কোচবিহারের কৃতী
সৌরভকে অভিনন্দন সহপাঠী, শিক্ষকদের আশা পূরণ উচ্চ মাধ্যমিকে
মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জেলার পরীক্ষার্থীদের ঠাঁই না পাওয়ার আক্ষেপ ঘুচিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় রাজ্যে যুগ্ম অষ্টম স্থান পেলেন সৌরভ মোদক। জেনকিন্স স্কুলের ছাত্র সৌরভের প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৫। তার মধ্যে বাংলায় ৮০, ইংরেজিতে ৯২, রসায়নে ৯৮, পদার্থবিদ্যায় ৯৭ ও অঙ্কে ৯৮ নম্বর পেয়েছেন। জীববিদ্যা ও পরিবেশ বিষয়ে তার প্রাপ্ত নম্বর ৯৭ ও ৯০।
টিভিতে সৌরভের ওই নজরকাড়া ফল ঘোষণা হতে তাঁকে নিয়ে আনন্দে মাতেন সকলে। সহপাঠী থেকে স্কুলের শিক্ষকরা বাড়িতে অভিনন্দন জানাতেও প্রতিবেশী থেকে শুভানুধ্যায়ীদের ভিড় উপচে পড়ে। জেনকিন্স হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কার্তিক পাত্র বলেন অসাধারণ ফল ওর জন্য সত্যিই আনন্দ হচ্ছে। কোচবিহারের বাসিন্দা রাজ্যের পূর্ত পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বাড়িতে গিয়ে সৌরভকে পুষ্পস্তবক দিয়ে অভিনন্দন জানান। রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “এ বার মাধ্যমিকে পর্ষদের মেধা তালিকায় জেলার কারও নাম না থাকায় খারাপ লেগেছিল। টিভি খুলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা পর্ব দেখতে। সকাল উদ্বিগ্ন ছিলেন সকলে। রাজ্যসভা সাংসদ তারিণী রায় দিনহাটা বিধায়ক উদয়ন গুহ সকলেই সৌরভের সাফল্যে খুশি। জেনকিন্স স্কুলের ছাত্র সৌরভের বাড়ি হরেন্দ্রনারায়ণ রোড এলাকায়। পড়ার টেবিলে বইপত্রের এক কোণে রাখা প্রয়াত বাবার ছবি। শৈশবে পেশায় ব্যাঙ্ক অফিসার বাবা সম্বিত মোদককে হারান তিনি। তখন থেকে মা প্রতিমা দেবীর লড়াই করে মেয়ে সুদেষ্ণা ও সৌরভকে মানুষ করে তোলার চেষ্টা শুরু। ভবিষ্যতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন তার দু’চোখে। জয়েন্ট আইআইটির প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েছেন আপাতত সেই ফলের দিকেই তাকিয়ে তার গোটা পরিবার। সৌরভের কথায়, “সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। তবে আইআইটির প্রবেশিকাও দিয়েছি দেখা যাক কী দাঁড়ায়।”
ভাল ফলের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও একেবারে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার কথা ভাবনাতে ছিল না বলে জানান সৌরভ। তার কথায়, “টেস্টে ৩৯৮ পেয়েছিলাম। ভাল ফল হবে জানতাম। তবে মেধা তালিকায় জায়গা পেতে হবে এ রকম কিছু মাথায় ছিল না। ” অঙ্কে ৩ জন পদার্থবিদ্যা রসায়নে ২ জন করে বাংলা জীববিদ্যায় ১ জন করে ছাড়াও জয়েন্টের প্রস্তুতি মিলিয়ে ১২ গৃহশিক্ষক সাহায্য করতেন তাঁকে। স্কুল শিক্ষকরা বাড়তি নজর রাখতেন। গড়ে ১০ ঘণ্টা করে পড়াশোনার রুটিন ছিল তার। সৌরভের মা প্রতিমা দেবী বলেন, “ওর বাবা যখন মারা যান, ওর বয়স ৩ বছর। ওর দিদির ৯। চাকরির চেষ্টা করে লাভ হয়নি। তাই ভেঙেও পড়েছিলাম। ওর বাবার প্রাপ্য টাকা পেনশন ও বাড়ি ভাড়া দিয়ে চালাচ্ছি। উনি না থাকলেও আশীর্বাদটা আছে বলে এটা সম্ভব হয়েছে। ওর বাবার মত চরিত্রবান আর পরোপকারী মানুষ হিসাবে ওকে দেখতে চাই।”
বাড়ির সামনের একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনার হাতেখড়ি সৌরভের। তৃতীয় শ্রেণী থেকে জেনকিন্সের পড়ুয়া ওই কৃতী ছাত্র কম্পিউটার গেম খেলতে খুবই পচ্ছন্দ করেন। শ্রেয়া ঘোষাল ও সোনু নিগমের গান তাঁর ভাল লাগে। সিনেমায় শাহরুখ খান প্রিয়। তবে গল্পের বইয়ে আগ্রহ নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.