|
|
|
|
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে সংসদে বিল
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
‘ভুয়ো ডিগ্রি দাতা’ হিসেবে মেঘালয়ের চন্দ্রমোহন ঝা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হবে। আজ শিলং-এ একথা জানান, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী এম পাল্লাম রাজু। গত এক মাস ধরেই সিএমজে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপরে নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে একটি বিল পেশ করা হবে।
ভুয়ো পিএইচডি ডিগ্রি ‘বিক্রি’ করার অভিযোগে বন্ধ করা হয়েছে মেঘালয়ের চন্দ্রমোহন ঝা বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মেঘালয়, অসমে অন্তত ৪৩০ জন ছাত্র, শিক্ষককে বেআইনি পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভিজিটর’ তথা রাজ্যপাল রঞ্জিত্ শেখর মুশাহারি নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মৃণালকান্তি দেব, ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রেমলাল রাই ও এইচআর ম্যানেজার জুবান খারপুরিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। মালিক তথা সিএমজে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রমোহন ঝায়ের নামেও জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তবে তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। সিআইডি তদন্ত শুরু হওয়ার দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকর্তা মনজিত্ কউর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনিও শিলং সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অসমের বহু শিক্ষক-অধ্যাপক এই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় অসমের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা তদন্তের নির্দেশ দেন।
এই পরিস্থিতি আজ উমসাউলির মাওডিয়াংগিয়াং এলাকায় হায়দরাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তথা ‘ইংলিশ অ্যান্ড ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজের ইউনিভার্সিটি’-র শিলং শাখার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে এসে পাল্লাম রাজুকে সিজেএম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বহু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তিনি জানান, আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন যা করতে পারে তা হল তাদের ওয়েবসাইটে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে সব কথা উল্লেখ করা সেখানে ভুয়ো ডিগ্রিদানের ব্যাপারটিও জানানো হবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আইআইপিএম-এর বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তেমনই এই ধরণের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ কাজে রাজ্য সরকারের সহায়তাও প্রয়োজন।” তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে শীঘ্রই সংসদে একটি বিল পেশ করা হবে।
রাজ্যপাল মুশাহারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আচার্য’ চন্দ্রমোহন ঝাকে, পালিয়ে না থেকে ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি দাঁড়াবার আর্জি জানান। তিনি বলেন, “যত দিন যাচ্ছে সিজেএম বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে নিত্যনতুন কেলেঙ্কারি বের হচ্ছে। মহারাষ্ট্র, নাগাল্যান্ড থেকেও ছাত্রছাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার খবর আসছে। এই পরিস্থিতিতে ঝায়ের উচিত, যা সত্যি তা সামনে এসে বলা।” রাজ্যপাল মুশাহারি, নিজের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়ো কর্মকাণ্ড নিয়ে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপালদের চিঠি পাঠিয়েছেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে, সিজেএম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের স্থান দেওয়ার ব্যাপারে মার্টিন লুথার খ্রিস্টান বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যপালের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফেও বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ‘সিজেএম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা তাদের নাম পরিচয়পত্র, রিসিট-ভাউচার, শংসাপত্র-সহ শিক্ষা দফতরে আবেদন করতে পারে। তার ভিত্তিতে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে।’ |
|
|
|
|
|