ডাক্তার হও, বাংলা ছেড়ো না, আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যে চিকিৎসকের বড় অভাব। তাই ডাক্তারি পড়ে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা যাতে অন্যত্র পাড়ি না-দেন, সেই জন্য তাঁদের অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার টাউন হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় স্থান পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই আবেদন জানান মমতা।
রাজ্যের প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসকের অভাব প্রকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব সব থেকে বেশি। রোগীর চাপ বাড়লেও সেই অনুপাতে হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ছে না। গ্রামের হাসপাতালে অবস্থা আরও করুণ। গ্রামে কাজ করার ব্যাপারে চিকিৎসকদের আগ্রহী করে তোলার জন্য রাজ্য সরকার তাঁদের বাড়তি সুযোগও দেয়। তা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা গ্রামে গিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এমনকী সদ্য প্রকাশিত মেডিক্যালের অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় সফল বাংলার কৃতীরাও জানিয়েছেন, তাঁরা ভিন্ রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করে সেখানেই কাজ করতে চান। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন তাৎপর্যপূর্ণ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দশে থাকা প্রায় ৭৫ জন কৃতী ছাত্রছাত্রীকে সংবর্ধনা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে মমতা এ দিন তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও জানতে চান। পরে তিনি বলেন, “প্রায় ৮০ শতাংশ ছেলেমেয়ে জানাল, তারা মেডিক্যাল পড়তে চায়। ওদের বলছি, দয়া করে তোমরা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে যেও না। আমাদের এখানে চিকিৎসকের বড় অভাব। সব জায়গায় চিকিৎসক দিতে পারি না।” তার পরে গ্রামে কাজ করা চিকিৎসকদের স্নাতকোত্তরে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতীরা। —নিজস্ব চিত্র
শুধু ডাক্তারি পড়তে ইচ্ছুকদের নয়, সকলকেই এ দিন জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “অনেকে বলছে, বাইরে পড়তে যাবে। যেখানেই পড়তে যাও, এই মাটিটাকে ভুলে যেও না।”
কৃতীদের এ দিন ল্যাপটপ, বই, ব্যাগ, ফুল, মিষ্টির প্যাকেট ইত্যাদি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন। সেই ছবি প্রত্যেক পড়ুয়ার কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে বলে অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা সরকারি অফিসারদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ আবার মুখ্যমন্ত্রীকে খাবার, ছবি ইত্যাদি উপহার দেন।
মমতা জানান, চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি অনেকেই রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করবেন বলে জানিয়েছেন। আইএস, আইপিএস হতে ছাত্রছাত্রীদের অনীহা নিয়ে কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সাহায্য করার জন্য রাজ্যে একটি কেন্দ্র গড়ছে সরকার। সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, “তোমাদের মধ্যে যাদের পড়াশোনা চালাতে সমস্যা আছে, তারা শিক্ষামন্ত্রী বা স্কুলশিক্ষা সচিবকে সে-কথা জানাও।” এই ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ব্যাপারে সরকারের তরফে সাহায্যের আশ্বাস দেন মমতা। স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে পরে জানানো হয়, মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পাঁচ জন ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ তিন জন এই সাহায্য চেয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহে কৃতীদের অনেকে এ দিন গান, আবৃত্তি ইত্যাদি করেন। মুখ্যমন্ত্রী আবার নিজস্ব ঢঙে ছাত্রছাত্রীদের শরীরের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, “শরীরকে সুস্থ রেখো। মনে রাখবে, ডায়েটিং করা ভাল। কিন্তু বেশি করা ভাল নয়। না-খেলে মাথা কাজ করবে কী করে?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.