এক অসুস্থ বৃদ্ধের নিখোঁজের ঘটনায় উত্তর দমদম পুরসভায় ভাঙচুর চালাল উত্তেজিত জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে। পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ করে তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযোগের তির শাসক দলের দিকে। ঘটনার প্রতিবাদে পুরকর্মীরা পথ অবরোধও করেন। পুরপ্রধান সিপিএমের সুনীল চক্রবর্তী বলেন, “সাত জন পুরকর্মী দুষ্কৃতীদের মারে জখম হয়েছেন। কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত ভেঙেছে। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে এক জনকে। এই পুরসভায় পরিকল্পিত সন্ত্রাসের চেষ্টা ছিল অনেক আগে থেকেই। অরাজনৈতিক একটি ঘটনায় নোংরা রাজনীতি করছে শাসক দল। পুলিশও আমাদের অভিযোগ নিচ্ছে না।” |
ঘটনার পরে লণ্ডভণ্ড পুরপ্রধানের ঘর। —নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ২৮ মে। দুর্গানগরের বাসিন্দা বিজয় মণ্ডল (৭০) অসুস্থ অবস্থায় পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনের সামনে পড়েছিলেন। মাতৃসদনের কর্মীরা চিকিৎসার পরে তাঁকে ২৯ মে সকালে ছেড়ে দেন। ২৮ তারিখ রাতেই বিজয়বাবুর পরিজনেরা দমদম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিমতা থানাতেও নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়। ওই বৃদ্ধের পরিজনদের অভিযোগ, মাতৃসদন ও পুরসভায় গিয়ে বারবার খোঁজ নিলেও পুরসভা তাঁদের সাহায্য করেনি। উল্টে হেনস্থা করেছে। সুনীলবাবু বলেন, “কয়েক দিন ধরে মাতৃসদনে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ দিন পুলিশের সামনেই দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালায়। আমরা কেন ওই বৃদ্ধের পরিবারকে হেনস্থা করব?” পুরপ্রধানের দাবি, তাঁকে এক মহিলা ছাতার বাঁট দিয়ে মেরেছেন এবং সুবীর বিশ্বাস নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা গালিগালাজ করেছেন। তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “এ সব পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরোধীদের বাজার গরম করার অপচেষ্টা। আমাদের দলে সুবীর বিশ্বাস নামে ওখানকার কোনও নেতা নেই।” দুর্গানগরের স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সুবোধ চক্রবর্তী বলেন, “ওই বৃদ্ধের অ্যালঝাইমার্স ছিল বলে জানতাম। ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এ ভাবে পুরসভায় হামলাও নিন্দনীয়।” বেলঘরিয়ার এডিসি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “আমরা ওই বৃদ্ধের খোঁজ চালাচ্ছি। পুলিশের তরফে গাফিলতির অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”
|