর মেঘ চাঁদেই যেত/ কিন্তু জেনো চাঁদের আকাশ ক্লিয়ার।
আপনি কবিতায় থিসিস লেখেন নাকি?
হ্যাঁ, লিখি তো। শুভঙ্করও তো কবিতায় থিসিস লিখেছেন। খনাও।
একটু থেমে গোলক বললেন, আমার যুক্তিটা বুঝেছেন তো? চাঁদের টান যদি সমুদ্রের জলের ওপর পড়ে, তার আগেই তো মেঘের উপর পড়বে। মেঘ তো উঁচুতে। চাঁদ তো তা হলে আগেই মেঘ টেনে নিত...।
আর কী থিসিস আছে?
সূত্র: পৃথিবীর আকর্ষণ ডাঙায় বেশি, জলে কম। উদাহরণ: এক খণ্ড কাঠ ডাঙায় থাকলে, হাত থেকে পড়ে গেলে মাটিতে পড়ে, কিন্তু জলে ভাসে। জলের তলায় তো পৃথিবীর অংশ আছে। পৃথিবী টেনে নিতে পারে না।
জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কার আন্ডারে গবেষণা করেন ডক্টর চক্রবর্তী?
উনি বললেন, ডক্টরেট ডিগ্রি আমার নেই। নিউটনেরও ছিল না। এডিসনেরও ছিল না। আমার গাইড কে সি পালেরও নেই।
কে সি পাল? মানে কার্তিক চন্দ্র পাল?
উনি মাথা নাড়েন। বলেন, তবে আমি একলব্যের মতো।
কার্তিক চন্দ্র পালকে আমি চিনতাম। রাস্তার দেয়ালে-দেয়ালে লিখে রাখতেন ‘পৃথিবী ঘুরিতেছে না, সূর্যই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করিয়া ঘুরিতেছে।’ পরে, কলকাতা বইমেলায় ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। মেলার মাঠে বই সাজিয়ে বসেছিলেন। বই মানে ওঁর থিসিস। পাতলা বই, বইয়ের মলাটে ব্রুনো, গ্যালিলিয়ো, কোপার্নিকাস, টলেমি এবং কে সি পালের ছবি। তলায় লেখা: আবিষ্কারক, লেখক, প্রকাশক ও প্রচারক কার্তিক চন্দ্র পাল। ২২ নং গণেশ মাঝি লেন, হাওড়া-১। পরের পাতায় ভূমিকা। ‘...বহু পুঁথি মুখস্থ করা, ডিগ্রিধারী পণ্ডিত আমার এই জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন চিন্তাধারার কথা শুনে সবজান্তার হাসি হেসে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে চলে যান। অনেকে গালাগালি দেন। বিজ্ঞানের কোনও সিদ্ধান্তই অমোঘ নহে। কোপার্নিকাসের বই নিষিদ্ধ হয়েছিল, ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, গ্যালিলিওকে বন্দিজীবন যাপন করতে হয়েছে। আজ আমি তাঁদের বিরোধিতা করছি, আইনস্টাইন যেমন নিউটনের বিরোধিতা করেছেন। এটা করতে গিয়ে অপমানিত হচ্ছি, তবু আমি দমব না।’ এর পরের ৩৬ পাতায় নানা চিত্র, নানা অঙ্ক।
গোলকবাবুকে বলি, আপনার এনার্জি সংক্রান্ত গবেষণায় মহাকাশ তো আসছেই। কী ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন?
বাঁশ।
বাঁশ? ব্যাম্বুু?
আজ্ঞে হ্যা।ঁ এক-একটা বাঁশকে এক-একটা নক্ষত্রের দিকে তাক করে বেঁধে রাখি, তার পর বাঁশে চোখ রেখে নক্ষত্রের চ্যুতি পরিমাপ করি। যে ভাবে বন্দুক দিয়ে টিপ করতে হয়। এই সামান্য যন্ত্রেই আমি মহাবিশ্বের নতুন কনসেপ্ট তৈরি করেছি। গোলকিয়ান মহাবিশ্ব। আইনস্টাইনের মহাবিশ্বের চেয়ে গোলকিয়ান মহাবিশ্ব অনেক বড়। মহাশূন্যের বক্রতা থেকেই গোলকিয়ান মহাবিশ্বের উদ্গার। এই জটিল থিসিস আন্তর্জাতিক চক্রান্তে চুরি হয়ে গেছে। ডায়েরির পাতা থেকে ছিঁড়ে নিয়েছে।
আমি বলি, হয়তো বাড়ির কেউ ওগুলো প্রলাপ বলে ছিঁড়ে নিয়েছে দেখুন গে...।
গোলকিয়ান বিশ্বের আবিষ্কর্তা গোলক চক্রবর্তী বললেন, আপনিও বলছেন প্রলাপ! এটা যদি প্রলাপ হয়, টেলিভিশনের তান্ত্রিক বাবা, পাথর বাবা,বশীকরণ বাবাদের তো দিব্যি চালিয়ে দিতে দিচ্ছেন। প্রলাপ বলছেন না তো!
