দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের অর্ন্তদ্বন্দ্ব রুখতে কমিটি গঠন স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বার একই কারণে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তৃণমূলের মহাসচিব শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং দলের শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সোমবার মহাকরণে নিজের ঘরে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মমতা। সেখানে তাঁদের মমতা স্পষ্ট বলে দেন, আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু নেতার কাজে সমস্যা হচ্ছে। আপাতত কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভেঙে দেওয়া হোক। সুব্রতবাবু মঙ্গলবার বলেন, “শিল্পাঞ্চলে আমাদের সংগঠনের দু’টো কমিটির কাজে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। সমস্যা দূর করতেই দলনেত্রী আপাতত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেছেন।” তবে কমিটি ভাঙলেও সুব্রতবাবুকে কমিটির সভাপতি পদে রাখা হয়েছে।
মমতার এই নির্দেশ কেন তা জানাতে গিয়ে দলীয় নেতৃত্বের একাংশ জানিয়েছেন, সম্প্রতি দুর্গাপুরে ইস্পাত কারখানায় কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে আইএনটিটিইউসি-র দুই শীর্ষ নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও দোলা সেনের অনুগামী নেতাদের গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের অভিযোগ, শুধ ডিএসপি, এএসপি বা ডিপিএলের মতো সরকারি সংস্থাতেই নয়, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের আনেক সংস্থার কর্তৃপক্ষই ওই দুই গোষ্ঠীর বিরোধে বিব্রত হচ্ছিলেন। বিষয়টি তাঁরা শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবুর নজরে আনেন। পার্থবাবুই মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি জানান। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী পার্থবাবুদের ডেকে জানান, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে দলের শ্রমিক সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের একটি কমিটিই কাজ করবে। পঞ্চায়েত ভোটের পরে নতুন কমিটি গড়া হবে। পার্থবাবু বলেন, “দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের ক্ষেত্রে যেমন একটি ইউনিয়ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তেমনই শ্রমিক সংগঠনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম করা হচ্ছে।” |
দলের অন্দরের খবর, এই কমিটি ভাঙার নির্দেশে কার্যত শোভনদেববাবুর অনুগামী নেতাদেরই ডানা ছাটা হয়েছে। উল্টে শোভনদেবদের বিরোধী গোষ্ঠী দোলা-অনুগামীদেরই পাল্লা ভারি হয়েছে। দোলাদের সঙ্গে শোভনদেববাবুরা যে বিরোধে জড়িয়েছেন তা যে তৃণমূল নেতৃত্ব ভাল চোখে দেখছেন না তা এই নির্দেশের মাধ্যমেই বোঝানো হয়েছে বলে দলের শার্ষ নেতাদের একাংশের ব্যাখ্যা। বিষয়টি নিয়ে দোলা মন্তব্য করতে চাননি। শোভনদেববাবুও প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, “দলের সর্বোচ্চ নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন তা নিয়ে
কোনও মন্তব্য করব না।” তবে এই পরিস্থিতিতে সংগঠনে তাঁদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে রণকৌশল ঠিক করতে শোভনদেব-অনুগামীরা দু’একদিনের মধ্যে বৈঠকে বসবেন।
|