|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন বারাসত |
নেই নিয়ন্ত্রণ |
দাপুটে ভ্যান
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
বারাসত শহরের তিনটি আন্তর্জাতিক রুটে দাপিয়ে চলছে ভ্যানরিকশা। ফলে টাকি রোড, যশোহর রোড এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে সর্বক্ষণ লেগে থাকছে যানজট। অথচ এগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেই কোনও বিধিনিষেধ।
টাকি রোড বারাসতের চাঁপাডালি মোড় থেকে বসিরহাট হয়ে টাকিতে মিশেছে। প্রতি দিন বারাসত-বসিরহাট, বসিরহাট-কলকাতা, টাকি-কলকাতা ভায়া বারাসত রুটের গাড়ি ছাড়াও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে হাওড়া, তমলুক, কাঁথি-সহ অসংখ্য রুটের গাড়ি। বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের দিকের ঘোজাডাঙা এলাকা থেকে প্রতি দিন কয়েকশো আমদানি-রফতানি
পণ্যের ট্রাক যাতায়াত করে টাকি রোড দিয়ে। অথচ, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপরে বারাসত থেকে সরোজ পার্ক, পূর্ব বারাসত স্কুল, কাজিপাড়া বাজার, সাউথ বেঙ্গল বাসডিপো এবং কাজিপাড়া পর্যন্ত ভ্যানচালকেরা নিজেরাই রুট তৈরি করে গাড়ি চালাচ্ছেন। |
|
অন্য দিকে, বিমানবন্দর থেকে মধ্যমগ্রাম এবং বারাসত ডাকবাংলো মোড় ও চাঁপাডালি মোড় হয়ে যশোহর রোড ভারত-বাংলাদেশের পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছেছে। এই রাস্তা দিয়ে বনগাঁ থেকে বারাসত, কলকাতা ও অন্যান্য জেলার বিভিন্ন রুটের গাড়ি ছাড়াও ঢাকা-কলকাতা রুটের বাস এবং আমদানি-রফতানি পণ্যের ট্রাকের যাতায়াত। এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটিতেও ভ্যানের দাপট চলছে অবাধে। চাঁপাডালি থেকে হাসপাতাল গেট, ইকো, গেঞ্জিমিল, নন্দগড়, জগদিঘাটা, রেলগেট, ঘোলা, কাজিপাড়া রুটে সারা দিনই অসংখ্য ভ্যান যাতায়াত করছে।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বারাসতের ডাকবাংলো মোড় থেকে শুরু হয়ে উত্তরবঙ্গে মিশেছে। কলকাতা-উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের বাস ছাড়াও উত্তরবঙ্গগামী এবং হিলি সীমান্তের আমদানি-রফতানি পণ্যের ট্রাকের যাতায়াত এই পথে। এই সড়কের ডাকবাংলো থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য ভ্যান মেলে সহজেই।
বাসচালক এবং ট্রাকচালকদের একাংশের অভিযোগ, যে ভাবে ওই রাস্তাগুলি দিয়ে অসংখ্য ভ্যান যাতায়াত করে তাতে ব্যস্ত সময়ে ভারী যান চলাচলে যথেষ্ট অসুবিধা হয়। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ও বারাসত পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত শহরে প্রায় ২০ হাজার ভ্যান চলাচল করে। |
|
গোটা সমস্যার বিষয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেছেন, “দরিদ্র মানুষ এই ভ্যানরিকশা চালিয়ে রুজি-রোজগার করেন। আবার মানুষও এতে যাতায়াতে
অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এর বিকল্প ব্যবস্থা এবং যত দিন তা না হচ্ছে তত দিন যাতে ভ্যানগুলি নিয়ম মেনে চলে সে ব্যাপারেও আলোচনা চলছে।”
বাসচালক সুবল বিশ্বাসের অভিযোগ, বারাসত পুরসভা লাইসেন্স নবীকরণ এবং লাইসেন্স গ্রহণের বিষয়ে কঠোর হলে বিপুল সংখ্যক ভ্যান দাপিয়ে বেড়াতে পারত না। বারাসতের পুরপ্রধান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভায় মেরেকেটে তিনশোটি ভ্যান নথিভুক্ত আছে। আর এই ভ্যানগুলি কেবল মালপত্র বহন করতে পারে। শহরে যে সব ভ্যান যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে সেগুলি সবই বেআইনি। পুরসভা অনেক চেষ্টা করেও ভ্যান নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ।”
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বারাসত অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত ভ্যানের দাপটের কথা স্বীকার করে বলেন, “বহু বছর আগে থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ পেটের দায়ে এখানে ভ্যান চালাতে আসেন। এখন আমরা হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণের পথে গেলে সেটা অমানবিক হবে।”
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুগত সেনের
কথায়: “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত ভ্যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হয়নি। তাই বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে পুরসভা ভ্যান নিয়ন্ত্রণে সাহায্য চাইলে বাহিনী দিয়ে সাহায্য করব।”
|
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|