মেধা তালিকায় সাত জন
মাধ্যমিকে হয়নি, উচ্চ মাধ্যমিকে ‘পারল’ কলকাতা
বার মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় ঠাঁই হয়নি কলকাতার। উচ্চ মাধ্যমিকে সেই আক্ষেপ অনেকটাই দূর করে দিলেন কলকাতার ছাত্রছাত্রীরা।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দশে থাকা ৩৭ জনের মধ্যে কলকাতারই সাত জন। মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থানে পাঠভবনের শ্রীজা ভট্টাচার্য। এ ছাড়া অষ্টম, নবম ও দশম স্থানে আছেন নব নালন্দা, হিন্দু স্কুল, বিধাননগর গভর্নমেন্ট, লবণহ্রদ বিদ্যাপীঠ ও সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। যদিও গত বারের চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ কমে এ বছর কলকাতার পাশের হার ৮৬.০১ শতাংশ।
সোমবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। কলকাতায় পাশের হারে ছেলেদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন মেয়েরা। এ বার ৮৯.৪৯ শতাংশ ছাত্রী ও ৮২.৭২ শতাংশ ছাত্র পাশ করেছেন। বর্ধমান, বাঁকুড়া, দার্জিলিং ইত্যাদি জেলাতে অবশ্য ছাত্রীদের পিছনে ফেলেছেন ছাত্রেরা। মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা শ্রীজা রাজ্যের মেয়েদের মধ্যে তো বটেই, কলকাতাতেও প্রথম।
উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে টেলিফোনে শুভেচ্ছাবার্তা পেয়ে আপ্লুত শ্রীজা সোমবার বলেন, “প্রথম ১০০ জনের মধ্যে থাকার কথা ভাবলেও, তৃতীয় স্থান অধিকার করাটা আমার কাছে বেশ অপ্রত্যাশিত।” উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি পেয়েছেন ৪৭২।
ভাইয়ের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় শ্রীজা ভট্টাচার্য। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
জানালেন, সব বিষয়ের পাঠ্যবইয়ের প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মন দিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছেন। প্রিয় বিষয় অঙ্কে ১০০-য় পেয়েছেন ৯৯। কিন্তু প্রথাগত ভাবে কোনও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়েননি তিনি। শ্রীজার বাবা চারুচন্দ্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দুর্গাদাস ভট্টাচার্য। কোনও বিষয় বুঝতে না পারলে বাবার সহকর্মীদের সাহায্য নিয়েছেন।
মহাকাশ-বিজ্ঞান অথবা অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে গবেষণা করতে চান শ্রীজা। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাও দিয়েছেন। দিয়েছেন আইআইটি-র প্রবেশিকা পরীক্ষাও।
ছাত্রীর কৃতিত্বে উচ্ছ্বসিত পাঠভবনের প্রধান শিক্ষিকা দীপা সেন। সোমবার তিনি বলেন, “মাধ্যমিকের থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছেলেমেয়েদের মনোযোগ অনেকটা বেড়ে যায়। কারণ উচ্চ মাধ্যমিকের ফলের উপরে পরবর্তী জীবনটা নির্ভর করে। তা ছাড়া, কলকাতায় লেখাপড়ার সুযোগ বেশি। এই দু’টোই কলকাতার ভাল ফলের কারণ।” তবে যোগ্যতা না বুঝে অনেক ছেলেমেয়ে জোর করে বিজ্ঞান পড়ার ফলে পাশের হারে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন দীপাদেবী।
হিন্দু স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক নারায়ণ দাসও মনে করেন, কলকাতায় শিক্ষার সুযোগসুবিধা বেশি। সেই সুযোগ পেতে জেলার ভাল ছাত্রছাত্রীদের অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কলকাতায় আসেন। তাই মেধা তালিকায় থাকছে কলকাতার স্কুলের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীর নাম। যদিও নারায়ণবাবু মনে করেন, কলকাতায় বিজ্ঞান পড়ার একটা স্বাভাবিক ঝোঁক আছে ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু যাঁরা সেটা পড়ার সুযোগ না পেয়ে কলা শাখায় ভর্তি হন, তাঁদের মান বেশ খারাপ। এঁদের জন্যই পাশের হার কমে থাকতে পারে বলে ওই শিক্ষকের মত। বিধাননগর গভর্নমেন্ট হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক তারাপদ সাঁতরারও বক্তব্য, “উচ্চ মাধ্যমিকে জেলা থেকে অনেক ভাল ছাত্রছাত্রী কলকাতায় পড়তে আসে। তাই কলকাতায় ভাল ফল হয়েছে।”
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কিন্তু কলকাতার ফলকে আলাদা ভাবে দেখতে বা তার বিশ্লেষণে রাজি নন। তাঁর কথায়, “কলকাতা একটা জেলা। আমার কাছে এর ফল আলাদা করে বিবেচ্য নয়। এই বিশ্লেষণের মধ্যে এক ধরনের উন্নাসিকতা রয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.