সবাই কি আর নাচ-গানে ভোলে? সঙ্গে সলমন খান বা জন আব্রাহাম-এর মতো একটা টাফ লুক দিতে পারলে তবেই না! অনেকটা এমনই ধারণা ‘ফ্রিগেট’ পাখিদের। এরা এক ধরনের সামুদ্রিক পাখি। পেলিক্যান গোত্রীয়। অনেকগুলি ধরনের মধ্যে আছে গ্রেট ফ্রিগেট ও ম্যাগনিফিশেন্ট ফ্রিগেট। পুরুষ পাখিগুলির গলার কাছে লাল রঙের একটি থলি মতো থাকে। মেয়ে পাখিদের নজর কাড়তে এরা এই থলিটাকে বেলুনের মতো যথাসম্ভব ফুলিয়ে দেয়। থলিটা যত বড় হবে, মেয়েদের চোখে পুরুষটিও হবে ততই আকর্ষণীয়। এই গলা ফোলা অবস্থাতেই তারা অতি কষ্টে চেষ্টা করে মাথা নাচিয়ে, মজাদার ঘড় ঘড় ডাক ছেড়ে মেয়েদের আকৃষ্ট করতে।
|
‘বাওয়ার বার্ড’। মূলত নিউ গিনি এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এই পাখি দেখতে পাওয়া যায়। আর্কিটেক্ট হিসেবে এদের খ্যাতি নাকি বিশ্বজোড়া। সঙ্গী খুঁজতে বনের মাটিতে এরা ছোটখাটো ডালপালা, পাতা ও শ্যাওলা দিয়ে গড়ে আস্তানা। সঙ্গে রংচঙে জিনিসপত্র দিয়ে আবার ইন্টিরিয়র বা এক্সটিরিয়র ডেকরেশন-ও করে দেয় সেটার। কেউ কেউ তো আবার ঘরের ভেতর পেন্ট করে দেয় কাঠকয়লা বা নিজেরই আধখাওয়া বেরির অংশ দিয়ে। আর ওই যে বলছিলাম নানা রকম জিনিসের কথা। সেগুলি কী জানো? রংবেরং-এর পাতা, ফুল, পালক থেকে শুরু করে খোলা, নুড়ি পাথর, চকচকে কয়েন, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র, কাচের টুকরো ইত্যাদি। তবে সব যে তারা কুড়িয়ে পায় তা নয়। বেশ কিছু জিনিস তারা আবার অন্যান্য বোয়ার পাখির আস্তানা থেকেও নিয়ে আসে। মানে, সুযোগ বুঝে স্রেফ ঝেড়ে দেয়! এ বার মেয়ে পাখিটি এসে পুরুষটির আস্তানা ইনস্পেক্ট করতে আসে। আস্তানা দেখে পছন্দ হলে ‘থাম্বস্ আপ’। না হলে লবডঙ্কা। |
ধরো, তুমি অস্ট্রেলিয়ার কোনও জঙ্গলে হাইক করছ। ঘুরতে ঘুরতে শুনছ কত রকমের পাখি ডাকছে, ডানা ঝাপটাচ্ছে বা ডালে মুখ ঠুকছে। মনে মনে ভাবছ, আজ কত পাখির দেখা মিলবে। ভুল ভাবছ, যদি ধারেকাছে ‘লাইয়রবার্ড’ থাকে (ওপরের ছবিতে)। পাখিটির অদ্ভুত ক্ষমতা হল যে সে যে কোনও শব্দ নকল করতে পারে। অন্য পাখির ডাক তো ছেড়েই দাও, তারা কারখানার সাইরেন থেকে শুরু করে কুকুরের ঘেউঘেউ, গাড়ির হর্ন-ও নকল করে দেয়!
আবার, শ্রীলঙ্কা ফ্রগমাউথ-এর কথাই যদি বলি। নামটা শুনেই নিশ্চয়ই বুঝেছ পাখিটাকে দেখতে কেমন? ঠিক, মুখটা একেবারে ব্যাংপানা। পাখিগুলি এমনিতে নিশাচর। তবে সব থেকে অদ্ভুত হল এদের পালকসজ্জা। দেখতে একেবারে শুকনো পাতার মতো। এবং পাখিগুলি যখন গাছের ডালে চুপটি করে বসে থাকে, তখন তুমি ঠিকমত ঠাহর না করেলে মনে হবে যেন শুকনো ডালপালা দেখছ! |