বর্ধমান রোডে মেলার সামনে রাস্তা আটকে অবৈধ ভাবে সরকারি দরের চেয়ে ৫ গুণ হারে ফি আদায় হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে উদ্যোক্তাদের সতর্ক করল পুরসভা। মঙ্গলবার তাদের সতর্ক করে অবৈধ ভাবে পার্কিং বসাতে নিষেধ করেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। অথচ বিকেল থেকেই ফের অবৈধ পার্কিং বসিয়ে টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। যেখানে প্রতিদিন বহু টাকা জবরদস্তি আদায় হচ্ছে সেখানে আইনি ব্যবস্থা নিতে অসুবিধে কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের অনেকেই।
পুলিশ-প্রশাসন, পুরসভার ভূমিকা নিয়েও নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। শহরের জমজমাট রাস্তায় জবরদস্তি পার্কিং ফি আদায়কারীরা আইনের ঊর্ধ্বে কেন তা নিয়েও জল্পনা চলছে। আর্থিক লেনদেন কিংবা কোনও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার চাপে আইনভঙ্গকারীরা ছাড় পাচ্ছে কি না তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি উঠেছে। নিত্যযাত্রীদের তরফে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। নিত্যযাত্রীরা জানান, যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া না-হয় তা হলে রাজ্য পুলিশের ডিজি, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হবে। |
শিলিগুড়িতে বর্ধমান রোডে মেলার সামনে বেআইনি পার্কিং চলছেই। মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
এ ব্যাপারে শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ইচ্ছে মতো যে কেউ পার্কিং বসাবে। খুশি মতো ফি তুলবে তা হতে পারে না। অবৈধ পার্কিং যারা বসাচ্ছেন তাদের সতর্ক করা হয়েছে।” পুলিশকেও এ ব্যাপারে দেখতে বলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তার পরেও ফের একই ভাবে পার্কিং বসিয়ে ১০ টাকা করে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী গাড়ি দাঁড়ালে ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কোনও স্লিপ তারা দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ।
এ দিন মেয়রের নির্দেশে পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ শিখা রায় দুপুরে পার্কিংয়ের জায়গায় গেলে সেখানে কাউকে পাননি। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় পুরসভার তরফে পার্কিংয়ের বরাত যিনি পেয়েছেন তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এক বছর ধরে তার সময়সীমা কেন বাড়িতে চালানো হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। শহরের পার্কিং জোনগুলির দায়িত্ব নতুন করে দিতে শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হয়। জুলাইয়ে টেন্ডার করে দায়িত্ব দেওয়া হবে।”
পুরসভার কর্মী, আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, বরাত পাওয়া ওই ব্যক্তির এলাকায় অবৈধ ভাবে পার্কিং বসানোয় যুক্ত। সে কারণেই তিনি পুলিশে এতদিন অভিযোগ করেননি। এ দিন পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ তাঁকে পুরসভায় ডেকে পাঠালে এবং পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুরসভা থেকে বলা হলে সন্ধ্যার দিকে ওই ব্যক্তি সাধন সরকার পুলিশে অভিযোগ জানাতে যান। সাধনবাবু বলেন, “ওই পার্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। কারা পার্কিং বসিয়েছে জানি না।” এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের মেয়র পারিষদ কাজল চন্দের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর এলাকায় জবরদস্তি কয়েক গুণ হারে পার্কিং আদায় হলেও তিনি পুরসভার ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হয়েও কেন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না সেই প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। কাজলবাবু বলেন, “এ দিনই মেয়রকে বলেছি অবিলম্বে অবৈধ ওই পার্কিং তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। লোকে আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ তুলছে।” |