ফুটবলের আইপিএল নিয়ে কোনও ভাবেই আপসের রাস্তায় হাঁটতে নারাজ আই লিগে অংশ নেওয়া ক্লাব জোটের সংগঠন। তাদের বক্তব্য একটাই আই লিগ এবং ফেড কাপের জৌলুস ক্লিশে করে আইপিএল-কে সামনে রেখে কোনও মতেই ভারতীয় ফুটবলকে অন্ধকূপে ঠেলে দেওয়া চলবে না।
ভারতীয় ফুটবলের এই মুহূর্তের সবচেয়ে গরম বিষয়টি নিয়ে কোমর বাঁধতে বুধবার মুম্বইতে বসছে ক্লাব জোটের জরুরি বৈঠক। সেখানেই ঠিক হবে আইপিএলের ঝঞ্ঝা সামলে ভারতীয় ফুটবলের স্বার্থ রক্ষা করতে ঠিক কোন রাস্তায় হাঁটবে আই লিগের ক্লাবগুলো। ক্লাব জোটের প্রেসিডেন্ট সালগাওকরের রাজ গোমস সোমবার গোয়া থেকে ফোনে বললেন, “বৈঠকের মূল বিষয় একটাই। কোনও ভাবেই ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎকে জলাঞ্জলি দেওয়া চলবে না। তারই রূপরেখা ঠিক হবে বুধবারের বৈঠকে।” এখানেই না থেমে রাজ আরও বললেন, “আইপিএলে নিজেদের ক্লাবের ফুটবলার ছাড়া হবে না। ভারতের সব ক্লাব এই প্রস্তাবে সর্বসম্মত হয়ে স্বাক্ষর করেছে।” জোটের সচিব পুণে এফসি-র চিরাগ তান্নাও একমত রাজের সঙ্গে। সহমত লাজং এফসি-র লারসিং মিংও। তিনি বলছেন, “আইপিএলে ফুটবলার ছাড়ার কোনও পরিকল্পনাই নেই আমাদের।”
শুধু এখানেই শেষ নয়, চলে আসছে ক্রিকেটের আইপিএল-আইসিএল মার্কা দ্বৈরথের ছবিও। ক্লাব জোটের এক কর্তা চমকপ্রদ ভাবে বললেন, “ফেডারেশনকে আমাদের অবস্থান যুক্তি দিয়ে বোঝাতে তৈরি আমরা। কিন্তু তাতেও কাজ না হলে আইপিএলের সময় পাল্টা টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনাও আমাদের মাথায় আসতেই পারে।” সঙ্গে সেই কর্তাটি আরও যোগ করলেন, “ক্লাব জোটের হাতে প্রায় শপাঁচেক ফুটবলার রয়েছে। আমরা ফুটবলার না ছাড়লে আইপিএলের ভবিষ্যৎ কী হবে তা দেখার অপেক্ষায় আছি। সমঝোতার রাস্তা বেরোবেই। আই লিগকে ফিকে হতে দেওয়া যাবে না।”
নবি, সুনীল ছেত্রী, সঞ্জু প্রধানরা ফুটবলের আইপিএল ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখলেও এই পরিস্থিতিতে কলকাতার ক্লাবগুলোর অবস্থান কী? মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান, ইউনাইটেড স্পোর্টস এখানকার আই লিগের কোনও দলই জোটের বিরুদ্ধে যেতে নারাজ। মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র জানিয়েই দিয়েছেন, আইপিএলে তাঁদের ফুটবলার ছাড়বেন না। বুধবারের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “আমরা একসঙ্গে চলব। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেব। ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য যা যা করা দরকার তা নিয়েই সোচ্চার হবে ইস্টবেঙ্গল।”
ইউনাইটেড স্পোর্টসের হয়ে বৈঠকে যোগ দিতে মুম্বই যাচ্ছেন নবাব ভট্টাচার্য। তিনি বলছেন, “ক্লাব জোটের মেল পেয়েছি। সবাই মিলে বসে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে। আশা করি সমাধানের রাস্তাও একটা তৈরি হবে।” মহমেডান প্রেসিডেন্ট সুলতান আমেদও রণংদেহী মেজাজে। আইপিএল প্রসঙ্গে সুভাষ ভৌমিকের কথার সুর টেনে সুলতান বলছিলেন, “ক্রিকেটের আইপিএল দেশে ফিক্সিং, জুয়ার রমরমা বাড়িয়েছে। ফুটবলের আইপিএল হলে সে রকম ছবিই ফের দেখা যাবে না তো? ফুটবলে উৎকর্ষ বাড়াতে গেলে স্কুল স্তর থেকে প্রতিভা তুলে আনতে হবে। আইপিএল করে কিছু হবে বলে মনে হয় না। এতে কিছু মানুষের পকেটের স্বাস্থ্য ভাল হবে। তাই আমরা ফুটবলার ছাড়ব না বলেই ঠিক করেছি।” |