আর পৃথিবীর প্রথম টেস্ট টিউব শিশুর জনক সুভাষ বাবুর থিয়োরিকে প্রলাপ বলেছিলেন যাঁরা, ওঁরা তো আজও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, নেতাগিরিও করছেন। কিছু তো বলছেন না ওঁদের?
অবাক হয়ে তাকাই ওঁর দিকে। |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• জামাইষষ্ঠীতে গুচ্ছ খরচা করে ও গতর পিষে বানালেন তেত্রিশ পদ! জামাই খ্যাঁটন-কালীন
সারা ক্ষণ বলল, আপনার মেয়ে কত্ত অপদার্থ! আর তার আগের বউ ছিল কী অপূর্ব নিপুণ! |
|
|
• আশ্চর্য প্রদীপ কুড়িয়ে পেলেন। দুরুদুরু বুকে ঘষতেই
তক্ষুনি
জিন বেরোল, কিন্তু গোমড়া মুখ। ঢুকে যাওয়া
চোখ।
ধুঁকছে।
বলল, ‘সরি, ভাইরাল-এ ভুগছি।
হুকুম
কুছু ভি তামিল করতে পারব না।’ |
• মারা গেলেন। ভাবলেন, ওপর থেকে আত্মীয়দের হাপুস
কান্না দেখে ছলছলে সুখ পাবেন। কিন্তু শবযাত্রাটা একটা
পলিটিকাল পার্টি তুরন্ত হাইজ্যাক করে নিল,
আত্মীয়দের শ্মশানে ঢুকতেই দিল না। |
|
|
|
|
• চরম বোর্ড? ঘরে-বাইরে বউ ও বসের অনন্ত কুমিরডাঙায় লবেজান? বিশ্বনিখিল আলুনি লাগছে? মাউন্ট এভারেস্ট ঘুরে আসুন না! নোরগে-হিলারির অসামান্য কীর্তির ষাট বছর পূর্তিতে বিশ্ব-টপ টপকানোর হিড়িক পড়েছে। যে যখন যেমন পারছেন, হাঁচড়ে-পাঁচড়ে ২৯,০২৯ ফুটে উঠে ঠাস করে একটা পতাকা পুঁতে ইয়েতি-পোশাকে ‘ভি’ সাইন। ভারতীয়রা সব্বার আগে, থ্রি জি বেগে উঠছেন। উঠলে হবে? খরচা আছে। মাখাপিছু লাখ কুড়ি তো বটেই, ভাঙতে হয় নিজ ট্যাঁক-ব্যাংক-ফিক্সড ডিপোজিট। তা-ও সই। বছর অর্ধেক গড়ায়নি, এরই মধ্যে বিশ্বের ছ’শো জন অ্যাটেম্প্ট নিয়েছেন, শ’খানেকই ভারতীয়। এভারেস্টে সবচেয়ে বেশি ওঠেন নেপালিরা, এ লজ্জা একশো কুড়ি কোটির দেশ রাখে কোথা? তাই আইপিএল-ইষ্টিকুটুম-বিগ বস আদি পাস্টাইমকে উড়িয়ে আম-ভারতীয়র নয়া অবসর বিনোদন: এভারেস্ট চড়া। তিনটে রেকর্ড ঝুলিতে: সবচেয়ে কমবয়সি টিমের, বিশ্বে প্রথম যমজ বোনের, পা কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে এমন মেয়ের প্রথম এভারেস্ট জয়। ১৫ বছর বয়সি এভারেস্ট-জয়ীকে প্রশ্ন ছিল, কেন চড়লে? উত্তর: বোর হচ্ছিলাম, চলে এলাম, এখান থেকে ভিউটা হেব্বি, বন্ধুদের সঙ্গে মস্তিও হবে। বোঝো! এভারেস্টও জাত খুইয়ে পিকনিক-স্পট। চুড়ো এমন জ্যামজমাট, পা রাখার ঠাঁই নেই, এক জন নেমে জায়গা করে দিতে তবে শান্তি।
• নিউ ইয়র্কে সুইট সামার, সেন্ট্রাল পার্কে রোদ পোয়াচ্ছেন অজস্র নারীপুরুষ। ডবল তৎপর পুলিশও, সৌজন্যে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট-নির্দেশিকা: টপলেস নারী মাত্রেই নিরাপদে নির্বিঘ্নে যাতে রৌদ্রস্নান করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। বেআব্রু বক্ষের জন্য দণ্ডবিধান দূরস্থান, জেরা অবধি বারণ। কোর্টও বলেছেন: মেয়েরা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে-ইচ্ছেয় তাঁদের