নতুন মুখেই গড় রক্ষার কৌশল বামেদের
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের নির্বাচনে এ বার একেবারে নতুন মুখদের প্রার্থী করল জেলা বামফ্রন্ট। সে কারণে এ বার আর প্রার্থী হতে পাচ্ছেন না বিদায়ী সভাধিপতি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বিলাসীবালা সহিস। ব্যতিক্রম শুধু কাশীপুর। এখানে সিপিএমের পক্ষ থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন গতবারের বিজয়ী প্রার্থী। জেলা পরিষদের বাকি ৩৭টি আসনের সবগুলিই নতুন মুখ। কৌশলগত ভাবেই বামফ্রন্ট এই পদক্ষেপ করেছে বলে নেতৃত্বের দাবি।
এই জেলায় ফ্রন্টের অন্য শরিকেরা গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে লড়লেও জেলা পরিষদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কেবল মাত্র সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক। জেলা পরিষদে গতবারে আসন ছিল ৩৫টি। পুনবিন্যাসের পরে এ বার আসন বেড়ে হয়েছে ৩৮টি। জেলা ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিপিএম ৩২টি ও ফরওয়ার্ড ব্লক ৬টি আসনে লড়বে। সিপিএম একজনকে রেখে দিলেও ফরওয়ার্ড ব্লকের সকলেই নতুন মুখ।
গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে বামফ্রন্টের মধ্যে ঐক্য হয়নি। সিপিএম ৩১টি আসনে লড়ে জিতেছিল ২৮টি আসন। ১১টি আসনে লড়ে ফরওয়ার্ড ব্লক পেয়েছিল ২টি আসন। যদিও নিবার্চনের পরে ফের এই দুই বাম শরিক মিলিত ভাবেই জেলা পরিষদ গঠন করে। ফ্রন্ট সূত্রে খবর, এখন তারা রাজ্যে বিরোধী শিবিরে চলে আসায় পুরনো মুখের বদলে নতুন মুখ নিয়ে ভোটে যাওয়ার দাবি আসতে থাকে আঞ্চলিক স্তর থেকেই। জেলা সিপিএমের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা ঠিক করেছেন জেলা নেতৃত্ব। তবে এ নিয়ে বিভিন্ন জোনাল নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। নতুন প্রার্থীদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।”
রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করিয়ে গতবার সিপিএম জেলায় প্রার্থী করে সভাধিপতি করেছিল বিলাসীবালা সহিসকে। তাঁর মতোই এ বার ভীম কুমার, গোবর্ধন শীল, হৃষিকেশ মাহাতো, রামবিষ্ণু সিংহ বাবু, আনন্দ টুডু, শিশির মাহাতো, উৎপলা মাহাতোর মতো জেলার বিভিন্ন এলাকার নেতানেত্রী-সহ এ বার বাদ পড়েছেন গতবারের ৯ জন কর্মাধক্ষ্যই। গতবার কাশীপুরের একটি আসন থেকে নিবার্চিত সুদিন কিস্কুকে অবশ্য এ বার প্রার্থী করা হচ্ছে। একই ভাবে ফরওয়ার্ড ব্লকও এ বার প্রার্থী করেনি দলের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা তথা জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ-সভাধিপতি মহেশ্বর কুইরিকে। প্রতিবারই জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর কোনও সদস্য নয়তো জেলা কমিটির সদস্যদের প্রার্থী করা হয়েছে। তা থেকে কাকে ভবিষ্যতে সভাধিপতি করা হতে পারে, তার একটা আঁচ পাওয়া যেত। এ বার জেলা সম্পাদক মণ্ডলী তো বটেই জেলা কমিটির কোনও সদস্যও প্রার্থী তালিকায় নেই। ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন প্রার্থীকে বাদ দিলে সকলেরই গড় বয়স পঁয়ত্রিশের আশেপাশে।
ফ্রন্ট সূত্রের খবর, কিছু নেতানেত্রীর আচরণ গত ত্রুটি গত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে বিভিন্ন নিবার্চনের ফলে প্রভাব ফেলেছে, এমন খবর নেতৃত্বের কাছে এসেছে। একই সঙ্গে উঠে এসেছে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধি থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে স্বজন পোষনের অভিযোগও। তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক মণীন্দ্র গোপের দাবি, “সকলকেই ইচ্ছে করে বাদ দেওয়া হয়েছে বিষয়টি এমন নয়। অনেক আসন সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। ফলে পুরনো জনপ্রতিনিধিদের এ বার জেলা পরিষদে প্রার্থী করা যায়নি।” তিনি জানান, বিলাসীবালাদেবী একাধিকবার মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন। নতুনদের তুলে আনাও রাজ্য নেতৃত্বের দীর্ঘদিনের কৌশল। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক নরহরি মাহাতো বলেন, “আমরা এ বার ঠিক করেছিলাম নতুনদের প্রার্থী করব। সেই মোতাবেকই প্রার্থী দিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.