ফুলবাড়ি-ঘোষপুকুর বাইপাসে যাতায়াতকারী গাড়িগুলি থেকে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে টোল সংগ্রহের বরাত দেওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। যে রাস্তায় বছরে অন্তত ২০ কোটি টাকা টোল আদায় সম্ভব সেখানে ৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা নামমাত্র দরপত্রে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত এপ্রিল মাসে টেন্ডার ডেকে ৬ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকায় একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। তা নিয়ে এসজেডিএ’র বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন উঠলে বিষয়টি চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের নজরে পড়ে। তিনি টেন্ডার বাতিল করেন। একটি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করালে জানা যায় ওই টোল গেট থেকে বছরে ২০ কোটি টাকা টোল আদায় হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে কেন কম মূল্যে বরাত দেওয়া হত তা নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
গৌতমবাবু বলেন, “আগের সংস্থার মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছিল। তাদের সময়সীমা না বাড়িয়ে নতুন সংস্থাকে দায়িত্ব দিলে কিছুটা বেশি টাকা মিলবে। তাই আপাতত ছ’মাসের জন্য তাদের দেওয়া হয়েছে। তবে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ওই টোল গেট থেকে আরও অনেক বেশি টাকা আদায় হতে পারে। মেয়াদ ফুরনোর অন্তত তিন মাস আগে থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার ছিল।” মন্ত্রী জানান, বরাত নেওয়ার ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত টাকা দিতে কোনও সংস্থা রাজি না হলে এসজেডিএ নিজেই ওই রাস্তায় টোল সংগ্রহের পরিকাঠামো গড়ে তুলবে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তার সময় নিলাম (ওপেন টেন্ডার) ডেকে বরাত দেওয়া হত। তাঁর দাবি ট্রাফিক সার্ভেও করা হয়েছিল। অনেক সময় রাস্তা খারাপ থাকায় গাড়ি কম চলত। অশোকবাবু বলেন, “বর্তমান বোর্ড ওই টোল গেট থেকে ১২ কোটি বা ১৫ কোটি টাকা আদায় করতে পারলে তা ভাল।”
সম্প্রতি এসজেডিএ’র বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ওই পরিস্থিতিতে গত মার্চ মাসের শেষের দিকে রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় গৌতমবাবুকে। এসজেডিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এপ্রিলের শুরুতে উৎসাহী সংস্থাগুলির কাছ থেকে দরপত্র চাওয়া হয় এবং ৬ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকায় এক সংস্থাকে বরাতও দেওয়া হয়।
কিন্তু ওই টোল গেট থেকে আরও টাকা আদায় হতে পারে বলে সদস্যরাই প্রশ্ন তোলেন। টেন্ডার ডেকে হাওড়ার একটি সংস্থাকে দিয়ে গত ১২-১৯ মে একটি সমীক্ষা করানো হয়। তার ভিত্তিতেই টোলগেটের দরপত্র চাওয়া হলে ৩টি সংস্থা অংশ নেয়। তাদের একটি দরপত্র ঠিক না থাকায় পুরো প্রক্রিয়া ফের বাতিল করা হয়েছে। ফের নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। গত ২৮ মে দরপত্র খোলা হয়। তাতেও দেখা যায় ঠিকাদার সংস্থাগুলি বেশি দর দেয়নি। |