বুক উদোম করে রাখতেই পারেন, শাস্তির প্রশ্নই নেই। নারীর (ও পুরুষেরও) ঊর্ধ্বাঙ্গে যদি সুতোটিও না থাকে, পাবলিক প্লেসে তা দেখে যদি কোনও রক্ষণশীল-চিড়বিড় ঘটে, ‘অ্যাকশন’ নেওয়া যাবে না। নারীবাদী, সমাজকর্মী, যে কোনও প্রগতি-পার্সন’ই আপ্লুত, মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষায় এ জব্বর স্টেপ। তবে পুলিশকুলের মধ্যে অন্তর-অস্বস্তি চেপে বাহ্যিক হালুমহুলুম চলছে কি না, ভাবার। খোলাবুক মেয়েদের রাইট-রক্ষার পিছনে ‘মেয়েগুলো নির্লজ্জ, বাজে, জাস্ট ডিউটি বলে সইতে হচ্ছে’: রাগলজ্জাঘেন্নামাখা সাবটেক্স্ট লুকিয়ে নেই, কে বলবে? উলটো ঝুঁকিও আছে। একে ঢাল করে এ বার না চালাক মেয়ে-বদমাশ ব্যাংক লুটে, শত্তুরকে দশটা বুলেট ঠুসে, পাঁইপাঁই ছুট্টে পার্কে গিয়ে উদোমবুক! টপলেস মানেই তো কপ-লেসও! |
|
|
|
৩৭১
গত দু’বছরে প্রতি মাসে অনলাইনে
যত কোটি ভিডিয়ো দেখেছেন ভারতীয়রা |
১৯৮
বিশ্বের যতগুলো দেশে আইপিএল-৬
সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে
৩.৪
‘জাস্ট ডায়াল’-এর শেয়ারে ৬.৩ লক্ষ টাকা লগ্নি
করে আড়াই বছরে যত কোটি টাকা রিটার্ন
পেতে চলেছেন অমিতাভ বচ্চন
৩৫৪০০
নিলামে যত ডলার দর উঠল ‘অপারেশন
নেপচুন্স স্পিয়ার’-এ উদ্ধার হওয়া ওসামা
বিন লাদেন-এর ব্যবহৃত ‘কমব্যাট ছুরি’ |
১৩০০
গত অর্থবর্ষে মোট যত কোটি পুরনো ছেঁড়া
টাকার নোট বাতিল করতে হয়েছে রিজার্ভ
ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াকে। এর অর্থমূল্য
ছিল
২.০৫ লক্ষ কোটি টাকা |
৩৪৮
‘ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার’ অনুসারে
দেশের যতগুলো জীবনদায়ী ওষুধের দাম
প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে চলেছে
|
৩৭০০০০০০
পাকিস্তানের মোট যত জন মহিলা ভোট
দিলেন দেশের সাধারণ নির্বাচনে।
এটি দেশের সর্বকালীন রেকড
|
৩.৭৫
চা-বিস্কুটের জন্য মাথাপিছু দৈনিক যত
টাকা বরাদ্দ লালবাজারের সেন্ট্রাল
লকআপ-এর বন্দিদের। দুপুর ও রাতের
খাবারের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ১৪ টাকা |
১৬৬৫৬
পুনের ইয়েরওয়াড়া
জেল-এ বন্দি সঞ্জয়
দত্তের কয়েদি নম্বর যত |
|
|
|
|
অ
সী
ম
চৌ
ধু
রী |
|
|
যা-ই হোস বাপু, ‘আমরা’ বা ‘ওরা’,
মরবার আগে জেনে রাখ তোরা
খুব মমতায়, ক্ষমতা যা চায়: ‘মুরগিরা খাবে চিকেন পকোড়া।’ |
যত নীতিবাগীশেরা জপমালা আওড়ায়,
ভয়ে নয় ভালবেসে জনগণ দাও রায়!
কারও জয় ঠিক ঠিক,
কারও জয় নৈতিক।
সব দলই... তারা নাকি জিতে গেছে হাওড়ায়! |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
মাথায় চুল নেই, ল্যাজে বাবরি |
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন প্রণব সরকার, বর্ধমান |
|
|
পাশের ছবির দু’জন কী বলছে? সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|