দালের মেহন্দির গানে কলম ধরেছেন কপিল সিব্বল!
‘তুনাক তুনাক তুন’ থেকে দালের এ বার স্পট ফিক্সিং-এ। ‘ক্রিকেট নেহি ইয়ে তামাশা হ্যায়’ বলে একটি মিউজিক ভিডিও বানিয়েছেন দালের। যার গীতিকার দেশের আইনমন্ত্রী স্বয়ং! ইচ্ছে ছিল মন্ত্রীকে নিয়েই ভিডিওটা করার। কিন্তু সরকারি মিটিংয়ের জন্য তা হয়ে ওঠেনি বলে দালেরের দাবি।
কী ভাবে এটা সম্ভব হল? কপিল সিব্বল লেখালেখি করেন অনেক দিনই, মূলত কবিতা। এর আগে দালেরের জন্য একটি সুফি গান লিখেছিলেন। গত সপ্তাহে দিল্লিতে কপিলজির সঙ্গে দালেরের দেখা হয়। কথা প্রসঙ্গে দালের বলেন যে আইপিএলের স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি দেখে তিনি বেশ বীতশ্রদ্ধ। “কপিলজি আমাকে বলেন যে ওঁরও এ বিষয় নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা। কিন্তু সমস্যা হল গানটা গাইবে কে? কওন পাঙ্গা লেগা? আমি শুনেই রাজি হয়ে যাই।”
কপিলও হাসতে হাসতে বলছেন, “একটা অবস্থাটাকে বোঝানোর জন্য পঞ্চাশটা আলাদা আলাদা পদ্ধতি থাকে। আমি কবিতার মাধ্যমটা বেছে নিয়েছি।”
কপিলের এই কলম ধরার পিছনে অবশ্য পরোক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। বেটিং কেলেঙ্কারি থেকে নিজের দূরত্ব বাড়াতে কংগ্রেস এখন মরিয়া। হাইকম্যান্ডের চাপেই আইপিএল চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে রাজীব শুক্লকে। কপিলের ফিক্সিং-বিরোধী গানও কংগ্রেসের ভাবমূর্তি বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। |
এমনকী অনেকের ধারণা, গানের কথায় উহ্য ভাবে শ্রীনিবাসনের উল্লেখও রয়েছে! যেমন এই লাইনগুলোতে:
‘না ছোড়েঙ্গে পদকো আপনে, অ্যায়সা অন্দাজ হুয়া
বড়ে বড়েকে ছোটেপন সে দর্শক হয়রান হুয়া’।
কপিল নিজে অবশ্য বলছেন, “একজন কবি লেখার সময় অতিরঞ্জিত করেই লিখে থাকেন। যেমন ওয়ার্ডসওয়ার্থ বা অডেন। আক্ষরিক ভাবে সব কথাকে ধরা উচিত নয়।” আর দালেরের দাবি, অনেকেই নিজেদের পদ আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন। তাই শুধু শ্রীনিবাসনের দিকেই
ইঙ্গিত করা হয়েছে, এ রকম মনে করা উচিত নয়।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে দালেরকে গাইতে। পেছনে মন্তাজ শট খেলার মাঠ থেকে। শাহরুখ খান, শিল্পা শেঠি, প্রীতি জিন্টা কে নেই? শ্রীসন্ত, বিন্দু দারা সিংহ, শ্রীনিবাসনেরও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সঙ্গে শ্লেষাত্মক লাইন: ‘ম্যায়নে সোচা সব হিরো থে, কেয়া পর্দা ফাঁস হুয়া’। ভিডিও পরিচালক কেশর সিংহ বলছেন, “লাইব্রেরি থেকে বেছে বেছে ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। নয়ডায় শু্যটিং করেছি আমরা।” ভয় হয়নি এই রকম গানের কথার সঙ্গে তারকাদের ছবি ব্যবহার করতে? এ বারও সাবধানী উত্তর কপিলের, “শুধু কথাগুলোই আমার। তার সঙ্গে কী ছবি ব্যবহার হবে, তার দায়িত্বে আমি ছিলাম না।” তবে দালের সাহসী, “দেখুন এটা এক-দু’দিনের ঘটনা নয়। আর সবাই কী করে বলছেন, তাঁরা কিছুই জানেন না? দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এ সব ‘মুদ্দা’ বা প্রশ্ন তো তুলতেই হবে!” কেউ কেউ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘মুদ্দা’ দালেরের বিরুদ্ধেও উঠেছিল। টাকা নিয়ে বেআইনি অভিবাসন চক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।
তবে কি দালেরও চাইছেন ভাবমূর্তির বদল? গোটা ব্যাপারটাই হয়েছে অত্যন্ত দ্রুত, জানাচ্ছেন দালের। “কুছ করতে হ্যায় না এই বলেই শুরু করেছিলাম।” শুধু একটা ‘হুক লাইন’ ঠিক করা হয়। তিন দিনের মধ্যে গোটা ভিডিও তৈরি! দালেরের মতে কপিল নাকি অন্য গীতিকারদের থেকে অনেক তাড়াতাড়ি লিখতে পারেন। ভিডিওটা ইউটিউবে আপলোডও করা হয়েছে। কপিল বলছেন, “আমরা খুব তাড়াতাড়ি অনেক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছতে চেয়েছিলাম। এ রকম একটা বিষয় নিয়ে কাজ করলে, দেরি করার মানে হয় না।” ভবিষ্যতে এ রকম আরও বিষয় নিয়ে দু’জনে ভিডিও করবেন বলে ঠিক হয়েছে। দালের হেসে বলছেন, “আগে আগে দেখো হোতা হ্যায় কেয়া!” |