শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়র মৃগাঙ্কমৌলি সরকারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর থেকে পুলিশ তাঁকে ধরে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই অভিযোগে এসজেডিএ’র তরফে দুই বাস্তুকার এবং ঠিকাদার সংস্থা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। এর পরেই মৃগাঙ্কমৌলিবাবু ফেরার হয়ে যান। সম্প্রতি সপ্তর্ষি পাল নামে এসজেডিএ’র এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার আগে এক সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র এবং ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধি এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে মূল অভিযুক্ত মৃগাঙ্কবাবু এবং ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় অধরাই ছিলেন। এ দিন পুলিশ মৃগাঙ্কবাবুকে গ্রেফতার করে। তাঁকে শিলিগুড়িতে আনা হবে। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলার কথা।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “অভিযুক্ত বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ তাকে খুঁজছিল। এ দিন বিকালে তাকে দেওঘর থেকে ধরা হয়। তাঁকে শিলিগুড়িতে আনা হচ্ছে।”
|
মৃগাঙ্কমৌলি সরকার।—নিজস্ব চিত্র। |
এসজেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগডোগরা, মালবাজার এবং ময়নাগুড়ি শ্মশানে তিনটি বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো এবং মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি প্রকল্পে (এসটিপি-২ এবং এসটিপি-৩) প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনা বা কাজ না হলেও খাতায় কলমে সে সব করা হয়েছে দেখিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তবে পুলিশের তরফে অভিযুক্তদের ধরতে গড়িমসি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। সরকারি সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের বাড়তি সময় পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না সেই প্রশ্নে এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান সংস্থার কয়েকজন অফিসার-কর্মী। এর পরেই ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধি এক ব্যক্তি প্রধাননগর থানায় আবেদন জানান, ময়নাগুড়ি শ্মশানে নির্মীয়মাণ বৈদ্যুতিক চুল্লির যন্ত্রাংশ পড়ে রয়েছে। পুলিশ নিরাপত্তা না দিলে চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ দেখে বাস্তবে সেখানে কোনও যন্ত্রাংশই নেই।
পুলিশে দুর্নীতির অভিযোগ জানানোর পর সপ্তর্ষি পালকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। ওই সময়ে মৃগাঙ্কবাবুকে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার থেকে পদাবনতি করে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার করা হয়। ওই বাস্তুকারের বিরুদ্ধে অন্যান্য বেশ কিছু প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। মৃগাঙ্কবাবু অবশ্য গোড়া থেকেই নিজেকে নির্দোশ বলে দাবি করছেন। কিছুদিন আগে তাঁকে সাসপেন্ড করার পরে মৃগাঙ্কবাবু জানিয়ে দেন, ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের নির্দেশেই তিনি সব কাজ করেছেন। |