রাজস্থান থেকে উদ্ধার ৫৩
নির্যাতনের শিকার মণিপুরের শিশুরা
যেন অনেকটা সিনেমার গল্পের মতোই। পড়াশোনা শিখবে, সঙ্গে মিলবে পেটভরা খাবারও---এমনই আশায় সন্তানদের ‘আবাসিক স্কুলে’ পাঠিয়েছিলেন মণিপুরের গরীব পরিবারের অনেকেই।
রাজস্থানের জয়পুরের ‘গ্রেস হোম’ থেকে পুলিশ, মানবাধিকার কর্মীরা যখন ওই শিশুদের উদ্ধার করল, তখন তাদের কেউ-কেউ অন্তঃসত্ত্বা। প্রচণ্ড অত্যাচারে কারও হাঁটার ক্ষমতাটুকুও নেই। সঠিক চিকিত্‌সা না-পেয়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের। অভিযোগের জেরে গ্রেফতার করা হয় ওই মিশনারি আবাসিক স্কুলের প্রধান প্যাস্টর জেকব জনকে। বাড়িতে ফিরে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা পরিজনদের জানিয়েছে ওই শিশুরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, পড়াশোনা তো দূর---ঠিকমতো খাওদাওয়াই পেত না স্কুলের পড়ুয়ারা। দিনভর হরেক ফাইফরমাশ খাটতে হত সকলকেই। যৌন নির্যাতনও চলত। অসুস্থ হলে ওষুধ মিলত না। মার্চ মাসে উদ্ধার হওয়া ৫৩ জন মণিপুরি এবং নাগা শিশুর প্রায় প্রত্যেকেই রোগাক্রান্ত। কেউ-কেউ মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, জয়পুরে থাকাকালীন অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে একটি শিশুর মৃত্যু হয়। বাকিদের উদ্ধার করে বাড়ি ফেরানোর সময় গুরুতর অসুস্থ দু’জন ট্রেনেই মারা যায়। মণিপুরে পৌঁছনোর পর মৃত্যু হয় যক্ষ্মায় আক্রান্ত আরও একজনের। শিশুদের কাছ থেকে জানা তথ্যগুলি কেন্দ্রীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব থেকে দফায় দফায় রাজস্থানের ওই স্কুলে শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়।
মানবাধিকার সংগঠনটির সভাপতি ফেলিসিটা সোংভা জানান, রাজস্থানের ওই আবাসিক স্কুলের একাধিক নাবালিকা পড়ুয়াকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে অন্যেরাও। তাঁর অভিযোগ, ওই স্কুলের প্রধান জ্যাকবের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। সেখানে এক কিশোরীর সন্তানও হয়েছে। পুলিশের অভিযানে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করা গেলেও, তার মায়ের সন্ধান মেলেনি।
সোংভা জানান, বাচ্চাদের দিয়ে ভিক্ষা করানোর ছক ছিল জেকদের। মারধর করে, কড়া মাত্রার ভুল ওষুধ খাইয়ে শিশুদের অনেককেই বিকলাঙ্গ করে দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়া প্রায় সব শিশুরই হাঁটু বেঁকে গিয়েছে (নক-নি)। তাঁদের পরিজনরা জানিয়েছেন, রাজস্থানের স্কুলে পাঠানোর আগে তাঁদের বাচ্চারা পুরোপুরি সুস্থই ছিল। জয়পুর পুলিশ ওই স্কুলে হানা দিয়ে শিশুদের উদ্ধার করার পাশাপাশি জেকবকেও গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা পড়েছে। জেকবকে ইম্ফলে নিয়ে আসা হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.