বিনিয়োগ ঘোষণার পর বছর ঘুরেছে। কিন্তু ‘হাতে থাকা’ জমি এখনও সংস্থার নামে (মিউটেশন) হয়নি। আর সেই কারণেই থমকে গিয়েছে কুলটিতে সেল-এর প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্প। এ নিয়ে সরাসরি মুখ না-খুললেও সেল কর্ণধারের স্পষ্ট ইঙ্গিত, জমি ঘিরে এই জটিলতার কারণেই আপাতত প্রকল্পটিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখছেন না তাঁরা।
গত বছর মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর এ রাজ্যে একগুচ্ছ লগ্নি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন সেল-এর চেয়ারম্যান সি এস বর্মা। তিনি বলেছিলেন, ইস্কো ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সম্প্রসারণের পাশাপাশি রাজ্যে দু’টি নতুন প্রকল্প গড়বে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সেল (স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া)। তার মধ্যে একটি হল, সাত হাজার কোটি টাকা ঢেলে কুলটিতে নয়া ইস্পাত প্রকল্প। আর অন্যটি হল, দুর্গাপুরে জাপানি ইস্পাত বহুজাতিক কোবে-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে লোহার নাগেট উৎপাদন। কিন্তু জমির মিউটেশন এখনও না-হওয়ায়, কুলটির প্রকল্প নিয়ে এক পা-ও এগোতে পারেনি সেল।
কুলটিতে যে জমি নিয়ে জটিলতা, আগে তার মালিকানা ছিল ইস্কোর হাতে। তাই ইস্কো অধিগ্রহণের পর ওই ৬৫০ একর জমি এমনিতেই সেল-এর হাতে আসার কথা। কিন্তু বছর ঘুরে যাওয়ার পরেও মিউটেশন না-হওয়ায় সরকারি ভাবে ওই জমি এখনও সেল-এর নামে হয়নি। এ প্রসঙ্গে শনিবার কলকাতায় বর্মা বলেন, “জমির মিউটেশন হয়নি। তা হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত প্রকল্পের পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। প্রকল্পের জন্য কোনও সময়সীমাও নির্ধারণ করা হয়নি।”
অর্থাৎ সরাসরি না-বললেও ইঙ্গিত স্পষ্ট। জমি-জটের কারণে অন্তত এই মুহূর্তে সেল-এর অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই কুলটি প্রকল্প। অথচ গত বছর এই প্রকল্প থেকেই বছরে ১২ লক্ষ টন ইস্পাত তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
তবে বর্মার আশ্বাস, দুগার্পুরের প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ীই এগোচ্ছে। তাঁর দাবি, এর জন্য পরিবেশ সংক্রান্ত সমীক্ষা চলছে। যার রিপোর্ট তৈরিতে চার-পাঁচ মাস লাগবে।
নন্দীগ্রামের কাছে জেলিংহ্যাম প্রকল্পের কাজও নির্দিষ্ট পথে এগোচ্ছে বলে সেল কর্তৃপক্ষের দাবি। |