পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমাকে ঘিরে শাসক দলের সঙ্গে বাম কর্মী-সমর্থকদের অশান্তি অব্যাহত দুই ২৪ পরগনায়। শনিবারও দুই জেলার কয়েকটি এলাকায় উত্তেজনা ছড়াল। প্রহৃত হলেন বেশ কয়েক জন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া এবং সন্দেশখালিতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। জখম হন অন্তত ১২ জন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাড়োয়ায় ব্লক অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ফিরছিলেন সিপিএম প্রার্থীরা। শালিপুর বাজারে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। কুলটি পঞ্চায়েতের ধুতরোপোতা গ্রামেও সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দু’জায়গাতেই ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক। দু’টি ঘটনায় পুলিশ উভয় পক্ষের ন’জনকে গ্রেফতার করেছে।
সিপিএমের হাড়োয়া উত্তর লোকাল কমিটির সম্পাদক ভুবন মণ্ডল বলেন, “আমাদের প্রার্থীদের উপরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হামলা করল তৃণমূল।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস বলেন, “সিপিএমই কুলটি এবং শালিপুরে আমাদের সমর্থকদের উপর আক্রমণ করে। আমাদের ছ’জন আহত হন। দু’জনকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।”
সন্দেশখালির বেড়মজুর-২ পঞ্চায়েতের পশ্চিম ঝুপখালি গ্রামেও দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় ছ’জন আহত হন। সিপিএমের দাবি, আহতেরা তাঁদের সমর্থক। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ন্যাজাট-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের দীপঙ্কর মাল স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় সিপিএম সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। সিপিএম অভিযোগ মানেনি।
অন্য দিকে, শনিবার মনোনয়ন জমা দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার কালিকাতলা এলাকার মাইতিপাড়ার বাসিন্দা সিপিএমের জেলা পরিষদ প্রার্থী মনোরঞ্জন দিয়াশী, ক্যানিং-২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী অঞ্জলি গাইন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী মইনুদ্দিন শেখ। রাতে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দেয় এবং মারধর করে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। আহত হন মনোরঞ্জনবাবুর ভাইয়ের স্ত্রী বিভাদেবী। ওই রাতেই ক্যানিং-২ পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএম প্রার্থী মোকলেশ মিস্ত্রির বাড়িতেও তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএম এ নিয়ে পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছে। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লার অভিযোগ, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনেই হামলা করছে তৃণমূল।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ক্যানিং-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সওকত মোল্লার দাবি, “জীবনতলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অশান্তি বাধানোর জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে সিপিএম।” পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। |