দক্ষিণ কলকাতা
ফিতের গেরো
সরোবরে সমস্যা
লাল ফিতের গেরোয় আটকে রয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ সরানোর কাজ। কবে গাছগুলি সরবে তা সরোবর কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি। ফলে অসুবিধায় পড়েছেন সরোবরের প্রাতর্ভ্রমণকারীরা, আটকে আছে সৌন্দর্যায়নের কাজও।
সরোবরে এখন ঢুকলেই চোখে পড়ে, কোথাও গাছের গুঁড়ি, কোথাও বা পড়ে যাওয়া ডালপালা ডাঁই করে রাখা। এর ফলে প্রাতর্ভ্রমণকারীরা নানা অসুবিধায় পড়ছেন বলে অভিযোগ। তা ছাড়া একটি বড় গাছের গুঁড়ি সরোবরের ভেতরের শৌচালয়ের ওপরেও আশঙ্কাজনক ভাবে ভেঙে পড়েছে। সরোবরের এক নিয়মিত প্রাতর্ভ্রমণকারী স্বপন দেবনাথ বলেন, “রাস্তার উপরেও গাছ ভেঙে পড়ে আছে, হাঁটাচলা করতে অসুবিধে হচ্ছে।”
কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট-এর (কেআইটি) বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওএসডি) লিয়াকত আলি বলেন, “রাজ্য বন দফতরের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত সরোবরের কোনও গাছ আমরা সরাতে পারি না। বন দফতরের অনুমতি পাওয়ার পরে টেন্ডার ডেকে গাছ সরানো হয়। গাছের গুঁড়িও কেটে রাখা হয়। তবে এই কাজ সময়সাপেক্ষ।”
কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, কেআইটি-র গাছ রাখার নিজস্ব কোনও জায়গা নেই। গত এক বছরে যে সমস্ত গাছ পড়েছে সেগুলির বিপজ্জনক অংশ কেটে ফেলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু কিছু বড় গাছের গুঁড়ি কেটে ফেলে উদ্যানেই রাখতে হয়েছে। এ ছাড়াও অভিযোগ, অনেকেই সরোবরে এসে পড়ে থাকা গাছের ডাল চুরি করে নিয়ে যায়, যদিও কেআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চুরি যাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ, বর্তমানে রবীন্দ্র সরোবরে দিনরাত নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন।
রাজ্য বন দফতরের উপ-বনপাল (আর্বান ফরেস্ট্রি) গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “নিয়মানুযায়ী, বন দফতরের অনুমতি ছাড়া কেআইটি কর্তৃপক্ষ সরোবর থেকে গাছ সরাতে পারেন না। বিপজ্জনক কোনও গাছ দ্রুত সরানো যেতে পারে। সেই ব্যাপারে আগে বা পরে বন দফতরের অনুমতি প্রয়োজন। এ ছাড়াও বড় কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্য চাইলে আমরা করি। কিন্তু বন দফতরের সেই পারিকাঠামো নেই যার মাধ্যমে ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ সরোবর থেকে দ্রুত সরানো যায়। কেআইটি কর্তৃপক্ষকেই আমাদের অনুমতি নিয়ে তাঁদের নিজস্ব পরিকাঠামো দিয়েই গাছ সরাতে হবে।”
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রবীন্দ্র সরোবরে গাছ সরানো নিয়ে প্রশাসনিক সমস্যা রয়েছে। সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। কেআইটি কর্তৃপক্ষ যাতে নিজেরা দ্রুত গাছ সরিয়ে দিতে পারে সে ব্যাপারে পরিকাঠামো বাড়ানো দরকার। সে চেষ্টাও করছি।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.